নিরাপত্তার দাবিতে ক্ষোভ জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। রবিবার, জ্যোতিনগর কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র
মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় শুক্রবার চিৎপুরের সর্বমঙ্গলা ঘাটে কয়েক জন যুবকের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন চিৎপুর থানার অতিরিক্ত ওসি শচীন মণ্ডল। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। পাশাপাশি, পুলিশ যে ভাবে বস্তি ঘিরে ফেলে স্থানীয় লোকজনকে গ্রেফতার করেছে, তারও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার রাতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৯ জন। ধৃতদের মধ্যে আছেন পেশায় গাড়িচালক সাহিন শেখ। তাঁর বড় ছেলে জাভেদ শেখ এ বার পাইকপাড়ার রাজা মণীন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। জাভেদের অভিযোগ, ‘‘বাবা লরি চালিয়ে সংসার চালান। ওই রাতে গা়ড়ি চালিয়ে এসে ঘুমোচ্ছিলেন। আমি তখন পড়ছি। এরই মধ্যে পুলিশ এসে বাবাকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গেল। অথচ বাবা কোনও ভাবেই পুলিশকে মারধরে জড়িত নয়।’’ তার কথায়, ‘‘আমরা গরিব। বাবা অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। সোমবার ইতিহাস পরীক্ষা। জানি না, এই অবস্থায় কী ভাবে পরীক্ষা দেব। পড়ায় তো মন বসাতেই পারছি না।’’
শুধু জাভেদ নয়। জ্যোতিনগর কলোনির নাজমা বিবি, সবেদা বিবি বা কাজল বিবি— প্রত্যেকেই শুক্রবার রাতের ঘটনায় পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, পুলিশ সামনে যাকে পেয়েছে, তাকে লাঠিপেটা করেছে। কাজলের কথায়, ‘‘আমরা তখন খাওয়াদাওয়া সেরে সবে শুতে যাব। এরই মধ্যে পুলিশ এসে জোর করে ঢুকে বাড়ির লোকেদের তুলে নিয়ে গেল।’’ স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, ‘‘ওই রাতে সর্বমঙ্গলা ঘাটে কয়েক জন বহিরাগত মদ খাচ্ছিল। ওসি প্রতিবাদ করায় ওই যুবকেরা তাঁকে মারধর করে। অথচ পুলিশ উল্টে নিরীহ লোকজনকেই ধরল।’’
এলাকার বিধায়ক মালা সাহা বলেন, ‘‘পুলিশকে মারধরের ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। যারা মূল অভিযুক্ত, তাদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ।’’ যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নিয়েই জ্যোতিনগর কলোনির ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy