গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শনিবার রাত তখন দেড়টা-পৌনে দু’টো। হঠাৎই ছাদে কয়েক জনকে দৌড়োদৌড়ি করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে লাফ দিয়ে যাচ্ছে। আবার ছাদ থেকে নেমে যাচ্ছে কেউ। এমনই খণ্ড খণ্ড দৃশ্য দেখতে পান ওয়াচ টাওয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত রক্ষীরা। আর তার পরেই মধ্যরাতে ‘অশরীরী’ আতঙ্কে’ হুলস্থূল শুরু হয়ে যায় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। যদিও ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ।
সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই প্রেসিডেন্সি জেলে ‘অশরীরী’র কথা বলছেন বন্দিরা। এক বার রাতে শুয়ে থাকাকালীন এক বন্দির মনে হয়েছিল, সামনে কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কয়েক দিন আগে অন্যদের সে কথা জানিয়েছিলেন তিনি। অন্য বন্দিরা জানিয়েছেন, কয়েক মিনিট ধরে শৌচাগারে গিয়ে গোঁ গোঁ আওয়াজ করেছিলেন তিনি। পরে বলেছিলেন, ‘‘কেউ বোধহয় আমাকে ধাক্কা মারছিল। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।’’ বন্দিদের থেকে এ সব শোনার পরে জেল কর্তৃপক্ষ তা কার্যত উড়িয়ে দেন।
শনিবার রাতে ‘ভূতেদের’ ছোটাছুটি করতে দেখার পরে ছ’নম্বর ওয়াচ টাওয়ারের রক্ষীরা খবর দেন ওয়ার্ডের ভিতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের। সেখান থেকে অন্য আধিকারিকদের কাছেও ‘ভূত’ সংক্রান্ত খবর চলে যায়। তার পরে রক্ষী এবং আধিকারিকদের একটি দল বিভিন্ন ওয়ার্ডে যায়। ওয়ার্ডগুলিতে তল্লাশি শুরু হয়। বন্দিদের সংখ্যাও মিলিয়ে দেখা হয়। কিন্তু সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি। ওই দলটিই জেলের ছাদেও পরিদর্শনে যায়। পাশাপাশি, নেতাজি সেল এবং হসপিটাল সেলের ছাদেও যান দলের সদস্যেরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁদের। তার পরেই ‘ভূত’ নিয়ে আরও জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলের অন্দরে।
এমনকি, বন্দিদের অনেকেই নাকি বলছেন, ‘অশরীরী’ নিয়ে এত দিন তাঁরা যে অভিযোগ করে আসছিলেন, তা সঠিকই ছিল। এত দিন এ সব অভিযোগ পাত্তাই পেত না। বন্দিদের কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু শনিবারের পরে সেই দাবি ‘প্রতিষ্ঠা’ পেয়েছে বলেই দাবি করছেন বন্দিদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে এখন ‘অশরীরী’ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যা কাটানোর চেষ্টাও শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ।
পদস্থ কর্তারাও ঘনিষ্ঠ মহলে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে সংশোধনাগারের সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ সব যে কারা রটাচ্ছে! এমন কোনও ঘটনা তো ঘটেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy