Advertisement
E-Paper

Gariahat Murder: বাবাকে ‘খুনের চেষ্টায়’ গত বছর জেলে গিয়েছিল গড়িয়াহাট কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ভিকি

নিহত সুবীর চাকীর বাড়ির অদূরেই কাঁকুলিয়া রেলগেটের কাছে মিঠুর শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই থাকেন সুভাষের ভাই খোকন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২১ ০৪:৫৩
এই বাড়িই ভাড়া নিয়েছিল ভিকির মা, ধৃত মিঠু হালদার।

এই বাড়িই ভাড়া নিয়েছিল ভিকির মা, ধৃত মিঠু হালদার। নিজস্ব চিত্র।

গড়িয়াহাটে জোড়া খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভিকি এক বছর আগে ধরা পড়েছিল পুলিশের হাতে। সে বার বাবাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ভিকির মা মিঠু হালদার ও ভাই বিলাসও গ্রেফতার হয়েছিল সে সময়ে।

গত ১২ ডিসেম্বরের সেই ঘটনায় হাত-পা বাঁধা, মুখে সেলোটেপ জড়ানো অবস্থায় খাটের তলা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করেছিলেন মিঠুর স্বামী সুভাষকে। তদন্তকারীদের দাবি, প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে খুন করে তাঁর টাকা হাতানোর ছক কষেছিল মিঠু। সেই কাজে তাকে সাহায্য করেছিল দুই ছেলে। তিন জন জেল খেটে জামিনে ছাড়া পায়। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।

নিহত সুবীর চাকীর বাড়ির অদূরেই কাঁকুলিয়া রেলগেটের কাছে মিঠুর শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই থাকেন সুভাষের ভাই খোকন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরে বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসে ভিকি। কেতাদুরস্ত চেহারার ভিকিকে তখন চেনাই মুশকিল। গাড়ি নিয়ে এসে বাবাকে ভিকি জানায়, সে ইঞ্জিনিয়ার। ভাল চাকরি করে। এখানে ফ্ল্যাট কিনতে চায়। বিয়েও করেছে। খোকনের দাবি, বৌমাকে দেখানোর নাম করেই বাবাকে ডায়মন্ড হারবারের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায় ভিকি। দিন দুয়েক পরে সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয়েছিল সুভাষকে। খোকন বলেন, ‘‘যে ছেলে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল না, তার মুখে সে বার ইংরেজির খই ফুটছিল। খুব অবাক হয়েছিলাম।’’

পুলিশ জেনেছে, দুর্গাপুজোর আগে ভিকি একাধিক বার ফোন করেছিল সুবীরবাবুকে। প্রতিবারই ইংরেজিতে কথা বলেছিল। তবে ভিকির হয়ে সেই কথোপকথন অন্য কেউ চালিয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা।

মঙ্গলবার রাতে ডায়মন্ড হারবারে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাইয়াপাড়ায় মিঠুর ভাড়া বাড়িতে যায় পুলিশ। মিঠু তখন বাড়িতে ছিল না। রাত ২টো থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তল্লাশি চালায় পুলিশ। পরে গেটে তালা দিয়ে চলে যায়। বাড়ির মালিককে নজর রাখার কথা বলেন তদন্তকারীরা।

বুধবার সকালে পুলিশ ফের যায় সেই বাড়িতে। রাস্তা থেকেই মিঠুকে আটক করা হয়। তার পরে গ্রেফতার। তার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে নগদ টাকা, নথিপত্র, একটি ধারালো অস্ত্র ও একটি সিম কার্ড মেলে।

পুলিশ জেনেছে, স্বামীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে জেলে যাওয়ার পরে সেখান থেকে বেরিয়ে মিঠু বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের দু’নম্বর ওয়ার্ডের মঞ্জিতা মোড়ের কাছে। তবে সেখানে বেশি দিন ছিল না। মাস দুয়েক আগে নাইয়াপাড়ার পঞ্চাননতলায় পম্পা গায়েনের বাড়িতে ওঠে সে।

পম্পা জানান, নতুন ভাড়াটে এসেছে মাস দুই আগে। তবে বিশেষ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়নি। ছোট ছেলেকে কয়েক বার দেখা গেলেও বড় জন এ বাড়িতে আসেনি বলেই জানালেন পম্পা। মিঠু তাঁদের জানিয়েছিল, ডায়মন্ড হারবারের কপাটহাট ও পারুলিয়া মোড়ের কাছে দুই বাড়িতে আয়ার কাজ করে সে। বিকেল ৫টায় বেরিয়ে যেত। ফিরত পরদিন সকাল ৯টায়।

পম্পা জানান, দশমীর পরে রক্তমাখা জামাকাপড় ধুতে দেখে জানতে চাওয়ায় মিঠু বলেছিল, ছেলে মত্ত অবস্থায় মারপিট করে মাথা ফাটিয়েছে। পম্পা বলেন, ‘‘সে দিন মহিলা কেমন যেন ভয়ে ভয়ে কথা বলছিল। জানিয়েছিল, কেউ যদি খুঁজতে আসে, তা হলে যেন বলি, ও এখানে থাকে না।’’ ছোট ছেলে কলকাতায় দোকানে কাজ করে বলে জানিয়েছিল মিঠু। তবে বড় ছেলের সম্পর্কে কিছু বলত না সে। পম্পার প্রতিবেশীরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বেশি দিন এক বাড়িতে থাকত না মিঠু। নতুন বাড়ি ভাড়া নিত। পাড়ায় তেমন মেলামেশা ছিল না তার।

মিঠুর বাবার সঙ্গেও সুবীরবাবুর পূর্ব-পরিচিতি থাকতে পারে বলে জেনেছে পুলিশ। সুবীরবাবুর দিদি ডায়মন্ড হারবারে মাথুর গার্লস হাইস্কুলে পড়াতেন। থাকতেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নুনগোলায়, ভাড়া বাড়িতে। সেখানে আসতেন সুবীরবাবু। কাছেই মিঠুর বাবা মহাদেব হালদারের সিগারেটের দোকান ছিল। সুবীরবাবু সেখানে কেনাকাটা করতেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

Murder Gariahat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy