প্রতীকী ছবি।
বোতল থেকে লেবেল — সবই আসলের মতো। শুধু বিদেশি নামী মদের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশি মদ। শহরের বহু ক্লাবে, পার্টিতে সরবরাহ হচ্ছে এই ‘মিশ্র’ মদ। কোথাও বিদেশি শিভাসের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্লেন্ডার্স প্রাইড। কোথাও ব্ল্যাক লেবেল-এর সঙ্গে রয়্যাল স্ট্যাগ। কোথাও অ্যাবসলিউটের সঙ্গে দেশি ফুয়েল। বিদেশি ওই মদও আসছে চোরা পথে। বিদেশের বিমানবন্দরের ‘ডিউটি ফ্রি শপ’ থেকে কেনা ওই বিদেশি মদ, দেশি মদের সঙ্গে মিশিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে শহরে।
অভিযোগ, বিদেশ থেকে আসার সময়ে শহরের কিছু ছোট ব্যবসায়ী নিয়মিত ডিউটি ফ্রি শপ থেকে মদ কিনে নিয়ে আসছেন। সেই মদ শহরের হাতে গোনা কয়েক জন বড় চোরাকারবারির কাছে মজুত করা হচ্ছে। কিছু মদের বোতল সিল করা থেকে যাচ্ছে। সেগুলি বিক্রি করলে বোতল প্রতি মুনাফা থাকছে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা। কিছু বোতলের সিল ভেঙে ফেলে তিন বোতল ব্ল্যাক লেবেল-এর সঙ্গে এক বা দু’বোতল পর্যন্ত রয়্যাল স্ট্যাগ মিশিয়ে পাঁচ বোতল বানানো হচ্ছে। বিদেশি মদের খালি বোতলে তা ভরে সব মিলিয়ে তিন বোতল থেকে পাঁচ বোতল ব্ল্যাক লেবেল তৈরি হয়ে যাচ্ছে। সেই বোতল ফের সিল করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বাজারে। সেখানে মুনাফার পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
আবগারি দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, কিছু ‘মিডলম্যান’ মারফত ওই মিশ্র মদ ছড়িয়ে পড়ে বাজারে। পার্টি বা ক্লাবে অনেক ক্ষেত্রে প্রথম দু’তিন পেগ আসল মদ খাইয়ে দেওয়া হয়। তার পরে যখন ক্রেতা আর আলাদা করে স্বাদ
বোঝার অবস্থায় থাকেন না তখন শুরু হয় মিশ্র মদ।
সম্প্রতি নিউ মার্কেট এবং গল্ফ গ্রিন এলাকায় হানা দিয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছেন আবগারি অফিসারেরা। বিদেশি মদের কিছু বোতলে ‘গোয়ালা’ ছিপি লাগানো থাকে। এই ছিপি থাকলে বাইরে থেকে কোনও তরল সেই বোতলে ভরা যায় না। কিন্তু, চোরাকারবারীর দল বিশেষ পদ্ধতিতে সেই ছিপিও খুলে ফেলছে। বিদেশি মদের সঙ্গে দেশি মদ মেশানোর পরে আবার গোয়ালা ছিপি লাগিয়ে সিল করে দেওয়া হচ্ছে।
আবগারি অফিসারেরা জানিয়েছেন, গল্ফ গ্রিনে রীতিমতো একটি ফ্ল্যাট কিনে সেখানে এই মদ মেশানোর কারবার চলছিল। সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কোনও ক্ষেত্রে গোয়ালা ছিপি খুলতে না পেরে সিরিঞ্জে করেও দেশি মদ ঢোকানো হচ্ছে বোতলে। সিল লাগানোর যন্ত্র, হলোগ্রাম পাওয়া গিয়েছে।
আবগারি অফিসারদের দাবি, প্রথমে যাঁরা বিদেশ থেকে সস্তায় কেনা নামী মদ শহরে বিক্রি করতেন, তাঁদেরই কেউ কেউ অধিক মুনাফার লোভে এই মিশ্র মদের কারবার ফেঁদে বসেছেন। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনও শহরে বহু জায়গায় ওই মদ সরবরাহ করা হচ্ছে। এক অফিসারের কথায়, ‘‘আবগারি দফতরের অভিযানের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy