Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

Chinese thread: শহরতলির পথেই বিকোচ্ছে চিনা মাঞ্জা

ঘুড়ি বাজারের বেশির ভাগ দোকানেই সব কিছুকে ছাপিয়ে চাহিদা বেশি মমতা ঘুড়ির। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ঘুড়ি সাত টাকায় মিলছে।

বেআইনি: খড়দহে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জা (চিহ্নিত)। বৃহস্পতিবার।

বেআইনি: খড়দহে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জা (চিহ্নিত)। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৫
Share: Save:

গত কয়েক বছর ধরে মা উড়ালপুল-সহ বিভিন্ন জায়গায় চিনা মাঞ্জা ও নাইলন বা প্লাস্টিক মিশ্রিত ‘ধারালো’ সুতোয় পরপর দুর্ঘটনা ঘুম কেড়েছে প্রশাসনের। ফলে ওই সবের বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল খড়দহের পি কে বিশ্বাস রোডের ঘুড়ি বাজারেও। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ ঘুড়ি ও লাটাই কারখানা এবং দোকানে গিয়ে চিনা মাঞ্জা বা অন্য ধারালো সুতোর উৎপাদন আর বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। অথচ, বৃহস্পতিবার দেখা গেল, ঘুড়ির দোকানে দেদার বিকোচ্ছে ওই সব নিষিদ্ধ সুতো ভরা লাটাই। জানেও না পুলিশ-প্রশাসন!

পি কে বিশ্বাস রোডের পাইকারি ঘুড়ির বাজারে বাড়ি বাড়ি ঘুড়ি আর লাটাইয়ের কারখানা। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল ছাড়াও কলকাতার বড়বাজার বা ভিন্ জেলার বাজারে এখান থেকে ঘুড়ি, লাটাই যায় বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ঘুড়ি ব্যবসায়ী মানিক সাউ বলেন, ‘‘পুলিশ এসে বারণ করে যাওয়ায় আমাদের মতো বড় দোকানে সাধারণ সুতো রাখা হচ্ছে। কারণ, আমাদের সারা বছরের ব্যবসা। সুতো‌র গেরোয় ব্যবসা বন্ধ হলে বিপদ হবে। তবে অনেকে বিক্রি করছেন। পরিচিতদের নিষেধ করেছি।’’

রিল-পিছু চিনা মাঞ্জার দাম ৩৫০ টাকা। ৬০০০ মিটারের প্রতিটি রিল থেকে বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মাধ্যমে সুতোকে পছন্দের লাটাইয়ে ভরে দিতে লাগছে কয়েক মিনিট। ভিড় করে কিনছেন কমবয়সি ক্রেতারা। করোনা-বিধির বালাই নেই। মাস্ক নেই মুখে। বিক্রেতা শেখ পাপ্পু বলেন, ‘‘প্রচুর চাহিদা চিনা মাঞ্জার। দেড়শোর বেশি রিল বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’ চিনা মাঞ্জা সুতোর খোঁজে আসা পড়ুয়াদের দেখে ব্যবসায়ী পাঁচু সাউ বলে ওঠেন, ‘‘কাগজে কি পড় না কত জনের নাক-গলা কাটছে ওই সুতোয়! তার পরেও চাও কী ভাবে?’’ কিছু পরে ওই ক্রেতাদের চিনা মাঞ্জা সুতোর হদিস দিলেন রাস্তার ধারের এক ঘুড়ি বিক্রেতাই।

তবে ঘুড়ি বাজারের বেশির ভাগ দোকানেই সব কিছুকে ছাপিয়ে চাহিদা বেশি মমতা ঘুড়ির। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ঘুড়ি সাত টাকায় মিলছে। এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘ভবানীপুর উপনির্বাচনের আগে ওড়াতে তৃণমূল ২০০টি মমতা ঘুড়ি নিয়ে গিয়েছে সকালেই।’’ করোনার কারণে গত বছর কেটেছে মন্দায়। কাপড়ের ঘুড়ি ব্যবসায়ী পিন্টু সাউ বলেন, ‘‘এক সময়ে কাপড়ের ঘুড়ির চল ছিল। করোনার আগে ‘জাম্বো ঘুড়ি’ বিক্রি হয়েছে বেশি। তবে শিল্পাঞ্চলের বিশ্বকর্মা পুজোয় অনেক বেশি চাহিদা থাকে। ঘুড়ি ওড়ানো আনন্দের। ক্ষতি হতে পারে, এমন সুতোর ব্যবহার বন্ধ করতে অনুরোধ করছি।’’

এ হেন পরিস্থিতির কথা শুনে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর) ধ্রুবজ্যোতি দে বলছেন, ‘‘অবিলম্বে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE