ভাঙা বাড়ির সামনে জমায়েত বাসিন্দাদের। শনিবার। — বিশ্বনাথ বণিক
পুলিশ ও পুরসভা ভেঙে পড়া বাড়ি থেকে মাল বের করতে সময় দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন পোস্তার বড়তলার গত বৃহস্পতিবার ভেঙে পড়া বাড়িটির বাসিন্দারা। শনিবার এই নিয়ে ওই বাড়ির বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভও দেখান।
ভেঙে পড়া বিপজ্জনক ওই বাড়িটির বাসিন্দা এবং সেখানে থাকা গুদামের মালিকদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের মালপত্র বের করতে একদম সময় দিচ্ছে না। কিছুক্ষণ সময় দিয়েই তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করছে। বাড়ির কিছু অংশ ভাল থাকা সত্ত্বেও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে পুরো বাড়িটিই। বাড়ির ভিতরে তাঁদের একাধিক গুদাম রয়েছে। সেখানে রয়েছে কাপড়, বাসন ও খাদ্যদ্রব্যের বাক্সপ্যাঁটরা-সহ একাধিক ব্যবসার জিনিসপত্র। জিনিসপত্র বার করতে না দিয়েই ওই অংশগুলিকে ভেঙে দেওয়ায় তাঁদের প্রচুর ক্ষতিও হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। ওই বাড়ির বাসিন্দা রাহুল জোশী বলেন, ‘‘চোখের সামনে মালপত্র-সহ সব গুঁড়িয়ে দিচ্ছে পুরসভা। পুলিশও সহযোগিতা করছে না।’’
পুলিশ ও পুরকর্মীদের অবশ্য দাবি, ওই বাড়ির বাসিন্দাদের অভিযোগ ঠিক নয়। মালপত্র বার করতে যথেষ্ট সময় দেওয়া হচ্ছে। বা়ড়ির বেশ কিছু অংশ দুর্বল, তাই বেশিসময় দেওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি ভাঙার পরও মালপত্র সরাতে দেওয়া হচ্ছে।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, যেখানে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত হয়েছিল, কালীকৃষ্ণ টেগোর স্ট্রিটের কাছে সেই পারিখ ভবনেও তাঁদের ঠাঁই হয়নি। পুলিশ জানিয়েছিল, কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেই বাসিন্দাদের সরানো হয়েছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর তাঁদের ওই বাড়িতে যেতে বললেও সেখানে থাকা বা খাওয়ার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। উল্টে ওই ভবনের মালিক তাঁদের বুকিং না থাকায় বেরিয়ে যেতে বলেন বলে অভিযোগ। কাউন্সিলর বিজয় ওঝার দাবি, ‘‘ওই ভবনটিতে থাকতে কোনও পয়সা লাগে না। ওঁরা নিজেরাই নিজেদের আত্মীয়দের কাছে চলে গিয়েছিলেন।’’ তাঁর দাবি, কেউ ফুটপাথে থাকলে তিনি এখনও ওই বাড়িতে যেতে পারেন। কাউন্সিলর নিজেই সেই ব্যবস্থা করে দেবেন।
কলকাতা পুরসভা থেকে বহু দিন আগেই ওই বাড়িটিকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েছিল বলে জানান কাউন্সিলর। কিন্তু তার পরে কোনও ভাড়াটেই ওই বাড়ি ছেড়ে যাননি। গত বুধবার থেকে ওই পাঁচতলা বাড়ি থেকে ইট ও চাঙড় খসে পড়তে শুরু করে। বাড়ির বেহাল অবস্থা দেখে স্থানীয় বিধায়ক স্মিতা বক্সী পুলিশকে বিষয়টি জানান। এর পরে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বাড়ির একাংশ খালি করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও থেকে যায় আরও কয়েকটি পরিবার। ওই দিন বিকেলে একটি দেওয়াল ভেঙে পড়তে অন্য পরিবারগুলিও বাড়ি ছেড়ে দেন। কলকাতা পুরসভাকে বিষয়টি জানায় পুলিশও। বাড়িটিকে ভাঙা হবে ঠিক হওয়ার পরেই নিজে থেকেই সকলের চোখের সামনে সেটি ভেঙে পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy