Advertisement
E-Paper

পথে মরণফাঁদ, প্রশাসন কবে দেখবে

সোমবার বাবা ঋত্বিক মিশ্রের সঙ্গে বাইকে চড়ে আকাঙ্ক্ষা মোড়ের কাছে ফ্ল্যাট দেখতে যাচ্ছিল দেবাংশ। ঋত্বিকের মাথায় হেলমেট থাকলেও দেবাংশের মাথায় ‘রক্ষাকবচ’ ছিল না।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৩
রাস্তার ধারের এই চাঙড়গুলিই বাড়াচ্ছে ঝুঁকি। নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার ধারের এই চাঙড়গুলিই বাড়াচ্ছে ঝুঁকি। নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা তো নয়, যেন খাদের ধার! বেসামাল হলেই কংক্রিটের চাঙড়ে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা। দু’দিন আগে সেখানেই বাইক দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর পরে আতস কাচের তলায় এসেছে নিউ টাউনের রাস্তার সেই মরণফাঁদ।

সোমবার বাবা ঋত্বিক মিশ্রের সঙ্গে বাইকে চড়ে আকাঙ্ক্ষা মোড়ের কাছে ফ্ল্যাট দেখতে যাচ্ছিল দেবাংশ। ঋত্বিকের মাথায় হেলমেট থাকলেও দেবাংশের মাথায় ‘রক্ষাকবচ’ ছিল না। চার নম্বর নাকার কাছে মেট্রো স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। সেখানকার বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঋত্বিক বাইক নিয়ে পড়ে যান। মৃত্যু হয় চার বছরের শিশুটির। মাথায় ‘রক্ষাকবচ’ থাকলে শিশুটি হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত। কিন্তু রাস্তার ধারে চাঙড় পড়ে থাকবে কেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।

বিধাননগর সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য রাস্তার ধারে চাঙড় পড়ে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রকল্প এলাকা এমন ভাবে ঘেরা উচিত, যাতে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে অসুবিধা না হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। চার নম্বর নাকা সিগন্যাল পেরোলেই রাস্তার উপরে বিশাল আয়তনের কংক্রিটের চাঙড় ফেলে রেখেছে প্রকল্পের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। নিউ টাউনের ওই অংশে মেট্রো স্তম্ভের নীচ বরাবর বুলেভার্ডে মাটি ফেলার কাজ চলছে। তা রাস্তায় ছড়িয়ে আছে। তাকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে পাথরের চাঁই। বুধবার ওই রাস্তা ধরে বাইক চালিয়ে নজরুল তীর্থ যাচ্ছিলেন দুই তরুণ-তরুণী। বাঁ দিক থেকে একটি বাস ডান দিকে চাপলে কোনও রকমে পাথরের চাঁই কাটিয়ে বাইক নিয়ে এগোন তাঁরা। সেই দৃশ্য দেখে ন’পাড়ার বাসিন্দা সঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘একটুর জন্য বেঁচে গেল! রাস্তার এমন হলে তো বাইক চালানোই দায়।’’

সব চেয়ে বিপজ্জনক অবস্থা নির্মীয়মাণ মেট্রো স্টেশনের বাঁকের মুখে। সিগন্যাল ছাড়ার পরে সকলেরই গতি ঊর্ধ্বমুখী। বাঁক পেরোনোর পরে কতটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি, একেবারে কাছে না এলে তা আন্দাজ করা মুশকিল। একটু নিয়ন্ত্রণ হারালেই পাথরের চাঙড়ে ধাক্কা লেগে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আকাঙ্ক্ষা মোড় সংলগ্ন একটি আবাসনের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু সেন বলেন, ‘‘রাস্তার পিচ যেখানে শেষ হচ্ছে, তার পাশেই পাথর। ইকো পার্কগামী কোনও বাইক রাস্তা থেকে গাড়ি নামালেই বিপদ!’’ প্রকৃতি তীর্থের তিন নম্বর গেটের উল্টো দিকে এবং জাতীয় পরিবেশ আদালতের কার্যালয়ের কাছেও একই ছবি।

মেট্রো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার এক আধিকারিক জানান, শুধু প্রকল্পের সাইন বোর্ড আগে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাসগুলি এত কাছ ঘেঁষে যায় যে কর্মীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ওই চাঙড় রাখা হয়েছে। এক স্থানীয়ের প্রশ্ন, ‘‘প্রকল্পের সাইন বোর্ড, সঙ্গে চাঙড়। রাস্তার আর থাকল কী?’’

বিধাননগর সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) অভিজিৎ সিংহ কার্ডিয়ান বলেন, ‘‘রাস্তার ধারে পাথরের টুকরো কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মেট্রোর এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে সব চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’

Govt Road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy