Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সোনারপুরে বধূ ‘খুন’, গ্রেফতার স্বামী ও শ্বশুর

বাড়িতে কেউ না থাকলেই সুপ্রিয়ার শ্বশুর তপন মণ্ডল তাঁকে কুপ্রস্তাব দিতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বামীকে বিষয়টি বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।

সুপ্রিয়া মণ্ডল

সুপ্রিয়া মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫২
Share: Save:

শ্বশুরের ‘কুপ্রস্তাবে’ রাজি না হওয়ায় এক গৃহবধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানা এলাকার গোবিন্দপুরে। মৃতার নাম সুপ্রিয়া মণ্ডল (২১)। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিয়ার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় বধূ নির্যাতন ও খুনের মামলা দায়ের হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনারপুর থানার গঙ্গাজোয়ারা এলাকার বাসিন্দা সুপ্রিয়ার সঙ্গে বছর চারেক আগে লাঙলবেড়িয়ার বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রি সুজন মণ্ডলের বিয়ে হয়। সুজন-সুপ্রিয়ার একটি এক বছরের মেয়েও রয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে সুপ্রিয়ার উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করতেন সুজনের পরিজনেরা।
বাড়িতে কেউ না থাকলেই সুপ্রিয়ার শ্বশুর তপন মণ্ডল তাঁকে কুপ্রস্তাব দিতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বামীকে বিষয়টি বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিজের মা ও মাসিকেও জানিয়েছিলেন সুপ্রিয়া। মাস দুয়েক আগে আলোচনার মাধ্যমে সাময়িক সুরাহা হলেও কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়িতে একাই ছিলেন সুপ্রিয়া। অভিযোগ, সে সময়ে মত্ত অবস্থায় শ্বশুর সুপ্রিয়ার ঘরে ঢুকতে যান। ওই নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেও শেষ পর্যন্ত সুপ্রিয়া রক্ষা পাননি বলেই অভিযোগ তাঁর পরিজনেদের। অভিযোগ, সুপ্রিয়াকে দরজা খুলতে বাধ্য করেন শ্বশুর। তার পরে বৌমাকে নির্যাতনের চেষ্টাও করা হয়। শিশুকন্যার সামনেই চলে দু’জনের ধস্তাধস্তি। সুপ্রিয়া চিৎকার করতে শুরু করলে তাঁর শাশুড়ি ও স্বামীকেও ডেকে নিয়ে আসেন শ্বশুর। তিন জনে মিলে তাঁকে মারধর করেন
বলে অভিযোগ।

সুপ্রিয়ার পরিবার সূত্রে খবর, এর পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবর দেওয়া হয় তাঁর বাপের বাড়িতে। সুপ্রিয়ার পরিজনেদের অভিযোগ, তাঁরা এসে দেখেন, সুপ্রিয়ার নিথর দেহ কাপড় ঢাকা দিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তপন ও সুজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা
করেন। সঙ্গে তপন দাবি করেন, সুপ্রিয়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এর পরেই তপন ও সুজনকে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সুপ্রিয়াকে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সুপ্রিয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘আমাদের মেয়ের উপরে নানা ভাবে অত্যাচার করা হত। মূলত শ্বশুরই অত্যাচার করতেন বলে সুপ্রিয়া একাধিক বার আমাদের জানিয়েছিল। এক বার সুজনের সামনেই সুপ্রিয়াকে শাবল দিয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন ওর শ্বশুর।’’ বৃহস্পতিবার সুজন ও তপনকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Housewife Murder Sonarpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE