Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Online Classes

Online Classes: পড়ানোর ভিডিয়ো আপলোডে জোর, বিপাকে স্মার্টফোন না-থাকা পড়ুয়ারা

রাজ্যে বহু ছেলেমেয়ের বাড়িতেই স্মার্টফোন নেই। তাই তারা কী ভাবে ওই ভিডিয়ো দেখে পড়াশোনা করবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৫
Share: Save:

বাংলা শিক্ষা পোর্টালে শিক্ষকদের পড়ানোর ভিডিয়ো আপলোড করার উপরে জোর দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন বিভিন্ন জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিকেরা। ওই পোর্টালে ইতিমধ্যেই শিক্ষকদের পড়ানোর বেশ কিছু ভিডিয়ো আপলোড করা রয়েছে। কলকাতা জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগেও নিয়মিত ভিডিয়ো আপলোড করা হচ্ছে। সেই সমস্ত ভিডিয়োর সাহায্যে পড়াশোনা করছে পড়ুয়ারা। সম্প্রতি শিক্ষকদের আরও বেশি করে এই ধরনের ভিডিয়ো আপলোড করতে বলেছেন জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়োগুলি তোলার পরে জেলা সর্বশিক্ষা মিশনে পাঠাতে হয়। সেখান থেকে সেই ভিডিয়ো যায় সর্বশিক্ষা মিশনের সদর দফতরে। সেখানে প্রতিটি ভিডিয়োর গুণমান বিচার করার পরেই তা বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড করা হয়। প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষকদেরই এই ধরনের ভিডিয়ো তুলতে বলা হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা স্তরের আধিকারিকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, একমাত্র ইচ্ছুক শিক্ষকদেরই ভিডিয়ো পাঠাতে বলা হচ্ছে।

শিক্ষকদের একাংশ ভিডিয়ো তুলে তা আপলোড করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, রাজ্যে বহু ছেলেমেয়ের বাড়িতেই স্মার্টফোন নেই। তাই তারা কী ভাবে ওই ভিডিয়ো দেখে পড়াশোনা করবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

যেমন কসবার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র রণজিৎ মণ্ডল জানাল, তার বাড়িতে সাধারণ ফোন থাকলেও স্মার্টফোন নেই। ফলে বাংলা শিক্ষা পোর্টালে শিক্ষকেরা নানা বিষয়ের উপরে যে সমস্ত ভিডিয়ো আপলোড করছেন, তা দেখার কোনও উপায় নেই তার। ফলে, স্কুল থেকে দেওয়া অ্যাক্টিভিটি টাস্ক-ই আপাতত ভরসা তার। শ্যামবাজারের পার্ক ইনস্টিটিউশনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রুদ্র পালের কথায়, “বাড়িতে একটা স্মার্টফোন ছিল। কিন্তু খারাপ হয়ে গিয়েছে। করোনার মধ্যে বাবার চাকরি নিয়ে সমস্যা হওয়ায় সেই স্মার্টফোন আর সারানো হয়নি। তাই স্যরদের আপলোড করা ভিডিয়ো দেখতে পাই না। ভরসা এখন অ্যাক্টিভিটি টাস্ক। কখনও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের স্মার্টফোনে স্যরদের পড়ানোর ভিডিয়ো দেখি। কিন্তু করোনার মধ্যে তো বন্ধুদের বাড়ি যাওয়াও বারণ। কী ভাবে দেখব ভিডিয়ো?”

শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই সমস্যাটা কলকাতা শহরের পড়ুয়াদের পাশাপাশি গ্রামের পড়ুয়াদেরও রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে আবার নেটওয়ার্কের সমস্যাও খুব বেশি। ‘স্কুল অব হেডমিস্ট্রেসেস অ্যান্ড হেডমাস্টার্স’-এর সম্পাদক অরুণ ভট্টাচার্যের মতে, রাজ্যের ৫০ শতাংশেরও বেশি পড়ুয়া শিক্ষকদের এই সমস্ত ভিডিয়ো দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ভিডিয়ো আপলোড করার এই উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য হলেও যারা তা দেখতে পাচ্ছে না, তাদের কথাও ভাবতে হবে। অরুণবাবু বলেন, “আমাদের প্রস্তাব হল, শিক্ষকেরা নির্ধারিত সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিটি অধ্যায়ের মূল বিষয়ের সংক্ষিপ্তসার হাতে লিখে বা প্রিন্ট নিয়ে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের সঙ্গে দিয়ে দিন। তা হলে ভীষণ উপকৃত হবে পড়ুয়ারা। সেই সঙ্গে শিক্ষকেরা যদি তাঁদের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরও দিয়ে দেন, তা হলে পড়ুয়ারা কোথাও কোনও সংশয় দেখা দিলে ফোন করে তা জিজ্ঞাসা করে নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে স্মার্টফোন না-থাকলেও অসুবিধা হবে না।”

‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বললেন, “ভিডিয়ো আপলোড করার বিকল্প কোনও পদ্ধতির কথাও ভাবতে হবে। টিভির মাধ্যমে পড়ানোয় জোর দিলে ভাল হয়। রেডিয়োকেও মাধ্যম হিসেবে ভাবা যেতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE