Advertisement
E-Paper

চারপাশটা বদলালেও আছে কিছু সম্পর্ক

যার নেই পুঁজিপাঠা, সে যায় বেলেঘাটা! অতীতে প্রচলিত এমন একটা কথা শুনে বেজায় রাগ হতো। এক কালে ছবি যাই থাক, আজকের বেলেঘাটা যে কোনও উন্নত অঞ্চলের সঙ্গে তুলনীয়। সেখানেই আমার পাড়া রাধামাধব দত্ত গার্ডেন লেন।

হিমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০০:২১
মশগুল: গলির রাস্তায় জমাটি আসর। ছবি: শৌভিক দে

মশগুল: গলির রাস্তায় জমাটি আসর। ছবি: শৌভিক দে

যার নেই পুঁজিপাঠা, সে যায় বেলেঘাটা! অতীতে প্রচলিত এমন একটা কথা শুনে বেজায় রাগ হতো। এক কালে ছবি যাই থাক, আজকের বেলেঘাটা যে কোনও উন্নত অঞ্চলের সঙ্গে তুলনীয়। সেখানেই আমার পাড়া রাধামাধব দত্ত গার্ডেন লেন।

পাড়া মানে জীবনের নেপথ্যে থাকা চরিত্র। বেড়ে ওঠা, খেলাধুলোয় হাতে খড়ি, স্কুল-কলেজের গণ্ডি অতিক্রম করে জীবনের উত্তরণের পথে পা বাড়ানো— এমন অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে পাড়া।

নস্করবাড়ি ও জোড়া মন্দিরের পাশ থেকে শুরু করে সুরেন সরকার রোড পেরিয়ে বাইপাসের ধারে সার্ভিস রোডে মিশেছে এ পাড়া। রামমোহন মল্লিক গার্ডেন লেন যমজ রাস্তা।

পাখির ডাকে ভোর হয়। কাছেই সুভাষ সরোবর। চলছে তার সংস্কার ও সৌন্দর্যায়ন। অন্য দিকে স্টেডিয়াম। এলাকার স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের প্রাতর্ভ্রমণের ঠিকানা এই দু’টি।

কিছু কিছু বাড়ি ভেঙে তৈরি হচ্ছে বহুতল। পাড়ায় নতুন যাঁরা আসছেন তাঁরা হয় অবাঙালি, না হলে উচ্চবিত্ত বাঙালি। তবু হারায়নি সুসম্পর্ক। তবে বিশেষ কোনও অনুষ্ঠানেই দেখা হয় পাড়ার সকলের সঙ্গে।

আগে বর্ষায় জল জমলেও এখন আর জমে না। তবে এখনও মশার উপদ্রব খুব বেশি।

খেলার উপযুক্ত জায়গা থাকলেও কমেছে খেলাধুলোর ছবি। অবশ্য শীতকালে মাঝেমাঝে চোখে পড়ে আলো জ্বালিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলা ও ক্ষণিকের ক্রিকেট ম্যাচ। আগে আড্ডা বসতো তিন রাস্তার মোড়ে জোড়া মন্দিরে সামনে। সেই আকর্ষণ এখন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

বৃহত্তর পাড়ার মধ্যে একটা পাড়া আমাদের আবাসন। দোল-দুর্গোৎসব থেকে অন্যান্য পুজো-পার্বণ প্রবল উৎসাহে পালিত হয়। আবাসিকদের সঙ্গে পিকনিক এবং বেড়াতে যাওয়া হয় মাঝেমধ্যেই। আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে একটা ওয়্যাটস্‌অ্যাপ গ্রুপ। পাড়া এবং আবাসনের উন্নতি বিষয়ে মাঝেমধ্যেই চলে বার্তার আদানপ্রদান।

পাড়া থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে পার্সিদের টাওয়ার অব সাইলেন্স। ঔপনিবেশিক স্থাপত্য নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে নস্করবাড়ি এবং সরকারবাড়ি । নস্করবাড়ির সুসজ্জিত বাগান আর বাড়ির চেহারা এখনও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এক সময়ে এখানেই ছিল দামি পাখির সংগ্রহ। পাশেই জোড়ামন্দির।

বদলাচ্ছে বেলেঘাটা অঞ্চলে আর্থসামাজিক চিত্র। আগে এলাকাটা ছিল শিল্প নির্ভর। ঘরে ঘরে ছোট কারখানা ছিল। বাইপাস তৈরির আগে অঞ্চলটা কিছুটা অনুন্নত ছিল। আজ যেখানে বাইপাস, সেখানে ছিল একটি খাল। যা বিদ্যাধরী নদীতে মিশতো। ছোটবেলায় দেখেছি নৌকা যাতায়াত করতে। ও ধারে ছিল ধানখেত। বাইপাসে মোড়ের মাথায় একটি কারখানার ঝিনুক পুড়িয়ে চুন হত। সেই গন্ধে ভারী হয়ে যেত বাতাস। কোথায় যেন হারিয়ে গেল এ সব। ঠাঁই পেল গল্প কথায়!

লেখক চিকিৎসক

Memories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy