Advertisement
E-Paper

দায়িত্বে কলকাতা মেট্রো, চিন্তা ইস্ট-ওয়েস্ট নিয়েও 

কলকাতার পুরনো মেট্রোর তো বেহাল দশা। কয়েক মাসের মধ্যে নতুন যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হতে চলেছে, তার সুরক্ষা ব্যবস্থা কী হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০৬
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।

কলকাতার পুরনো মেট্রোর তো বেহাল দশা। কয়েক মাসের মধ্যে নতুন যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হতে চলেছে, তার সুরক্ষা ব্যবস্থা কী হবে। সেই মেট্রোর নির্মাতাদের দাবি, আগুনের বিপদ ঠেকাতে সুড়ঙ্গ ও কামরায় দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বিপদের সময় আদৌ কি তা কাজে আসবে?

প্রশ্নটা উঠছে, কারণ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালানোর দায়িত্ব বর্তাবে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপরেই। নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, ২৭ কিলোমিটার পথে ট্রেন চালাতেই যাঁরা হিমসিম খান, যাত্রিসুরক্ষার তোয়াক্কা করেন না, তাঁরা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বাড়তি দায়িত্ব পেলে কী করবেন?

এ সব প্রশ্ন যে সঙ্গত, তা মেনে নিচ্ছেন মেট্রোর প্রবীণ কর্তাদের অনেকেই। রেল সূত্রের খবর, তাদের ১৭টি জোনের মধ্যে সব থেকে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে কলকাতা মেট্রোয় এবং রেল বোর্ডকে সেই খবর যথাযথ ভাবে জানানো হয় না।

তবে রেল কর্তাদের অনেকে এ-ও বলছেন যে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে যে সুরক্ষা-কবচ থাকছে, তাতে কর্তা এবং কর্মীরা যদি তৎপর হন, তা হলে দুর্ঘটনা ঘটলেও যাত্রিসুরক্ষায় কোনও প্রভাব পড়বে না। আগুন লাগলে তড়িঘড়ি নেভানো যাবে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাতা সংস্থা, কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) সূত্রের খবর, আগামী মার্চে, সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়ার কথা। তার আগেই ওই অংশে সব রকম সুরক্ষা বিধি তৈরি হয়ে যাবে।

কেমন সে সুরক্ষা বিধি?

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, কামরার বাতানুকূল যন্ত্রে বিশেষ ‘স্মোক-ডিটেক্টর'’ বসানো থাকছে। কোনও কারণে ধোঁয়া বেরোলেই ওই যন্ত্রের নির্দেশে বাতানুকূল কোচে হাওয়ার প্রবেশ সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া যাবে। তার ফলে কামরার মধ্যে ধোঁয়া ছড়িয়ে যাত্রীদের শ্বাসকষ্ট হবে না। কয়েক মিনিটের মধ্যে পরবর্তী স্টেশনে পৌঁছে যাত্রীদের নিরাপদে বের করে দিতে পারবেন চালক। ধোঁয়া এবং আগুন যাতে না-ছড়ায় তার জন্য সুড়ঙ্গে হাওয়ার তীব্রতা ও গতিপথ বদলের বিশেষ যন্ত্র থাকবে।

এ ছাড়া, প্রত্যেক কামরায় চারটি করে সিসি ক্যামেরা থাকবে। তার ছবি চালক ছাড়াও সল্টলেকের ‘অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার’ (ওসিসি) দেখতে পাবে। এক কর্তা বলেন, ‘‘কামরার ভিতরে কোনও অপরাধ ঘটলে বা কোনও যাত্রী অসুস্থ হলে চালকের পাশাপাশি কন্ট্রোল রুমে থাকা কর্মীরাও সেই ছবি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। ট্রেন চালানোর সময় চালক ওই স্ক্রিনে সব সময় মনঃসংযোগ করতে পারবেন না। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ তিনি জানান, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ঘোষণা করে যাত্রীদের শান্ত রাখার কাজও করবে কন্ট্রোল রুম।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এক কর্তা আরও জানান, বর্তমানে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চালকের বা গার্ডের কেবিন দিয়ে যাত্রীদের বের করা হয়। তাতে অনেক সময় লাগে, বিপদের ঝুঁকিও বাড়ে। কিন্তু বিদ্যুৎহীন পরিস্থিতিতেও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কামরার দরজা খোলা যাবে। ফলে অনেক তাড়াতা়ড়ি যাত্রীরা কামরার বাইরে বেরোতে পারবেন। দরজার গা ঘেঁষেই পাদানির উচ্চতায় হেঁটে নিকটতম স্টেশনে পৌঁছনোর পথও থাকবে সুড়ঙ্গে। থার্ড রেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজও করা যাবে নিকটতম স্টেশন থেকেই। ১১ কিলোমিটার সুড়ঙ্গ পথের আপ ও ডাউন লাইন ভিন্ন সুড়ঙ্গ দিয়ে যাবে। গড়ে ২৫০ মিটার অন্তর দু’টি সুড়ঙ্গের স‌ংযোগকারী বিশেষ পথ থাকবে। ফলে কোনও সুড়ঙ্গে আগুন লাগলে ওই পথ দিয়ে যাত্রীদের অন্য সুড়ঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

সবই তো হবে, কিন্তু কলকাতা মেট্রো এ সব সামলাতে পারবে তো?

মেট্রোর মুখপাত্র ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উপযুক্ত কর্মী আমরা তৈরি করে নেব।’’

East West Metro Kolkata Metro Security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy