প্রতীকী ছবি।
সরকারি ‘ফ্রি’ স্বাস্থ্য পরিষেবার অবশিষ্ট ফাঁকটুকু এ বার পূরণ হতে চলেছে।
সরকারি হাসপাতালে ওষুধ ও অন্য সব পরিষেবা নিখরচায় মেলে। একমাত্র ব্যতিক্রম কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রগুলি। কারণ, সেখানে অধিকাংশ রোগীকেই টাকা দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে হয়। যদিও বাজারমূল্যের থেকে তা কম, কিন্তু তাতেও বেশ ভালই টাকা খরচ হয় এবং অনেকেই সেই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে দিশেহারা হন। হাতেগোনা অতি দরিদ্র ১৫-২০ শতাংশ রোগী সেখানে নিখরচায় পরিষেবা পান।
তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতরে অনেক দিন ধরেই অসন্তোষ রয়েছে। এমনকী, জেলার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রগুলিতেও রোগীরা এখন এক্স-রে, ইসিজি, ডায়ালিসিস, ইউএসজি, স্ক্যান, রক্ত পরীক্ষা সব কিছুই নিখরচায় পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন মহলে অনেক দিন থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, কলকাতা কেন এই সুবিধার বাইরে থাকবে?
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই বিভাজন এ বার মুছে যাচ্ছে। দফতরে ফাইল চালাচালি শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই কলকাতার সমস্ত সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রে সব রোগী সমস্ত ধরনের পরীক্ষা নিখরচায় করাতে পারবেন। এর জন্য যা খরচ হবে তা সরকারের তরফে ওই বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এর জন্য প্রাথমিক ভাবে বছরে ৭০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘কথা বার্তা অনেক দূর এগিয়েছে।’’ পিপিপি বিভাগের এক কর্তাও বলেন, ‘‘নবান্ন থেকে জানানো হয়েছে, ফাইল কিছু দিনের মধ্যেই সই হয়ে যাবে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার মতে, কলকাতার একেবারে লাগোয়া এলাকায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ বা হাওড়া জেলা হাসপাতাল বা এমআর বাঙুর হাসপাতালের মতো জায়গায় রোগীরা পিপিপি মডেলের ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রে নিখরচায় পরীক্ষা করাতে পারছেন, অথচ এনআরএস, এসএসকেএম বা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেটা করাতে টাকা লাগছে, এই পার্থক্য থাকা উচিত নয়। এর ফলে মানুষের ভিতরে ক্ষোভ বাড়ছিল। ‘ফ্রি’ চিকিৎসা নীতির এই ঘাটতিটুকু এ বার মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে।
আর এক কর্তার কথায়, ‘‘বাজারে যে পরীক্ষার জন্য ৮ হাজার টাকা লাগে সেটা করাতে পিপিপি মডেলের কেন্দ্রে হয়তো ৫ হাজার লাগে, কিন্তু সেটাও গরিব মানুষের কাছে অনেক। এটুকুও অনেকেই দিতে পারতেন না। ফলে তাঁদের চিকিৎসাও অর্ধসমাপ্ত থেকে যেত। কলকাতার ক্ষেত্রে নীতি পরিবর্তিত হওয়ায় মানুষ উপকৃত হবেন।’’
তবে, এতে সরকারের উপরে টাকার বোঝা আরও বাড়বে বলেও অনেকের আশঙ্কা। ওষুধপত্র সব ‘ফ্রি’ হওয়ার পরে অনেক বার হাসপাতালে টাকা ঢুকতে দেরি হয়েছে, বহু ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরকারি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। স্টেন্ট, পেসমেকার, অর্থোপেডিক ইমপ্ল্যান্ট সরকারি তালিকায় থাকছে কি না সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট করে স্বাস্থ্য দফতর কিছু জানাচ্ছে না। এর মধ্যে কলকাতার পিপিপি মডেলে চলা সব ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রের পরিষেবা নিখরচায় চালানো যাবে কিনা সেই সংশয় রয়েছে অনেকের মনেই। যদিও সরকারি কর্তারা জানিয়েছেন, টাকার অভাব হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy