Advertisement
E-Paper

ত্রিফলার অভিমুখ নিজের দিকে টেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

শহরের সৌন্দর্যায়নে ত্রিফলা আলো বসানো ঘিরে বারবারই নানা অভিযোগ উঠেছে। পুর-অধিবেশনে বিরোধীদের উত্তপ্ত আক্রমণ থেকে অডিটের প্রশ্ন, ২৭ কোটি টাকার গরমিল, টেন্ডার নিয়ে বিতর্ক, সব কিছু মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ত্রিফলা কেলেঙ্কারি’। বর্তমান পুরবোর্ডের আমলে যা সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২১

শহরের সৌন্দর্যায়নে ত্রিফলা আলো বসানো ঘিরে বারবারই নানা অভিযোগ উঠেছে। পুর-অধিবেশনে বিরোধীদের উত্তপ্ত আক্রমণ থেকে অডিটের প্রশ্ন, ২৭ কোটি টাকার গরমিল, টেন্ডার নিয়ে বিতর্ক, সব কিছু মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ত্রিফলা কেলেঙ্কারি’। বর্তমান পুরবোর্ডের আমলে যা সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে। পুর-নির্বাচনের মুখে তা নস্যাৎ করতে গিয়ে বিষয়টি নিজের দিকে টেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ব্যাখ্যা দিলেন শহরের বাড়ি, পার্ক, রেলিংয়ে নীল-সাদা রঙেরও। এবং বললেন যা যা হয়েছে, সবই তাঁরই নির্দেশে।

সোমবার ভবানীপুর ও বেহালায় নির্বাচনী প্রচারে যান মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিফলা কেলেঙ্কারিতে সবচেয়ে বেশি বিদ্ধ হয়েছেন বিদায়ী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ দিন তাঁরই খাসতালুক বেহালায় গিয়ে ত্রিফলা প্রসঙ্গ টেনে আনেন মমতা। বলেন, ‘‘আমিই বলেছিলাম, ত্রিফলা লাগানোর কাজ কোনও একটা সংস্থাকে না দিতে। অনেকগুলো সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে বলেছিলাম। কারণ একটা সংস্থাকে দিলে তারা অনেক সময় নেবে। আর পাঁচটা সংস্থাকে দিলে কাজটা তাড়াতাড়ি হবে।’’

আকাশের রঙে শহরকে সাজাতে তিনিই বাড়িতে নীল সাদা রং করার এই পরিকল্পনা করেছিলেন বলে এ দিন জানান মমতা। ‘গোলাপি শহর’ জয়পুরে বেশ কয়েকটি গোলাপি রঙের বাড়ি দেখে এই ভাবনা মাথায় এসেছিল তাঁর। এর পরেই দলের সব কাউন্সিলরকে ডেকে শহরকে নীল-সাদায় সাজানোর এই পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আকাশী রং চোখের পক্ষে আরামদায়ক। সাদা পবিত্র রং। বাসস্ট্যান্ড, পার্ক, রাস্তার ডিভাইডারগুলো সব নীল-সাদা করা হয়েছে, কী সুন্দর লাগে! কিন্তু কারও তা চোখে পড়ছে না! কেউ বলেছে এটা নাকি আর্জেন্তিনা, আমেরিকার রং।’’ বাম আমলে ধর্মতলায় শহিদ মিনারের মাথায় লাল রং করা নিয়েও সমালোচনা করেন মমতা।

নিজেরই ভাবনা বাস্তবায়িত করে দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোডে তৎকালীন সাংসদ হিসেবে প্রথম ত্রিফলা আলো লাগিয়েছিলেন মমতা। কলকাতার পরে শিলিগুড়ি, বর্ধমান, রাজারহাটও সেজেছে ত্রিফলায়। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাল লাগছে না, বলুন?’’

এ বারও তৃণমূলের মেয়র পদপ্রার্থী তথা কলকাতার বিদায়ী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘কাজপাগল’ বলে শোভনকে তকমাও দেন। কাজের অবসরে দু’এক দিনের জন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসার পরামর্শ যে তিনি তাঁর আস্থাভাজনকে মাঝেমধ্যেই দেন, সে কথাও এ দিন সভায় জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সঙ্গে প্রাক্তন বাম মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্যের নামোল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘‘আগেকার মেয়রবাবু হাওয়া খেয়ে ঘুরে বেড়াতেন। আর রাজ্য সরকার নাকে তেল দিয়ে ঘুমোতো।’’

তৃণমূল জমানায় কলকাতা অনেক ঝকঝকে হয়েছে বলে দাবি করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘রাস্তায় জঞ্জাল এখন আর জমে না। বর্ষায় জলও জমে না।’’ বছরের বাকি সময়ের মতোই উৎসবের দিনেও তিনি সরেজমিনে শহরের উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন বলে দাবি করেছেন মমতা। কোথাও কোনও খুঁত দেখলে বা উন্নয়নের সুযোগ থাকলে তৎক্ষণাৎ কাউন্সিলরদের ডেকে তা বলে দেন। শহরের কোথায়, কেমন রং করা দরকার— তা মেয়রের পাশাপাশি মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকেও তিনি জানিয়ে দেন বলে এ দিন বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ভবানীপুরের সভায় স্থানীয় সাংসদ সুব্রত বক্সী এবং বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও মমতার পরিকল্পনা এবং লক্ষ্যেরও উল্লেখ করেন। এই পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়ে মমতা চলেন বলেই কলকাতার সৌন্দর্যবৃদ্ধি হচ্ছে বলে তাঁদের অভিমত।

tri stand light scam Mamata Bandopadhyay Municipal election Kolkata Trinamool Tmc Sovan Chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy