Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্রার্থীদের কপালে ভাঁজ ফেলছে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ গরম, বুথমুখী হবে কি জনতা?

সোমবার রাতের কালবৈশাখীর কল্যাণে মঙ্গলবার তাপমাত্রা কিছুটা কম। এমনকি, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি নেমে গিয়েছে এ দিন।

আড়াল: রোদ ঠেকাতে ভরসা আঁচল। মঙ্গলবার, হরিদেবপুরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

আড়াল: রোদ ঠেকাতে ভরসা আঁচল। মঙ্গলবার, হরিদেবপুরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দেবাশিস ঘড়াই
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

গরমই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী! বলছেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের অনেকে। গরম অগ্রাহ্য করে ভোট-জনতা বুথমুখী হবে কি না, আপাতত সেটাই রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশকে চিন্তায় রাখছে।

সোমবার রাতের কালবৈশাখীর কল্যাণে মঙ্গলবার তাপমাত্রা কিছুটা কম। এমনকি, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি নেমে গিয়েছে এ দিন। কিন্তু রবিবার, ভোটের দিনও এমন আবহাওয়া থাকবে কি না, তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, গত সপ্তাহের দহনজ্বালার রেশ এখনও কাটাতে পারেনি শহর। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ স্বস্তি সাময়িক। তবে রবিবার ভোটের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, এখনই তা নিয়ে বলতে নারাজ দফতর।

গত ১৫ বছরের তথ্য বলছে, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে শহরের তাপমাত্রা গড়ে সাড়ে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। ২০০৪ সালে শহরে লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল ১০ মে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, সে দিন শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পরের বার, অর্থাৎ ২০০৯ সালে শহরে লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল ১৩ মে। সে দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত বার অর্থাৎ ২০১৪ সালে শহরে লোকসভা নির্বাচনের দিন, ১২ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ওই সব ক’টা বছরেই মে মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছিল।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, মে মাসে দহনজ্বালাটা স্বাভাবিক। কারণ, গ্রীষ্মের চূড়ান্ত সময় এটাই। কালবৈশাখী সাময়িক স্বস্তি আনলেও সেটা স্থায়ী নয়। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘কালবৈশাখীর পরের দিন তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখী হলেও তার পরে তা চড়চড় করে বাড়তে থাকে।’’ এ দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যেমন ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা এক ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা তিন ডিগ্রি কম।

এমনিতে চলতি মাসে এখনও পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। এ দিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল গত ৬ মে, সে দিন তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘেমে-নেয়ে একশা হতে হয়েছিল বঙ্গবাসীকে। কারণ, আবহবিদদের একাংশের বক্তব্য ছিল, বায়ুপ্রবাহের স্বাভাবিক ছন্দ ফণী-তাণ্ডবে ভেঙে গিয়েছিল। ফলে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছিল শহরের। সে প্রভাব কেটে যাওয়ায় ফের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরতে শুরু করেছে বায়ুপ্রবাহ। যদিও তাতে গরমের হাত থেকে স্বস্তি নেই বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদদের একাংশ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘রবিবার কী অবস্থা থাকবে, সেটা পরে বলা যাবে।’’

কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলছেন, ‘‘অন্য কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীকে দেখতে পাচ্ছি না তো! গরমই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটদানের ক্ষেত্রে গরম একটা ফ্যাক্টর হতে পারে।’’ যদিও যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘গরমে কোনও প্রভাব পড়বে কি পড়বে না, সেটা কিন্তু নির্ভর করে পুরোপুরি ভোটারের ইচ্ছের উপরে!’’ কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু আবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসের উপরে নজর রাখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বৃষ্টি হতে পারে শুনছি। বেশি গরম তো সমস্যা তৈরি করতেই পারে।’’

ফলে ভোটের পারদ চড়ুক। কিন্তু তাপমাত্রার পারদ যেন না বাড়ে, সেটাই প্রত্যাশা ভোট-জনতা থেকে শুরু করে প্রার্থীদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE