সেই সাদা বালতি। নিজস্ব চিত্র
সকালবেলা জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য বাঁশি কলকাতা শহরে নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু সেই বাঁশির সঙ্গে ‘সাদা বালতি’ ডাক এ শহরের কম ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই শুনে থাকেন। কারণ, বাড়ি থেকে জৈব বর্জ্য পদার্থের পাশাপাশি অজৈব বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহের কাজ শুধুমাত্র কলকাতা শহরের সাতটি ওয়ার্ডেই চালু রয়েছে।
ঠিক কী কাজ হচ্ছে এই সাদা বালতি প্রকল্পে?
এই প্রকল্পে বাড়ি এবং ফ্ল্যাট-পিছু ওয়ার্ড থেকে দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট সাদা রঙের বালতি। প্লাস্টিক, কাগজ, কাচের বাতিল জিনিস ফেলতে হবে সেই বালতির মধ্যেই। আর সেই বালতির জিনিসপত্র সপ্তাহে তিন দিন করে পুরসভার কর্মীরা এসে নিয়ে যান। প্রথমে ধাপায় নিয়ে গিয়ে সেগুলি নথিভুক্ত করানোর পরে প্লাস্টিক বা প্লাস্টিক জাতীয় জিনিসপত্র পৌঁছে যায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ‘রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি’গুলিতে।
পরে সেই জিনিসগুলিই আলাদা আলাদা করে ভাগ করে বস্তায় ভরেন পুরকর্মীরা। প্লাস্টিকের সব জিনিসপত্র চলে যায় ধাপায় রিসাইক্লিংয়ের জন্য। গত নয় বছর ধরে এ ভাবেই বাড়ি থেকে জিনিসপত্র আলাদা করে নিয়ে যায় কলকাতা পুরসভার
১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তবে শুধু এই ওয়ার্ডেই নয়, বাড়ি থেকেই নোংরা আর বাতিল সমস্ত জিনিসপত্র বাছাই করে নিয়ে যাওয়ার প্রকল্প চালু রয়েছে কলকাতা পুরসভার ৩৩, ৪৭, ৬৪, ১০৩, ১১০, ১১৫ এবং ১৩০ ওয়ার্ডেও। শুধু তাই নয়। বাড়ি থেকে প্রতিদিন এই সব জিনিসপত্র ঠিক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কি না, ওয়ার্ডের নিযুক্ত পুরকর্মীদের লোকজনের সম্পূর্ণ নজরদারিও রাখা হয় নিয়মিত। পুরসভা সূত্রের খবর, ১৯৯৫-৯৭ এবং ২০০০-০৫ থেকে এই প্রকল্প শহরে চালু করার কথা ভাবনাচিন্তা করা হয়। উদ্দেশ্য, এক, বাড়ি থেকে জৈব এবং অজৈব পদার্থকে আলাদা করা। এতে লোকজন প্লাস্টিক আলাদা করে রাখলে তা রাস্তায় বা খোলা জায়গায় ফেলাও বন্ধ করা সম্ভব। পরে এই প্লাস্টিককেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা।
দুই, বাড়ি থেকে জিনিসপত্র আলাদা আলাদা করে নেওয়ার ফলে পরিবহণ খরচও কম হয়। কারণ জৈব পদার্থের মতো অজৈব পদার্থ রোজ রোজ বাড়ি থেকে সংগ্রহ করার কোনও প্রয়োজন থাকে না। ফলে সপ্তাহে তিন দিন এই জিনিসগুলি সংগ্রহ করলে তার পরিবহণও কম হয়। তিন, গাড়ির ব্যবহার কম হলে দূষণও কমবে। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলেও খরচসাপেক্ষ হওয়ার কারণেই সব ক’টি ওয়ার্ডে তা চালু করা সম্ভব হয়নি বলেই পুরসভা সূত্রের খবর।
মেয়র-পারিষদ (বর্জ্য অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘মাত্র সাতটি ওয়ার্ডে এই প্রকল্প চালু হলেও ধাপে ধাপে কলকাতা পুরসভার সব ওয়ার্ডে তা শুরু করা হবে। তবে তা কবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy