একের পর এক গাড়ি থামিয়ে দূষণের শংসাপত্র যাচাই করছেন পুলিশকর্মীরা। প্রয়োজনে গাড়ির ধোঁয়াও পরীক্ষা করা হচ্ছে। অথচ, তার মধ্যেই পুলিশকে পাশ কাটিয়ে, গতি বাড়িয়ে, ধোঁয়া ছড়িয়ে অবলীলায় চলে যাচ্ছে বেশ কিছু গাড়ি। পুলিশ সব দেখেও তাদের কিছু করছে না। তার কারণ, পুলিশ যে সমস্ত গাড়ির দূষণ পরীক্ষা করছে, সেগুলি ডিজ়েল-চালিত। আর যে সমস্ত গাড়ি পুলিশ পরীক্ষা না করেই ছেড়ে দিচ্ছে, সেগুলি পেট্রল, এলপিজি কিংবা সিএনজি-চালিত। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে তাদের কাছে দূষণ পরীক্ষার যে যন্ত্র রয়েছে, তা দিয়ে শুধুমাত্র ডিজ়েল-চালিত গাড়িই পরীক্ষা করা যায়। এ বার তাই ডিজ়েলের পাশাপাশি পেট্রল, এলপিজি এবং সিএনজি-চালিত গাড়ির দূষণ পরীক্ষার জন্য নতুন যন্ত্র হাতে চাইছে লালবাজার। ওই একটি যন্ত্রে সব ধরনের জ্বালানির দূষণ পরীক্ষা করা যাবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘ আলোচনার পরে দূষণ পরীক্ষার জন্য আপাতত ৩২টি এমন যন্ত্র কেনার জন্য তাদের প্রস্তাব দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। পুরসভার তরফে তাতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। পুরসভা জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় তারা ওই যন্ত্র কিনে কলকাতা পুলিশকে ব্যবহার করতে দেবে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় এক কোটি ৪২ লক্ষ টাকা। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, নতুন ওই যন্ত্র এলে সব ধরনের গাড়ির দূষণ পরীক্ষা করা অনেক সহজ হবে। আপাতত ঠিক হয়েছে, ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডকে একটি করে নতুন যন্ত্র দেওয়া হবে। বাকি যন্ত্রগুলি দেওয়া হবে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের অ্যান্টি-পলিউশন সেলকে।
বর্তমানে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডের কাছে দূষণ পরীক্ষার একটি করে যন্ত্র রয়েছে। এ ছাড়া, ট্র্যাফিক পুলিশের অ্যান্টি-পলিউশন সেলের তিনটি দল ওই যন্ত্র নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে দূষণ ছড়ানো গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কলকাতা পুলিশ প্রতিদিন দূষণ ছড়ানোর দায়ে কয়েকশো গাড়ির মালিককে নোটিস পাঠায়। সেই সূত্রে মাসে কয়েকশো গাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করা হয়। তবে, দূষণের জন্য জরিমানার অঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকে মামলার সংখ্যা কমেছে বলেই সূত্রের খবর।
পরিবেশবিদদের মতে, কলকাতার রাস্তায় গাড়ির ধোঁয়া থেকেই বেশি দূষণ ছড়ায়। গাড়ির ইঞ্জিন পুরনো হয়ে গেলে বা রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো না হলে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। নতুন যন্ত্রে ডিজ়েল, পেট্রল, এলপিজি ও সিএনজি-চালিত গাড়ির দূষণ পরীক্ষা করা শুরু হলে অটোর মতো যানবাহনকেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে পুলিশকর্তাদের আশা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)