Advertisement
E-Paper

ছেলে কার কাছে থাকবে? সেই টানাপড়েনেই স্ত্রী-শাশুড়িকে খুন?

প্রায় ৭০ পাতা দীর্ঘ চিঠি ইংরেজিতে টাইপ করা। নীচে সই রয়েছে অমিত আগরওয়ালের। ওই চিঠি অমিতের স্বীকারোক্তি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ১৫:৪৫
ফুলবাগানের এই অ্যাপার্টমেন্টেই ঘটে খুন ও আত্মহত্যার ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র

ফুলবাগানের এই অ্যাপার্টমেন্টেই ঘটে খুন ও আত্মহত্যার ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র

ছেলে কার কাছে থাকবে তা নিয়েই কি স্ত্রী শিল্পী এবং শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে শত্রুতা? যার জেরে বেঙ্গালুরুতে স্ত্রী-কে খুন করে কলকাতায় শ্বশুর-শাশুড়িকে মারতে এসেছিলেন অমিত আগরওয়াল? সোমবার ফুলবাগানের রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে রামেশ্বরম অ্যাপার্টমেন্টে ঢনঢনিয়া পরিবারের ফ্ল্যাট থেকে অমিত এবং তাঁর শাশুড়ি ললিতা ঢনঢনিয়ার দেহের সঙ্গে উদ্ধার হয় একটি লম্বা চিঠিও।

প্রায় ৭০ পাতা দীর্ঘ চিঠি ইংরেজিতে টাইপ করা। নীচে সই রয়েছে অমিত আগরওয়ালের। সেই চিঠি পড়েই তদন্তকারী আধিকারিকরা প্রথমে সন্দেহ করেন বেঙ্গালুরুতে নিজের স্ত্রীকে খুন করে কলকাতায় শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন অমিত। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ওই চিঠিতেই স্ত্রী সম্পর্কে কিছু ইঙ্গিত ছিল যেখান থেকে আমাদের সন্দেহ হয়।” এর পর বেঙ্গালুরু পুলিশের সহায়তায় সেখানকার অভিজাত হোয়াইটফিল্ড রোড এলাকার আবাসন থেকে শিল্পীর দেহ উদ্ধার হয়।

পুলিশ সূত্রে, ওই চিঠিটি অনেকটা অমিতের স্বীকারোক্তি। সূত্রের খবর, ওই চিঠিতে তিনি দাম্পত্যে ভাঙন এবং তার কারণ থেকে শুরু করে শ্বশুর-শাশুড়ির উপর তাঁর ক্ষোভ এবং আক্রোশের একাধিক কারণ উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে বার বার এসেছে অমিত এবং শিল্পীর ছেলের বিষয়টি। এক তদন্তকারীর দাবি, বছর দুয়েক ধরে ওই দম্পতি আলাদা থাকতে শুরু করেন। এক তদন্তকারীর কথায়, শিল্পী এবং অমিত বেঙ্গালুরুতেই আলাদা থাকতেন। অমিতের আদি বাড়ি উত্তরপাড়ার স্টেশন রোডে। ছেলে থাকত মা শিল্পীর সঙ্গে। আদালতের নির্দেশে নির্দিষ্ট সময় পর পর ছেলের সঙ্গে দেখা করতেন অমিত। অমিতের চিঠি দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, ছেলে কার কাছে থাকবে তা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অমিত এবং শিল্পীর মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। সেই টানাপড়েন আদালতেও গড়ায় বলে অনুমান পুলিশের। আর সেই ঘটনা থেকে ক্রমশ খারাপ হতে থাকে অমিতের সঙ্গে শিল্পী এবং শ্বশুরবাড়ির সম্পর্ক।

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাট যেন রণক্ষেত্র, খুনের আগে শিল্পীর সঙ্গে বচসা-মারামারি অমিতের

অমিতের এক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। সেই ভাইয়ের কাছেই বেঙ্গালুরু থেকে ছেলেকে এনে রেখেছিলেন অমিত। তার পর যান ফুলবাগানে। পুলিশ ওই সুইসাইড নোট বা অমিতের চিঠি দেখে নিশ্চিত যে খুন এবং আত্মহত্যা পূর্ব পরিকল্পিত। অনেক আগে থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন স্ত্রী এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করার। তবে পুলিশ নিশ্চিত নয়, খুনে ব্যবহার করা ৭ মিমি পিস্তলটা কোথা থেকে জোগাড় করেছিলেন অমিত।

আরও পড়ুন: ‘নিহত কত, তাঁদের দেহ কোথায়’? দেশেই নেটাগরিকদের তোপে চিন

তদন্তকারীদের অনুমান, শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়াকেও খুন করতে চেয়েছিলেন অমিত। কিন্তু মোক্ষম মূহূর্তে পিস্তল ঠিকমতো কাজ না করায় পালিয়ে যেতে পারেন সুভাষ। কিন্তু পালাতে পারেননি শাশুড়ি ললিতা। উদ্ধার হওয়া পিস্তল পরীক্ষা করে গোয়েন্দাদের অনুমান, দু’রাউন্ড গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল। তদন্তকারীরা অমিতের লেখা চিঠি থেকে গোটা ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করছেন। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘গোটা চিঠিটিতে অমিতের প্রবল আক্রোশ প্রকাশ পেয়েছে।” তদন্তকারীরা, অমিতের শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়ার সঙ্গেও কথা বলছেন, ঠিক কী কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা বোঝার জন্য।

Phoolbagan Phoolbagan Murder Crime Bengaluru
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy