গরমে বাঁচতে ভরসা ছাতা-টুপি-রুমাল-সানগ্লাস। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
রেডার-চিত্রে চোখ লাগিয়েই রেখেছেন আবহবিদেরা। কিন্তু হাজারো ঢুঁড়েও কলকাতার আকাশে ছিটেফোঁটা মেঘেরও দেখা নেই! পশ্চিমাঞ্চলে কালবৈশাখীর বজ্রগর্ভ মেঘও তৈরি হচ্ছে না। অতএব, এপ্রিলের শেষে কলকাতার কপালে গরমে অতিষ্ঠ হওয়াই লেখা রয়েছে বলে মনে করছে আলিপুর আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘আপাতত বৃষ্টি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আগামী দিন কয়েক শুকনো গরম মিলতে পারে।’’ তবে কি তাপপ্রবাহের দিকে এগোচ্ছে মহানগর? গণেশবাবু বলছেন, ‘‘সেই আশঙ্কাও এখনও দেখা যাচ্ছে না।’’
এ দিন সকাল থেকেই রোদের তেজ ক্রমাগত বাড়ছিল। চাঁদিফাটা গরমে রীতিমতো নাকাল হয়েছেন মানুষজন। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে অস্বস্তি। সূর্য ডোবার পরে তাপমাত্রা নামলেও স্বস্তি সে ভাবে মেলেনি।
হাওয়া অফিসের খবর, এ দিন দুপুরে শহরে সর্বাধিক অস্বস্তিসূচক ছিল ৬১.৬। চরম মাত্রার না-হলেও তা বেশ অস্বস্তিকর। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার গড় মিলিয়ে এই সূচক নির্ধারণ করা হয়। এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি।
আবহবিদদের একাংশ বলছেন, বৈশাখের মাঝামাঝি এমন তাপমাত্রা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অস্বস্তির কারণ হল, শুকনো গরম ও হাওয়া চলাচল কমে যাওয়া। আর্দ্রতা বা বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ না বাড়লে ঝড়বৃষ্টির মেঘ তৈরি হতে পারে না।
তবে ‘অপরিচিত’ শুকনো গরমে বাঙালি কিন্তু এ দিন পথেঘাটে বেশ কাহিল হয়ে পড়েছে। অফিসপাড়ায় দেদার বিকিয়েছে লেবুর জল, লস্যি কিংবা নরম পানীয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, গরমে শরীরে তরলের অভাব এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া উচিত। কিন্তু একই সঙ্গে সতর্ক থাকা উচিত পথেঘাটে জলপানের ক্ষেত্রেও। কারণ, জল থেকে খুব সহজেই সংক্রমণ হতে পারে। চড়া রোদের সঙ্গে ‘টক্করে’ বিকোতে দেখা গিয়েছে সানগ্লাস, টুপিও। রোদের হাত থেকে বাঁচতে ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ব্যবহারের পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
এ বছর গ্রীষ্মের গোড়াতেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, গরম মাত্রাতিরিক্ত চেহারা নেবে না। তবে এ বছর মার্চ মাসে তাপমাত্রা তুলনায় বেশ কম ছিল। ফলে গড় হিসেব ঠিক রাখতে হলে এপ্রিল, মে মাসে তাপমাত্রা কিছুটা মাথাচাড়া দেবেই। তবে এখনও সেই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। শেষমেশ ঘুরে-ফিরে আসে সেই একই প্রশ্ন। দহনজ্বালা জুড়িয়ে শহরে কালবৈশাখী কবে আসবে? উত্তর খুঁজছে হাওয়া অফিসও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy