প্রীতম পুরকাইত। —নিজস্ব চিত্র
কসবার এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে রহস্য দানা বেঁধেছে। ওই ঘটনায় তাঁর সহকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে যুবকের পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম প্রীতম পুরকাইত (২৪)। তাঁর বাড়ি কসবা থানা এলাকার বোসপুকুর প্রান্তিক পল্লিতে। বুধবার রাত পর্যন্ত মৃত যুবকের ভাই সুমন পুরকাইতের দায়ের করা খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। তাতে সংস্থার মালিক-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ওই খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, বুধবারই ওই যুবকের দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রীতম কসবারই একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করতেন। গত রবিবার সেখানকার কর্মী ও মালিক-সহ এগারো জন উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে পিকনিকে যান দু’টি গাড়ি করে। রাতে ওই সহকর্মীরা প্রীতমের বাড়িতে ফোন করে জানান, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বাসন্তী হাইওয়েতে একটি ছোট মালবাহী গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন প্রীতম। তাঁকে ই এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশও ওই হাসপাতাল থেকে খবর পায়। ওই রাতেই অচৈতন্য প্রীতমকে সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই মারা যান প্রীতম। পুলিশ ঘটনার দিনই বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় জখম হওয়ার একটি মামলা রুজু করেছিল। মঙ্গলবার প্রীতমের মৃত্যু হলে অজ্ঞাতপরিচয় চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলায় তা পরিবর্তিত হয়। তার তদন্ত করছে লালবাজারের এফএসটিপি। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, বুধবার রাতে মৃতের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল প্রীতমের সহকর্মীদের। তাঁরা জানিয়েছিলেন, দু’টি গাড়ি করে ওই দিন তাঁরা কলকাতায় ফিরছিলেন। বাসন্তী হাইওয়েতে ভোজের হাটের কাছে একটি গাড়ি মৃদু ধাক্কা মারে পিকনিকে যাওয়া দলটির একটি গাড়িতে। ওই গাড়িতেই ছিলেন প্রীতম। পরে তাঁদের গাড়িটি ওই গাড়িটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। সেই গাড়ির আরোহীদের সঙ্গে প্রীতমদের বচসা বাধে। মালিক অন্য গাড়িতে ছিলেন। সেটি কিছুটা আগে চলে গিয়েছিল। খবর পেয়ে সেটি ফিরে আসে ঘটনাস্থলে।
পুলিশের কাছে সহকর্মীদের দাবি, ওই সময়ে পাশ দিয়ে একটি ছোট গাড়ি যাচ্ছিল, সেটিই আচমকা ধাক্কা দেয় প্রীতমকে। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে সহকর্মীরাই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রীতমের আত্মীয় সোমনাথ সাহা বুধবার বলেন, ‘‘সহকর্মীদের কথায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। প্রথমে ওঁরা দাবি করেছিলেন, গাড়ি ধাক্কা মেরেছে প্রীতমকে। কিন্তু চেপে ধরতেই জানান, হাতাহাতি হয়েছে। সেখানে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পয়েছেন প্রীতম। আমরা চাই পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুক।’’ প্রীতম যে সংস্থায় কাজ করতেন, সেই ওষুধের দোকানের মালিক অভিযুক্ত দেব শেখর সরকারের যদিও দাবি, ওই দিন গাড়ির ধাক্কাতেই প্রীতম জখম হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy