Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Malaria

তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি, ভয় ধরাচ্ছে ম্যালেরিয়াও

চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ম্যালেরিয়াও। চিকিৎসক মহলের পর্যবেক্ষণ, মশাবাহিত এই দু’টি রোগেরই প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেরই ম্যালেরিয়া ধরা পড়ছে।

এপ্রিলের পরে, মাত্র তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এপ্রিলের পরে, মাত্র তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২১
Share: Save:

ডেঙ্গির পাশাপাশি চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ম্যালেরিয়াও। চিকিৎসক মহলের পর্যবেক্ষণ, মশাবাহিত এই দু’টি রোগেরই প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেরই ম্যালেরিয়া ধরা পড়ছে। পরিস্থিতি যে উদ্বেগের, তা মালুম হচ্ছে রাজ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই। গত এপ্রিলের পরে, মাত্র তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

‘ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজ়িজ় কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’-এর তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, গত এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে ২৯ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৩৪ জনের রক্ত পরীক্ষায় ম্যালেরিয়া ধরা পড়েছিল ১৬০১ জনের। গত ৩০ জুন সেই সংখ্যা ছিল ৪০৬৮। জুলাইয়ের শেষে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১৪৭। অর্থাৎ, এপ্রিলের পরে মাত্র তিন মাসে ৫৫৪৬ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি সংখ্যক রোগী রয়েছেন কলকাতায়। সংখ্যাটা প্রায় তিন হাজার। শহর লাগোয়া হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ অন্যান্য জেলাতেও কমবেশি আক্রান্ত রয়েছে‌ন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বর্ষাকালে এমনিতেই মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা তিন মাসে প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি কিছুটা হলেও উদ্বেগের। কারণ, আরও তিন মাস, অর্থাৎ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ চলবে বলেই অনুমান চিকিৎসকদের। তবে তাঁরা এটাও বলছেন, “করোনার মতো মশাবাহিত রোগের হাত থেকে বাঁচতেও মানুষকে সচেতন হতে হবে। সমস্যা দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু করাতে হবে।”

মেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক জ্যোতির্ময় পাল জানাচ্ছেন, ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর দেখা যায়। কিছু সময় পরে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে গিয়ে, ফের পরের দিন জ্বর আসে। কিন্তু এখন রোগের লক্ষণের বদল ঘটেছে বলেও জানাচ্ছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর কথায়, “এখন কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর থেকেই যাচ্ছে। এমনকি, প্লাজ়মোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি প্লাজ়মোডিয়াম ভাইভ্যাক্স ম্যালেরিয়াও অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকির হয়ে যাচ্ছে। তাই জ্বর এলে দেরি না করে রক্ত পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।”

বয়স্কদের ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া প্রাণের ঝুঁকি তৈরি করছে বলেই মত ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডার। তিনি বলেন, “ক্লোরোকুইন দিয়েও তীব্র জ্বর কমানো যাচ্ছে না। অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। রোগী ভুল বকছেন। এক্স রে-তে ফুসফুসে ‘এআরডিএস’ মিলছে।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, ফুসফুসের এই সমস্যা থেকে শরীরে সাইটোকাইন ঝড় তৈরি হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কিডনিও খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malaria Infection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE