Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হোর্ডিং দিয়ে ক্ষমা চাইবে পুরসভা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই মেয়রকে ফোন করে বেহালার খারাপ রাস্তাঘাট ও জমা জলের সমস্যার বিষয়টি জানতে চান। এর পরেই ন়ড়ে বসে পুর প্রশাসন।

জলমগ্ন বেহালা। ফাইল চিত্র

জলমগ্ন বেহালা। ফাইল চিত্র

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৭
Share: Save:

বর্ষায় জল জমে বেহালা যে বেহাল হয়, এ বার সেটাই স্বীকার করে হোর্ডিং দিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।

সিদ্ধান্ত হয়েছে, বেহালার যে সব এলাকায় জল জমে রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, সেখানে এই হোর্ডিং দেওয়া হবে। তাতে বলা হচ্ছে, কাজ শেষ হলে এই অঞ্চলে জল জমার সমস্যা মিটবে। সাময়িক এই অসুবিধার জন্য বাসিন্দাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার কথাও থাকছে সেখানে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই মেয়রকে ফোন করে বেহালার খারাপ রাস্তাঘাট ও জমা জলের সমস্যার বিষয়টি জানতে চান। এর পরেই ন়ড়ে বসে পুর প্রশাসন। তার পরেই বেহালা নিয়ে ওই দিন বিকেলেই বৈঠকে বসেন মেয়র, পুর কমিশনার-সহ পদস্থ অফিসার এবং ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেখানেই স্থির হয়, এক, বাসিন্দাদের অসুবিধার জন্য পুর প্রশাসন দুঃখ প্রকাশ করবে। দুই, যে সব কাজ এখনও হয়নি তা দ্রুত করতে হবে। তিন, কত দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে তা-ও স্থানীয় এলাকায় জানিয়ে দিতে হবে।

অথচ বেহালার এই অবস্থা নতুন কিছু নয়। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেও একাধিক বার বলেছেন, বেশি বৃষ্টি হলে বেহালার বেশ কিছু এলাকায় জল জমে যায়। তা দু-তিন দিন জমেও থাকে। নিকাশি ব্যবস্থার খারাপ দশা এই পরিস্থিতির মূল কারণ, তা-ও বলতে ছাড়েননি তিনি। নিকাশির কাজের ঢিলেমি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুরসভার অন্দরে। তবুও হেলদোল ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ফোন করতেই এ বার টনক নড়ল, পুরসভার অন্দরে এমনই দাবি।

বৈঠকে ঠিক হয়েছে, চলতি সপ্তাহে বেহালার ১২৫, ১২৬, ১২৮ এব‌ং ১২৯ নম্বর ওয়ার্ড-সহ জলবন্দি এবং ভাঙা রাস্তায় হোর্ডিং দেবে পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, বাসিন্দাদের নজর টানতে শ’খানেক হোর্ডিং দেওয়া হবে। প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রী বলার পরে যে উদ্যোগী হয়েছে পুর প্রশাসন। সেই পদক্ষেপ আগে করা হয়নি কেন? নিকাশি দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, বেহালার ওই সব এলাকার বেশির ভাগ কাজ কেইআইআইপি-র হাতে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) টাকায় অনেক এলাকায় নিকাশির কাজ হয়েছে বটে, তবে তা বিজ্ঞানসম্মত না হওয়ায় ফল পাচ্ছেন না মানুষ। এ নিয়ে কেইআইআইপি-র সঙ্গে পুরসভার নিকাশি দফতরের ঠান্ডা লড়াই বহু দিনের। মাস কয়েক আগে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় কেইআইআইপি-র এক অধিকর্তাকে ডেকে ভর্ৎসনা করে দ্রুত কাজ করার কথাও বলেছেন।

পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়রকে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের পরে মঙ্গলবারই মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের পাম্পিং স্টেশনের কাজ দেখতে যান। সেখানকার দুই ঠিকাদার সংস্থাকে শো-কজ করার কথাও জানান। অভিযোগ, সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি তারা। তবে কেইআইআইপি-র ঢিলেমি নিয়ে কেউ জবাব দিতে চাননি।

পুরসভার সিপিএম দলের নেত্রী রত্না রায়মজুমদার বলেন, ‘‘হোর্ডিং দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করা বা ক্ষমা চাওয়া তো লোক দেখানো। কেন ঢিলেমি করছে কেইআইআইপি, তা দেখা হোক। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ ইতিমধ্যেই এডিবি-র কয়েকশো কোটি টাকা নিকাশির জন্য কেইআইআইপি খরচ করেছে। সেই কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে পুরমহলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water logged KMC Advertisement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE