অবরুদ্ধ: সমাবেশের জেরে থমকে যানবাহন। মঙ্গলবার, রেড রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেন থেকে বেলা ১১টায় ধর্মতলার বাসে চেপেছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার। যানজটের কারণে হাওড়া থেকে হেঁটে ধর্মতলায় পৌঁছলেন দুপুর দেড়টায়। শ্রীরামপুরের শ্রীধর মাইতি বড়বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন। দুপুরে বহুক্ষণ ধর্মতলায় মালপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পরে বেশি ভাড়া দিয়ে ভ্যানে উঠে রওনা দিলেন। মঙ্গলবার ধর্মতলায় বামেদের সমাবেশের জেরে এ ভাবেই নাকাল হলেন অনেকে।
মন্দা গেল নিউ মার্কেটের ব্যবসাও। সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানালেন, সকালের দিকে কিছু ক্রেতা এলেও দুপুরে ফাঁকা হয়ে যায় বাজার। সন্ধ্যাতেও তেমন ভিড় জমেনি। পুজোর মুখে এই ভাবে ব্যবসায় বাধা পড়ায় ক্ষুব্ধ তাঁদের অধিকাংশই।
এ দিন দুপুরে ধর্মতলায় ওই সমাবেশের ডাক দিয়েছিল ডিওয়াইএফআই। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল আসে ধর্মতলায়। দুপুর দেড়টা নাগাদ হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দু’টি বিশাল মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছলে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। হাওড়া থেকে আসা মিছিলের জেরে মধ্য হাওড়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশে যোগ দিতে সোমবার রাতে প্রায় এক হাজার মানুষ হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। তাঁরা স্টেশনেই থাকতে গেলে রেলের তরফে বাইরে বার করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য কয়েক জনকে স্টেশনে থাকতে দেওয়া হয়। বাকিদের জন্য স্টেশনের বাইরে ক্যাম্পে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাওড়া রেল মিউজিয়ামের সামনে থেকে বিশাল মিছিল ধর্মতলার দিকে রওনা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, সেই মিছিলের জেরে হাওড়া সেতু, ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, এম জি রোডে যানজট হয়। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সাড়ে ১২টা নাগাদ বিশাল মিছিল ধর্মতলার দিকে রওনা দিেয় ২টোয় সেখানে পৌঁছয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ছোট-বড় মিছিল ধর্মতলায় আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিল ও সমাবেশের জন্য দুপুর ১টা নাগাদ ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করা হয় টিপু সুলতান মসজিদের সামনের মোড়টিও। ফলে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। পুজোর কেনাকাটা করতে এসে অনেকেই বিপাকে পড়েন। বরাহনগরের বাসিন্দা সুজিত মাহাতো বলেন, ‘‘সমাবেশ না থাকলে এক বাসেই সরাসরি বাড়ির কাছে নামতাম। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে মেট্রো করে শ্যামবাজারে গিয়ে আবার বাসে উঠতে হবে।’’ বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে যান চলাচল আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পুলিশি সূত্রের খবর, দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত তিন ঘণ্টা যানবাহন কার্যত থমকে ছিল শহরের বিস্তীর্ণ অংশে। ধর্মতলামুখী গাড়ি অন্য পথে গেলেও যানজটের কবলে পড়ে। মিছিল, সমাবেশের জেরে শহরের উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের যোগাযোগও কার্যত ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy