স্তূপাকার: বিমানবন্দর চত্বরে পড়ে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র
জঞ্জাল আর আবর্জনার স্তুপ দেখে আকৃষ্ট হচ্ছে পাখি। সেখান থেকে জুটে যাচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার রসদ। সেই আকর্ষণে কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে উড়ে বেড়াচ্ছে কাক, চিল। শহর থেকে ওঠানামার পথে মাঝে মধ্যে সেই পাখির ধাক্কায় ক্ষতি হচ্ছে বিমানের। সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বড়সড় দুর্ঘটনারও।
বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর নিয়ম রয়েছে, বিমানবন্দরের আশেপাশে কোনও ধরনের কসাইখানা রাখা যাবে না। আশপাশের বাজারে খোলা মাংস বিক্রি করা যাবে না। খোলা জায়গায় আবর্জনা, জঞ্জাল ফেলাও নিষিদ্ধ। এ নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের আশপাশে থাকা পুরসভাগুলির উপরে বহুবার অভিযোগের আঙুলও উঠেছে। বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ম মানতে বাধ্য করতে পারছে না স্থানীয় পুরসভাগুলি। এমনকি বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকা থেকে খোলা বাজারে মাংস বিক্রি বা কসাইখানাও বন্ধ করতে তারা ব্যর্থ। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই বৈঠক হয়। বিমানবন্দরে পরিবেশ সংক্রান্ত একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির মাথায় রয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব।
অথচ রবিবার, সেই জঞ্জালের দেখা মিলেছে বিমানবন্দরের চৌহদ্দির ভিতরেই! পুরনো আন্তর্জাতিক বিল্ডিং-এর সামনে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনা ও জঞ্জাল।
এখন কলকাতা বিমানবন্দরের যেখান দিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করেন, নতুন সেই টার্মিনালের ভিতর, তার বাইরে বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। বিমানবন্দরের ভিতরের দিক, যাকে ‘অ্যাপ্রন’ বা ‘এয়ার সাইড’ বলা হয়, তাও বেশ ঝকঝকে, তকতকে।
পুরনো এই আন্তর্জাতিক বিল্ডিংটি এখন পণ্য পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা হয়। সেখান দিয়ে আর সাধারণ যাত্রীরা যাতায়াত করেন না। তার উল্টোদিকে গাড়ি রাখার জায়গা। সেই জায়গার অনেকটা অংশেই পড়ে রয়েছে খাবার, জলের বোতল, আবর্জনা। অভিযোগ, পণ্য যাতায়াতের সময়ে যা কিছু বর্জ্য, সে খাবারের অংশই হোক বা ভাঙা প্যাকিং বাক্সের অংশ— সব টেনে এনে ফেলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিল্ডিং-এর বাইরে গাড়ি রাখার জায়গায়। সেই পণ্য বিভাগে কাজ করেন কয়েকশো কর্মী। পাশে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এও দিনে প্রায় ৫০০ কর্মী থাকেন। তাঁদের ব্যবহারের যাবতীয় বর্জ্যও এসে পড়ছে খোলা আকাশের নীচে।
বিমানবন্দরেরই এক অফিসার জানিয়েছেন, রবিবার এটিসি-র অফিসারেরা আচমকা এলাকা পরিষ্কার করার কাজে নেমে এই জঞ্জাল দেখতে পান। দেখা যায়, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফের একটি পরিত্যক্ত গুমটিতে নিয়মিত প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে জঞ্জাল এনে ফেলা হয়। সেই জঞ্জাল বা যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনা স্থানীয় পুরসভার পক্ষ থেকে নিয়মিত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই।
কলকাতায় সদ্য যোগ দেওয়া বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য রবিবার বলেন, ‘‘এ ভাবে জঞ্জাল যাতে পড়ে না থাকে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy