Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪

ডার্বি দেখে ফেরার পথে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু যুবকের

ভোরে ফোন আসতেই বারবার ভাইপোকে সতর্ক করেছিলেন কাকা। যেন কোনও মতেই চলন্ত ট্রেন থেকে না নামে। এর কিছুক্ষণ পরে বাড়ির কাছের স্টেশন আসতেই আর শিয়ালদহ যেতে মন চায়নি।

সৌম্য মুখোপাধ্যায়

সৌম্য মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪২
Share: Save:

ভোরে ফোন আসতেই বারবার ভাইপোকে সতর্ক করেছিলেন কাকা। যেন কোনও মতেই চলন্ত ট্রেন থেকে না নামে। এর কিছুক্ষণ পরে বাড়ির কাছের স্টেশন আসতেই আর শিয়ালদহ যেতে মন চায়নি। আর তাই চলন্ত ট্রেন থেকেই প্ল্যাটফর্মে নামার চেষ্টা করেছিলেন চার বন্ধু। একে একে তিন জন ঠিক মতো নেমে গেলেও শেষ জন পারলেন না। ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে পা দিতেই সব্জির বস্তায় হোঁচট খেয়ে ছিটকে পড়লেন সেই ভাইপো। ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের ফাঁকে ঢুকে যায় ওই যুবকের শরীরের নীচের অংশ। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।

শিলিগুড়িতে ডার্বি দেখে ফেরার পথে সোমবার সকালে এ ভাবেই মৃত্যু হল আড়িয়াদহের ডিডি মণ্ডলঘাট রোডের বাসিন্দা সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের (২২)। তিনি সল্টলেকের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বি-টেকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে শিয়ালদহ-ডানকুনি শাখার বরাহনগর রোড স্টেশনে।

ওই যুবকের পরিবার সূত্রের খবর, খেলাপাগল সৌম্য তাঁর তিন বন্ধু-রাহুল রায়, অয়ন মাইতি ও আকাশ হালদারের সঙ্গে শনিবার রাতের ট্রেনে শিলিগুড়ি গিয়েছিলেন। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে রবিবার রাতেই পদাতিক এক্সপ্রেস ধরে ফিরছিলেন বাড়িতে। কিছু দূরপাল্লার ট্রেন দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে দাঁড়ালে‌ও পদাতিক এবং অন্য সুপারফাস্ট ট্রেন ওই স্টেশনে দাঁড়ায় না। সৌম্যর বন্ধুরা জানান, শিয়ালদহ গিয়ে নামলে অনেক দেরি হয়ে যাবে ভেবেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বরাহনগরে ট্রেনের গতি আস্তে হলেই নেমে পড়বেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি খুব আস্তেই বরাহনগর রোড স্টেশন থেকে বেরোচ্ছিল। রাহুল, অয়ন, আকাশ তিন জনে ব্যাগ নিয়ে নেমে পড়েন। শেষে নামছিলেন সৌম্য। ট্রেন থেকে নামতে গিয়েই তিনি প্ল্যাটফর্মে থাকা সব্জির ঝুড়িতে হোঁচট খেয়ে ছিটকে গিয়ে ট্রেনের ফাঁকে ঢুকে যান। এই ভাবেই বেশ কিছু দূর ছেঁচড়ে যান ওই যুবক। আরপিএফ কর্মীরা তাঁকে প্রথমে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আরজিকরে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকেরা জানান, পা, কোমর, বুকের পাঁজরে চোট লেগেছিল ওই যুবকের। কোমরের হাড় ভাঙার পাশাপাশি কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ দিন সন্ধ্যায় বেলুড় জিআরপিতে এসে সৌম্যর কাকা মানস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোরে বর্ধমান পৌঁছেই আমায় ফোন করেছিল। বারবার বললাম শিয়ালদহে নামবি। চলন্ত ট্রেন থেকে নামিস না। কেন যে শুনল না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Derby match Train accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE