যখন দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ এবং গোরক্ষকদের তাণ্ডব চলছে, তখন হাওড়ার পার্বতীপুরে চলছে সম্প্রীতির পুজো! এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলেও হিন্দু দেবদেবীর সঙ্গে তাঁদের নিবিড় সম্পর্ক। এ বার যেহেতু সেপ্টেম্বরেই পুজো, তাই পার্বতীপুরের মুসলিমরা এই মুহূর্তে প্রতিমার মাথার চুল তৈরিতে চরম ব্যস্ত। প্রতি বছর প্রায় তিরিশ হাজার প্রতিমার চুল হাওড়ার এই ছোট্ট গ্রাম থেকেই মৃৎশিল্পীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এই চুল তৈরির প্রধান উপাদান হল পাট। গ্রামের রাস্তায় বাঁশের উপর সারি সারি চুল শুকোচ্ছে। এ শহরের অরিত্রিক ভট্টাচার্য, শৌর্য দেব ও অর্কময় দত্ত মজুমদারের বানানো ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ‘হেয়ারলুম’ তথ্যচিত্রে এই চমকপ্রদ ছবিই দেখানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে তথ্যচিত্রটি।
জেলখানায় সত্তর
সত্তরের নকশাল আন্দোলনের বহু কর্মীকেই দীর্ঘদিন জেলে কাটাতে হয়েছে। তাঁদের জেল থেকে লেখা চিঠির সংখ্যা যেমন অনেক, তেমনই জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে গান, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, ছড়া, রিপোর্টাজ, লেখা হয়েছে ডায়েরি। এর আগে এগুলি নিয়ে ছোটখাট সংকলন হলেও মূলত এর অধিকাংশটাই অপ্রকাশিত। এ বারে সেই লেখাগুলিকে একত্র করে বড় আকারে সংকলন করলেন শুভেন্দু দাশগুপ্ত। তাঁর সম্পাদনায় জেলখানায় লেখা সত্তর বইটি (প্রকাশক: ঠিক ঠিকানা) ৫ অগস্ট প্রকাশ পাবে ১০/১ গোয়াবাগান স্ট্রিটের ইউ এন ধর গ্যালারিতে। এ যেন এক স্মৃতির পথ ধরে আর এক সময়ের রাস্তা খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা। সে দিন ওখানে দুপুর দুটো থেকে আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা একদিন যুক্ত ছিলেন তাঁদের আড্ডা, গান গাওয়া, কবিতা পড়া।
কারুকৃতি
২৯-৩১ জুলাই, উইভার্স আর্টিজান অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টিস্টস গিল্ডের (ওয়াপাগ) বার্ষিক সম্মেলন এবং দেশীয় পরম্পরার প্রযুক্তি ও গ্রাম শিল্প প্রদর্শনী আয়োজিত হল বঙ্গবাসী কলেজে, কলেজ আর ওয়াপাগের যৌথ ব্যবস্থাপনায়। গিল্ডের বাংলা জোড়া ৪০টি সংগঠন, ব্যক্তি এবং সমর্থক এই সম্মেলনে যোগদান করেন। ৩০ তারিখ প্রভাত ফেরির মধ্যে দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। সন্ধ্যায় ছো, খন, নাটুয়া, গমিরা প্রভৃতির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। ২৯ জুলাই শুরু হওয়া প্রদর্শনীতে ছো মুখোশ তৈরি, তাঁত বুনন সরঞ্জাম, ঢোকড়া তাঁত, বঙ্গবাসী কলেজের নৃতত্ত্ব বিভাগের নানান সংগ্রহ প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়াও দশাবতার তাস, পোড়ামাটির তুলসীমঞ্চ, কুনোরের মাটির কাজ, বোঙ্গা হাতি, বিভিন্ন ধরনের থলে, গালার পুতুল, সেরপাই, পাঞ্ছি, মেচ পরিধেয়, হাতে কাটা সুতো আর প্রাকৃতিক রঙে রাঙানো কাপড়, হাতে তৈরি সাবান, ব্যথার তেল ইত্যাদি নিয়ে প্রদর্শনী শেষ হবে আজ সন্ধ্যায়।
কিশোর-রাহুল
তিনি মনে করতেন ফিল্ম হল প্রমোদ-উপকরণ, তাই হাসি-খুশিতেই ফিল্মের মর্মবাণী পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন আম নাগরিকের কাছে। মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া অঞ্চলে ১৯২৯ সালের ৪ অগস্ট জন্ম সংগীতশিল্পী, চলচ্চিত্রাভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক কিশোরকুমারের। তিনি সব ধরনের গানই গাইতে পারতেন। এ বার তাঁরই ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে ৩ অগস্ট, সাড়ে ৬টায়, উত্তম মঞ্চে তাঁকে ও রাহুলদেব বর্মনকে উৎসর্গীকৃত এক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। যেখানে দেবজিৎ রায়ের তত্ত্বাবধানে সুজয় ভৌমিক, সৌরভ দাস, সিসপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, আবির সেন, সৃজিৎ, মুনমুন রায়ের কণ্ঠে কিশোর-আর ডি জুটির তৈরি করা অপ্রকাশিত বেশ কিছু গান— ক্যায়সে দেখো মেরি আঁখো কি বহুত পাস হো তুম, ফুলো কি জুবা বা ফুলো কি দেশ মে, বহুত রাত হুয়ি ইত্যাদি গান তো শোনা যাবেই, সঙ্গে থাকবে বেশ কিছু মুক্তি পাওয়া গানও। আয়োজনে শ্যাম সরকার ও দেবরাজ ঘোষ। ৪ অগস্ট সালকিয়া কিশোরকুমার মেমোরিয়াল কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে একটি প্রভাতী যাত্রা। চলতে চলতে শীর্ষক এই পদযাত্রা সকাল সাতটায় শুরু হবে ধর্মতলা মেট্রো চ্যানেল থেকে, শেষ হবে সালকিয়া ধর্মতলায়। এখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেই থাকবে শিল্পীর স্মরণে সুসজ্জিত ট্যাবলো।
শিশু চলচ্চিত্র
ছোটু-র দিদি পারি-ই ছোটুকে আগলায়, বন্ধুর মতো, অভিভাবকের মতো, কারণ ছোটুর দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। পারি শাহরুখ খানের ভক্ত, ছোটু সলমন-এর, এই দুই তারকাকে নিয়ে তারা বাজিও লড়ে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে। ভাইয়ের চোখের জন্য দূরের নক্ষত্রের কাছে পৌঁছতেও পিছপা হয় না দিদি। আদ্যোপান্ত বাস্তবে মোড়া এক আশ্চর্য রূপকথা নাগেশ কুকুনুর-এর ছবি ‘ধনক’— যার অর্থ ‘রামধনু’, ছোটদের ছবি হিসেবে ইতিমধ্যেই সেরা-র শিরোপা পেয়েছে বার্লিন উৎসব থেকে জাতীয় পুরস্কারে। নাগেশের উপস্থিতিতে সে ছবি দেখিয়েই উদ্বোধন হল আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব-এর, যেখানে সারা দুনিয়ার বাছাই-করা ছোটদের ছবির সমাহার। ১-৪ অগস্ট অবধি টানা চলবে নন্দনে, এর পর কলকাতার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছবি দেখা যাবে। আয়োজনে নন্দন ইউনিসেফ ও সিনে সেন্ট্রাল।
দেওয়ালচিত্র