Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2022

পুজো কমিটি থেকে দর্শক, কোভিড-বিধি নিয়ে পরোয়া নেই কারও

শহরের কয়েকটি মাত্র মণ্ডপে জীবাণুনাশক ছড়াতে ও দর্শনার্থীদের মধ্যে মাস্ক বিলি করতে দেখা গেলেও অধিকাংশ পুজোতেই সেই তৎপরতা ছিল না। একই পথে হাঁটলেন দর্শনার্থীরাও।

দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারার মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়। কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। বিশ্বনাথ বণিক

দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারার মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়। কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। বিশ্বনাথ বণিক

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২৮
Share: Save:

প্রতিশ্রুতি ছিল। প্রত্যাশাও। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, সবই ধুলোয় গড়াচ্ছে! শহরের কয়েকটি মাত্র মণ্ডপে জীবাণুনাশক ছড়াতে ও দর্শনার্থীদের মধ্যে মাস্ক বিলি করতে দেখা গেলেও অধিকাংশ পুজোতেই সেই তৎপরতা ছিল না। একই পথে হাঁটলেন দর্শনার্থীরাও। কোভিড-বিধি মানার কথা বলতেই এক পুজোকর্তা বললেন, ‘‘দু’বছরে অনেক হয়েছে! কোভিডের কথা ভেবে আর লাভ নেই। ও সব দেশ ছেড়েছে। এখন শুধু আনন্দ করো।’’

তিথি মেনে শনিবার থেকে পুজো শুরু হলেও বাস্তবে মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শক সমাগম শুরু হয়েছিল মহালয়ার পর থেকেই। শহরের একাধিক পুজোর মণ্ডপে মহালয়ার দিন থেকেই ঠাকুর দেখতে লাইন দেখা গিয়েছিল। যা জনজোয়ারের রূপ নেয় চতুর্থীর দিন থেকে। তার পরে দিন যত এগিয়েছে, ততই বেড়েছে ভিড়ের চাপ। সেই ভিড় সামলাতে কার্যত নাজেহাল হতে হয়েছে উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীদের। যদিও ভিড় যে হবে, তার আঁচ আগে থেকেই করেছিলেন উদ্যোক্তা ও পুলিশকর্তারা। সরকারি তরফে গত বছরের মতো মণ্ডপ সংক্রান্ত কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও কোভিড-সতর্কতা মেনে চলা হবে বলেই জানিয়েছিল একাধিক পুজো কমিটি। এমনকি, উদ্যোক্তাদের তরফেই মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সপ্তমীর সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য সেই ছবির দেখা মিলল না। উদ্যোক্তাদের ভিড় সামলাতে দেখা গেলেও কোভিড-সতর্কতার ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা হাওয়ায় উড়ে গেল। ভিড়ে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার পাশাপাশি নিয়ম না-মানার এই খেলাতেও একে অপরকে টেক্কা দিল শহরের একাধিক পুজো কমিটি। যা দেখে মাস্ক পরে সপ্তমীর বিকেলে দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মণ্ডপের সামনে দাঁড়ানো বেলেঘাটার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দত্ত বললেন, ‘‘মানছি, করোনার নখ-দাঁত ভোঁতা হয়েছে। তা বলে কিছুই মানা হবে না, এটা তো প্রত্যাশিত নয়। পুজো কমিটিগুলি যদি একটু মাস্ক বিলি করত, তা হলেও কিছুটা হয়তো রক্ষা হত!’’ যদিও দেশপ্রিয় পার্কের অন্যতম পুজোকর্তা সুদীপ্ত কুমার বললেন, ‘‘আমরা মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার পর্যাপ্ত পরিমাণ রেখেছি। মণ্ডপে জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষের আর এ সব নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। নাগরিকেরা দু’বছর বেরোতে পারেননি। এ বছর তাই সকলেই আনন্দ করতে চাইছেন।’’ কলেজ স্কোয়ারের পুজোর এক উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘যে পরিমাণ ভিড় হচ্ছে, হাতে ধরে ধরে সকলকে মাস্ক পরানো সম্ভব নয়। সবই রাখা আছে। যাঁদের ইচ্ছে হচ্ছে, তাঁরা নিয়ে পরে নিচ্ছেন।’’

ভিড় সামলাতে পুলিশকে তৎপর হতে দেখা গেলেও মাস্ক পরানোর ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা দেখা গেল না। এ নিয়ে পুলিশের তরফে সচেতনতার প্রচারও দেখা যায়নি। রাসবিহারী মোড়ে ভিড় সামলাতে ব্যস্ত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘ভিড় সামলাব, না কে মাস্ক পরে আছে, কে নেই, তা দেখব। দু’বছর ধরে অনেক বলেছি। এ বার পরতে হলে পরবে, না হলে পরবে না। আর কত বলব! এখন মাস্ক দেখতে গেলে আর রাস্তায় গাড়ি সামলানো যাবে না।’’ যদিও লালবাজারের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘পুলিশের তরফে প্রচার চলছে। সাধারণ মানুষকে সচেতনও করা হচ্ছে। গোটা পুজোতেই এটা চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 Covid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE