কলকাতা মেট্রো। —ফাইল চিত্র।
শাসক দলের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কার্যত অচল রইল শহর। বিকেলের দিকে বাস এবং যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পথে বেরোনো মানুষকে দিনভর হয়রান হতে হয়েছে। তবে, গণপরিবহণে ভিড় অন্য বছরের তুলনায় কম ছিল বলেই খবর।
কলকাতা এবং লাগোয়া শহরতলির বিভিন্ন রুট থেকে অসংখ্য বাস তুলে নেওয়ার অভিযোগ গত দু’দিন ধরে শোনা যাচ্ছিল। অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হল সকাল হতেই। রাস্তা থেকে বেসরকারি বাস উধাও হয়ে যায়। জেলা থেকে আসা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাস রাখার জন্য প্রশাসনের তরফে বিশেষ ব্যবস্থা করা হলেও যানজট এড়ানো যায়নি। তবে, সমাবেশ শেষ হতেই দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
ভিড় ও হয়রানির আশঙ্কায় বেশির ভাগ নিত্যযাত্রী এ দিন বেরোনোর ঝুঁকি নেননি। অনেকেই ছুটির মেজাজে দিন কাটিয়েছেন। ফলে বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে সমাবেশে আগত কর্মী-সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে, সকালের দিকে হাওড়া, শালিমার ও সাঁতরাগাছি স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের কলকাতা-সহ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। হাওড়া স্টেশন থেকে বাস, প্রিপেড ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাব— কিছুই প্রায় চলেনি বলে অভিযোগ।
উত্তরে ডানলপ থেকে দক্ষিণে গড়িয়া ও পশ্চিমে বেহালা থেকে পূর্বে উল্টোডাঙা, শিয়ালদহ, সিআইটি রোড পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় সব বাসের রুট কার্যত বন্ধ ছিল। ওই সময়ে হেঁটে বা ট্যাক্সিতে চড়া ভাড়া দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। সকালে শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় হলেও বেলা বাড়তেই তা কমতে থাকে।
সকালের দিকে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় কবি সুভাষ, দমদম, দক্ষিণেশ্বরে কিছুটা ভিড় চোখে পড়ে। এসপ্লানেড, পার্ক স্ট্রিট, ময়দান চত্বরের স্টেশনগুলিতে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভিড় প্রায় উপচে পড়ছিল। তবে ওই ভিড় অন্য বারের তুলনায় কম বলে জানাচ্ছেন মেট্রোর আধিকারিকদের একটা অংশ। এ দিন দুপুর ৩টে পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোয় প্রায় ৩ লক্ষ ৪ হাজার যাত্রী সফর করেন। যা সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় ২৩ হাজার বেশি। মেট্রো সূত্রের খবর, সমাবেশের কারণে বাইরে থেকে আগত যাত্রীদের সংখ্যা খানিকটা বাড়লেও এ দিন মেট্রোর নিত্যযাত্রীরা তুলনায় কম সফর করেছেন। সমাবেশের শেষে সন্ধ্যার দিকে মেট্রোয় কিছুটা ভিড় চোখে পড়েছে।
এ দিকে, সিগন্যাল বিভ্রাটের কারণে সকালে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলতে দেরি হয়েছে। সেন্ট্রাল পার্ক ডিপো থেকে মেট্রো বেরোনোর লাইনে পয়েন্ট এবং সিগন্যালের সমস্যা দেখা দেয় বলে সূত্রের খবর। পরে নির্দিষ্ট পয়েন্টে ক্ল্যাম্প আটকে সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এ বারেও জেলা থেকে আসা শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের একটা অংশকে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের শিবিরে রাখা হয়েছিল। তাঁরা ছাড়াও সেক্টর ফাইভগামী নিত্যযাত্রীদের আনাগোনায় মেট্রোর ভিড় বাড়ে। সেই ভিড় এ বার তুলনায় কম ছিল বলে জানাচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ফেরিঘাটে ভিড় হয়েছে এ দিন। তবে তা-ও অন্য বছরের তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন পরিবহণকর্মীরা।
এ দিন অভিযোগ উঠেছে, সমাবেশস্থলে পৌঁছেই অনেকে ফিরতে শুরু করেন। কলকাতা সংলগ্ন এলাকা থেকে আসা বাস এবং ছোট মালবাহী গাড়িও ফিরতে শুরু করে বলে খবর। যে কারণে সমাবেশ শেষ হতেই দ্রুত শহরের রাস্তাও খালি হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy