Advertisement
E-Paper

খামখেয়ালি আবহাওয়া, আকালের বাজারে ডেকেছে আগুন

কৃষি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শীতের শেষ থেকে রাজ্য জুড়ে ঝড়-বৃষ্টি এবং বার তিনেক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে আনাজ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০০:২৩
বৃহস্পতিবার হাওড়ার বাজারে। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার হাওড়ার বাজারে। নিজস্ব চিত্র

এপ্রিল এল বলে। কিন্তু বাজারে গ্রীষ্মের আনাজের জোগান তলানিতে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাও বা কিছু রয়েছে, তার দাম বেশ চড়া। মানও খুব একটা ভাল নয়। ফলে বাজারে গিয়ে খুব বেশি হলে এক ফালি এঁচোড় কিংবা চালানি সজনে ডাঁটা কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে বেশির ভাগ ক্রেতাকে। গত বছরও এই সময়ে কলকাতার বাজারগুলিতে গ্রীষ্মের পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়স ভরে গিয়েছিল। কিন্তু আনাজ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ বছর রাজ্য জুড়ে বার কয়েক হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে আনাজ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হওয়াতেই এই আকাল চলছে পাইকারি বাজার থেকে জেলার হাটগুলিতে। সে কারণেই আনাজ মিলছে না কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ শহরের বাজারগুলিতেও।

কৃষি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শীতের শেষ থেকে রাজ্য জুড়ে ঝড়-বৃষ্টি এবং বার তিনেক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে আনাজ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমিতে জল জমে আলু চাষিদের খুব ক্ষতি হয়েছে। যে সব চাষিরা আগে থাকতেই গ্রীষ্মের ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙে চাষ করেছিলেন, তার অর্ধেক নষ্ট হয়ে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা, সকলে। আর তার জেরেই আনাজের জোগান কমে গিয়েছে বাজারগুলিতে। ফলে এই সময়ের অধিকাংশ আনাজই ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা অন্য বছরের তুলনায় যথেষ্টই বেশি বলে মত অধিকাংশের। মার্চ মাসের গোড়ায় কলকাতার মানুষকে কেজি প্রতি ১০০ টাকা বেশি দাম দিয়ে পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে কিনতে হয়েছে।

কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগামী কয়েক দিন একটু চড়া রোদ ও গরম বাড়লে তবেই গ্রীষ্মের আনাজের ফলন বাড়বে। তখন চাষিরাও শহরের বাজারগুলির চাহিদা মতো জোগান দিতে পারবে।

শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ভোর ৪টের সময়ে উঠে হাটে যেতে হয় বারাসতের প্রবীর ঘোষকে। হাট থেকে আনাজ কিনে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রি করেন প্রবীর। তাঁর কথায়, ঝড়-বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি হয়েছে। ফলে আনাজ বেশি হচ্ছে না। আয়ও কমে গিয়েছে। ভাঙড়ের চাষি আব্দুর খানেরও একই বক্তব্য। গ্রীষ্মের আনাজের যা কিছু চাষ করেছিলেন বৃষ্টির জলে, তার অর্ধেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন করে আবার পটল, ঢেঁড়স লাগাতে হয়েছে বলেই শহরের বাজারগুলিতে তাঁদের মতো চাষিরা আনাজ বিশেষ পাঠাতে পারছেন না।

কলকাতায় আনাজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কোলে মার্কেটের সুপারভাইজার নিমাই মারিক জানাচ্ছেন, বনগাঁ, বারাসত, বেড়াচাপা, হাসনাবাদ, দেগঙ্গা, লক্ষ্মীকান্তপুর, ক্যানিং ইত্যাদি জায়গা থেকে পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, করলা, লঙ্কা আসে। ফলন কম হওয়ায় সব জায়গা থেকেই জোগান এখন অনেক কমে গিয়েছে। তাই দামও বেশি। দক্ষিণের লেক মার্কেটের আনাজ বিক্রেতাদের আবার বক্তব্য, আকালের বাজারে শহরের মানুষও এখন কম আনাজ কিনছেন। চাহিদা বেশি থাকলে কোনও ভাবেই জোগান দেওয়া যেত না।

Kolkata Market Vegetable
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy