কলকাতা শহরে কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি ভাবিয়ে তুলেছে পুর প্রশাসনকে। সোমবার পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে একটি বৈঠক ছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। সেখানে তিনি নিজেই জানান সে কথা। এবং গত কয়েক বছরে কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণে পুরসভার ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মেয়র। এ দিনের বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, নির্বীজকরণের কাজ আরও দ্রুত করতে হবে। অস্ত্রোপচারের জন্য ল্যাপারোস্কোপি যন্ত্র কেনার কথাও ওঠে বৈঠকে।
এ দিনের বৈঠকে মেয়রের মুখে বারবারই কুকুরের সমস্যার কথা ওঠে আসে। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র বলেছেন, এক দিকে শহরে কুকুরে কামড়ানোর সংখ্যা বাড়ছে। অন্য দিকে, এত বেশি কুকুর রাস্তায় ঘুরছে যে, গাড়ি চাপা পড়ে মারাও যাচ্ছে। তিনি জানান, অনেক জায়গাতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রয়েছে কুকুরেরা। তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ করা না-গেলে সমস্যা আরও বাড়বে। মেয়র ডিজি-কে (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং) অবিলম্বে কুকুর নির্বীজকরণের পরিকাঠামো তৈরিতে হাত দিতে বলেন।
বছর কয়েক আগে এক বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে কলকাতার পথকুকুরের গণনা করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এ শহরে প্রায় ৭০ হাজার কুকুর রয়েছে। এখন সেই সংখ্যাটি বেড়েছে বলেই পুরকর্তাদের ধারণা। বর্তমানে একমাত্র ধাপার ডগপাউন্ডে কুকুরের নির্বীজকরণ হয়। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ দিন কয়েক আগে জানিয়েছিলেন, সেখানে দৈনিক মাত্র ২০টি কুকুরের নির্বীজকরণের কাজ হতে পারে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে মনে করেন মেয়র। সম্প্রতি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কুকুরছানাদের মেরে ফেলার ঘটনায় হইচই শুরু হয় শহর জুড়ে। তার পরেই মেয়র জানান, দিনে এক হাজার করে কুকুর নির্বীজকরণের কাজ করতে হবে। সেই অনুযায়ী পরিকাঠামো গড়ার নির্দেশ দেন তিনি।
এ দিনের বৈঠকে ফের সেই প্রসঙ্গ উঠতেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়, ধাপার ডগপাউন্ডে একটি পাঁচতলা ভবন তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। সেখানে নীচের তলায় হাজারখানেক কুকুরের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা রাখা হবে। উপরে অস্ত্রোপচারের পরে রাখা হবে কুকুরগুলিকে। এর জন্য যত জন পশু-চিকিৎসক প্রয়োজন, তা-ও নিয়োগ করা হবে। রাখা হবে সহায়কও, যাঁরা অস্ত্রোপচারের কাজে চিকিৎসকদের সহায়তা করবেন। তখনই অস্ত্রোপচারের জন্য ল্যাপারোস্কোপি যন্ত্রের কথা ওঠে। বৈঠকে বলা হয়, সাধারণ অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে একটা কুকুরকে সাত দিন রাখতে হয়। কিন্তু ল্যাপারোস্কোপি হলে তিন দিনেই ছাড়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে পশু-চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। এর জন্য কত খরচ হতে পারে, তার একটি প্রকল্প-রিপোর্টও তৈরি করতে বলা হয়েছে পুর স্বাস্থ্য দফতরকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy