Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বরো-১২

দুর্গে ফাটল বুঝেও রক্ষায় মরিয়া বাম

যাদবপুর, কসবার মতো বাম দুর্গের নেতারা এক সময় দাপিয়ে বেড়াতেন শহর কলকাতা। ভোটে কী ভাবে ‘কাজ’ করতে হয় ওই এলাকার কমরেডদের কাছে তার তালিমও নিতেন পার্টির অন্য এলাকার ভোট যোদ্ধারা। অভিযোগ উঠত সন্ত্রাস আর বুথ দখল নিয়ে। যা নিয়ে বারংবার সরব হয়েছে বিরোধী তৃণমূল এবং কংগ্রেস। ‘পরিবর্তনে’র পরে সেই বাম দলই ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ তুলছে তাদেরই হারানো মসনদে দাঁড়িয়ে।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
কৌশিক ঘোষ শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪১
Share: Save:

যাদবপুর, কসবার মতো বাম দুর্গের নেতারা এক সময় দাপিয়ে বেড়াতেন শহর কলকাতা। ভোটে কী ভাবে ‘কাজ’ করতে হয় ওই এলাকার কমরেডদের কাছে তার তালিমও নিতেন পার্টির অন্য এলাকার ভোট যোদ্ধারা। অভিযোগ উঠত সন্ত্রাস আর বুথ দখল নিয়ে। যা নিয়ে বারংবার সরব হয়েছে বিরোধী তৃণমূল এবং কংগ্রেস। ‘পরিবর্তনে’র পরে সেই বাম দলই ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ তুলছে তাদেরই হারানো মসনদে দাঁড়িয়ে। পুর ভোটের মুখে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে, ভোটারদের কাছে তাদের বলতে হচ্ছে ‘অবাধ ভোট হলে বামেদের সমর্থন জানাবে মানুষ।’ এখনকার ‘কমরেডদের’ মুখের ওই ভাষা ভাবাচ্ছে এই এলাকার বরাবরের বাম সমর্থকদের। তাঁদের অভয় দিতেই সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কেও রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে। সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে বিজেপির পক্ষ থেকেও। পাড়ায় পাড়ায় বাইক বাহিনীর দাপটে ভোটপর্ব বিঘ্নিত হতে পারে বলে আগাম আশঙ্কা করছেন বিজেপির প্রার্থীরা।

তবে সাবেক কলকাতার মতো সংযোজিত এলাকার ওয়ার্ডেও তৃণমূল প্রচারে এটা বুঝিয়ে দিতে পেরেছে যে ক্ষমতায় তারাই আসছে। অতএব, তাদের ভোট দেওয়াই শ্রেয়।

যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচটি এবং কসবার দুটি ওয়ার্ড নিয়ে কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরো। মোট ওয়ার্ড সাতটি। এর মধ্যে ১০৫, ১০৬, ১০৭ এবং ১০৮ তৃণমূলের দখলে। বামফ্রন্ট জিতেছিল ১০১, ১০২ এবং ১০৯ ওয়ার্ডে। কলকাতা পুরসভায় সংযোজিত এলাকা যুক্ত হওয়ার পরে ১৯৮৫ সালে প্রথম ভোট থেকেই এই তিনটি ওয়ার্ডে হারেনি বামেরা। এমনকী ২০১৪ সালে প্রবল মোদী হাওয়াও টলাতে পারেনি এই তিনটি ওয়ার্ডের বাম সমর্থকদের মনোবল। ১০১ এবং ১০২ ওয়ার্ডে গত পুরভোটের চেয়ে বামেদের জয়ের ব্যবধান লোকসভায় অনেক কমেছে।

ব্যতিক্রম ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে তৃণমূলের থেকে সিপিএম এগিয়ে রয়েছে প্রায় ৩৩২৭ ভোটে। গত পুরভোটে যা ছিল মাত্র ৬০০। তা সত্ত্বেও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুমকি দাসকে সরিয়ে শিখা পূজারীকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। দক্ষিণের ডাকসাইটে সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের হোম ওয়ার্ড ১০৯। কেন প্রার্থী বদল সেখানে? প্রার্থী শিখা পূজারীর কথায়, ‘‘যতটা কাজ করার কথা ছিল, তা করতে পারেনি বলেই দল তাঁকে সরিয়েছে।’’ তবে স্থানীয় এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘বামপন্থার আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণের সরানো হয়েছে রুমকিকে।’’ গত পাঁচ বছর এলাকার মানুষও অবশ্য সিপিএম কাউন্সিলরের কাজে অখুশি। শহিদ স্মৃতি কলোনি, বুদেরহাটের জনা কয়েক বাসিন্দা বলেন, ‘‘খাবার জল ও নদর্মার জল মিশে যায়। কখনও তা-ও খেতে হয় আমাদের।’’ কোথাও বা জলের এত অভাব যে মাটি খুঁড়ে খাওয়ার জল বের করতে হয়। ‘‘ওঁদের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াই আমাদের প্রধান কাজ।’’ জানালেন তৃণমূল প্রার্থী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী অনন্যা কয়েক বছর ধরেই মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহভাজন। তবে স্বামী বিজেপি-র হয়ে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ায় অস্বস্তিও বেড়েছিল পরিবারে, যা নিয়ে সিউড়িতে এক জনসভায় জয়কে ‘খোঁচা’ও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনন্যা প্রার্থী, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই। যাদবপুরে তৃণমূল নেতাদের বদলে ভোটের রাজনীতিতে প্রায় আনকোরা এক জনকে প্রার্থী করা হল কেন?

এলাকার তৃণমূল নেতাদের কথায়, ‘‘বামদুর্গ হিসেবে পরিচিত এই ওয়ার্ড। এখানে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী প্রয়োজন। সে দিক থেকে অনন্যা যোগ্য।’’ দলের একাংশের ব্যাখ্যা, বাইপাস সংলগ্ন যাদবপুর এলাকায় রমরমা প্রোমোটার রাজ। তাতে যোগ আছে এমন কোনও নেতাকে প্রার্থী করতে সাহস পায়নি দল। সে কারণেই এক সময়ের ‘মিস ক্যালকাটা’ অনন্যাকে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রার্থী অনন্যা বললেন, ‘‘স্থানীয় দাদাদের সাহায্য নিয়েই প্রচার চালাচ্ছি।’’ ৪২ হাজার ভোটার ওই ওয়ার্ডে। অনন্যার মতোই হাজির রুপোলি পর্দার এক অভিনেত্রী দেবিকা মুখোপাধ্যায়। বিজেপি-র প্রার্থী। কালিকাপুরে প্রচার চালানোর ফাঁকেই শোনালেন ভোট চাইতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। শুধুমাত্র পানীয় জলের জন্য মানুষের আর্তি দেখে হতবাক সিনেমার ‘ছোট বউ’ দেবিকা। বলেই ফেললেন, ‘‘ভোটে না দাঁড়ালে এই হাল জানতেই পারতাম না।’’ তাঁর সাফ কথা, ‘‘হারা জেতা তো পরের ব্যাপার। মানুষগুলোকে জল দেওয়ার সুযোগ পেলে ভাল লাগত।’’ শিখা অবশ্য এঁদের কাউকেই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মানতে নারাজ। বললেন, ‘‘সন্ত্রাসের বাতাবরণ করতে চাইছে তৃণমূল। অবাধ ভোট হলে আমরাই জিতব।’’

গত লোকসভা নিবার্চনে ১০১ ওয়ার্ডে এগিয়েছিলেন বাম প্রার্থী। সেটি সিপিএমের হাতছাড়া করতে এ বার তৃণমূল দাঁড় করিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে। তৃণমূলের তরফে এটা যদি চমক হয়, তবে সিপিএম তাদের বর্তমান কাউন্সিলর গৌতম সরকারকে টিকিট না দিয়ে আরও বড় চমক দিতে চেয়েছে। দন্তচিকিৎসক অমিত শঙ্কর জানা এ বার সিপিএম প্রার্থী। কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য অমিতবাবুর গায়ে সিপিএমের স্থানীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গন্ধ না থাকাটা তাঁর কাছে প্লাসপয়েন্ট বলেই মনে করছেন বসে যাওয়া সিপিএমের বহু কর্মীই। বিশেষ করে এলাকার বিতর্কিত নেতা খোকন ঘোষ দস্তিদারের ছায়া থেকে এই প্রথম বেরিয়ে এসে লড়াই করতে নামছে সিপিএম। দ্বন্দ্ব ভুলে এলাকার সিপিএম নেতারা এক হয়ে ভোটে নামায় চাপে রয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী।

পুকুর ভরাট, বেআইনি বহুতল নির্মাণ, খাস জমি দখল হয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সুনীল মজুমদারকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাতে তাঁদের ভোট বাড়বে ধারণা বিজেপি-র। সেই ভরসাতেই ওয়ার্ডটি ফের দখলে রাখার আশা দেখছে সিপিএম। তবে বাপ্পার দাবি, ‘‘তৃণমূল বোর্ডের উন্নয়ন দেখেই ১০১ ওয়ার্ড তৃণমূলের হাতে আসবে।’’

সংযোজিত এলাকার হাতে গোনা যে কয়েকটি ওয়ার্ডে উন্নয়ন হয়েছে তার অন্যতম ১০৭। মূলত গত ৩-৪ বছরেই সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করেন এলাকারই বিশিষ্টজনেরা। অভিনেত্রী মমতাশঙ্করের কথায়, ‘‘বেশ ভাল কাজ হয়েছে। কোনও অভিযোগ নেই আমার।’’ ১২ নম্বর বরোর একমাত্র এই ওয়ার্ডেই কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক নেই। এ বারও তৃণমূলের প্রার্থী বিদায়ী পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত (স্বরূপ) ঘোষ। গত লোকসভা ভোটেও তৃণমূলই এখানে এগিয়েছিল। বোসপুকুর থেকে রুবি কানেক্টরের দিকে দুপাশ জুড়েই এই ওয়ার্ড। বছর কয়েক আগেও রাস্তার পাশে ফুটপাথ ঘিরে ছিল হকারের দল। এখন ফুটপাথ প্রায় সাফ। চলাচলের কোনও অসুবিধা নেই। স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘পুর প্রতিনিধি চাইলে এলাকা থেকে থেকে যে হকার সরানো যায়, এই অঞ্চল তার প্রমাণ।’’ সারা শহরে এমন উদ্যোগ হয় না কেন – প্রশ্ন তাঁর। হকারদের কি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে? সুশান্ত জানান, উচ্ছেদ তৃণমূলের নীতি নয়। ওঁদের বুঝিয়ে অন্যত্র জায়গা দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে এই ওয়ার্ডে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। শ’তিনেক বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত দু’বছরে সেই চিত্রটা বদলেছে। মূলত খালের জলে বোট চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, জানান সুশান্ত। সাজানো হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকা খালপাড়ও। নিজেকে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাবলেও এলাকার পুর পরিষেবা নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ করেন নি বিজেপি প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। একটাই বক্তব্য, ‘‘রাজ্য জুড়ে ওঁদের পরিবর্তন থেকে এ বার পরিত্রাণ চাইছে মানুষ।’’ গত লোকসভা ভোটে সিপিএম দ্বিতীয় স্থানে ছিল এখানে। এ বার তাঁদের প্রার্থী ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। হারানো আসন ফিরে পেতে মাটি কামড়ে রয়েছেন।

কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর বামেদের তালুক ছিল একসময়। গত বার তা ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। তবে বিদায়ী কাউন্সিলর তৃণমূলের পার্থ রায়চৌধুরীকে এ বার মনোনয়ন দেয়নি দল। কেন? তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, জবরদখল ও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। দক্ষ হাতে তা রোখা দরকার। উনি শারীরিক ভাবে সুস্থ নন বলেই পরিবর্তন করা হয়েছে।’’ এ বার তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন ফুটবলার শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ময়দানে কতটা সাবলীল? বললেন, ‘‘সবে তো পা দিলাম। ধীরে ধীরে রপ্ত করে ফেলব।’’ এই ওয়ার্ডের বেশির ভাগটাই গ্রাম। বাম প্রার্থী সুব্রত দাশগুপ্ত গত পুরভোটে ১৮৮ ভোটে হেরেছিলেন। বললেন, ‘‘সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করছে তৃণমূল।’’ তবুও জেতার আশায় তিনি। বিজেপির মণ্টু পাত্র বলেন, ‘‘‘তৃণমূলের মোহ কেটেছে মানুষের।’’

১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের এ বারের নতুন তৃণমূল প্রার্থী মধুমিতা চক্রবর্তী। বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিলর দীপু দাস ঠাকুরের পরিবর্তে তাঁকেই প্রার্থী করেছে দল। প্রার্থী বদল নিয়ে দীপু দাস ঠাকুর জানান, অসুস্থতার কারণেই ভোটে আর দাঁড়াতে চাননি। তৃণমূলের বরো চেয়ারম্যানের ওয়ার্ড হলেও পানীয় জলের সমস্যা রয়েই গিয়েছে। পুর পরিষেবায় পাওয়া-না পাওয়া নিয়েই চলছে তরজা। মধুমিতা বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। কাজ অনেক হয়েছে। তার জোরেই এ বারও আমরা জিতব।’’ জেতার আশা দেখছেন বিজেপি প্রার্থী তমালি রায়ও। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি সিপিএমের রিঙ্কু নস্কর এ বারও প্রার্থী। যাদবপুরের এই ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা রয়েই গিয়েছে। এ নিয়ে রিঙ্কুর বক্তব্য, ‘‘জল নিয়ে এখানে চলেছে রাজনৈতিক চক্রান্ত। ধাপা জলপ্রকল্প হওয়ার পরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল জল দেওয়া হবে। তা আসেনি।’’ মানতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী রাহুল চক্রবর্তী। বলেন, ‘‘বাম আমলেই জলের সমস্যা মেটানো যেত। ওঁরা করেননি।’’

পুরসভার ১০৫ ওয়ার্ডেও জলের সমস্যা প্রধান। তা জানিয়ে গাঙ্গুলিপুকুর এলাকার এক বাসিন্দা মন্টু জানা বলেন, ‘‘অন্যান্য পরিষেবা কিছুটা ভাল হয়েছে।’’ তৃণমূল প্রার্থী স্থানীয় কাউন্সিলর তরুণ মণ্ডল। কাউকেই প্রতিপক্ষ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার ৭৫ ভাগ মানুষকে জল সরবরাহ করা হয়েছে।’’ লোকসভায় ২ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। প্রার্থী কুন্তল মজুমদার সেই রেশ ধরেই ভোটারের মন জয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE