যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন মেট্রোর জিএম। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগেই মেট্রোর সুড়ঙ্গে মিলবে মোবাইলের নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা। এ ব্যাপারে টেলিকম সংস্থাগুলির সঙ্গেও আলোচনা হয়ে গিয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। এর পাশাপাশি, মেট্রো স্টেশনগুলিতে বিনামূল্যে ইন্টারনেটের ওয়াই-ফাই পরিষেবাও মিলবে বলে জানান মেট্রোকর্তারা। বৃহস্পতিবার কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার এ কে মিত্তল জানান, রবীন্দ্র সদন ও পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে ইতিমধ্যেই এই পরিষেবা চালু হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবর ও টালিগঞ্জ স্টেশনেও চলতি মাসের শেষেই চালু হয়ে যাবে।
চাঁদনি চক স্টেশনের ভিতরে বাড়তি গরম নিয়ে দীর্ঘদিনই যাত্রীদের অসন্তোষ ছিল। তাপমাত্রা কমানোর জন্য এ দিন একটি নতুন এসি প্লান্ট চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই জিএম এ দিন ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ অগস্ট থেকে দিনে ৩০০টি মেট্রো চলবে। এখন চলে ২৭৮টি। এর জন্য টালিগঞ্জ স্টেশনে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে নতুন একটি গেট তৈরির কথাও জানান তিনি। আগামী দিনে অটোমেটিক স্মার্ট কার্ড রিচার্জ মেশিনও বসানো হবে বলে জানান মেট্রো-কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা মহানগরী। কিন্তু মহানগরীতে রাত ১০টা বাজলেই মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের অনেকেরই দাবি, অন্তত রাত ১১টা পর্যন্ত চালু থাক মেট্রো পরিষেবা। এর প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েছেন মেট্রোকর্তারাও। তাঁরা বলছেন, এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
গত বছর মোদী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে রেল টানা পনেরো দিন ‘রেল পক্ষ’ পালন করেছিল। দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে এ দিন থেকে সাত দিন ধরে ‘হামসফর সপ্তাহ’ চালু করেছে তারা। উদ্দেশ্য একই, রেলের কাজ তো বটেই, তার সঙ্গে মোদী সরকারের সামগ্রিক কাজকর্ম কেমন হয়েছে, তা-ও জাহির করা। গত বারও প্রতি জোনের জেনারেল ম্যানেজার ট্রেনে চেপে যাত্রীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন। এ বারও সেই কাজই করতে হচ্ছে জেনারেল ম্যানেজারদের। এ দিন দক্ষিণ পূর্ব ও পূর্ব রেলের তরফে হাওড়া স্টেশনে ‘হমসফর সপ্তাহ’ পালন করা হয়। স্টেশন পরিচ্ছন্ন রাখতেও উদ্যোগী হন রেল-কর্তপক্ষ।
এ দিন মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার চাঁদনি চক স্টেশনে এসে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। জানতে চান, কোথায় অসুবিধা? মেট্রোর পরিষেবা সম্পর্কে আমযাত্রীদের অভিমতও জানতে চান তিনি। জিএম-সহ শীর্ষ কর্তাদের সামনে পেয়ে নানা কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা। যেমন চাঁদনি চক স্টেশনে ডাক বিভাগের অফিসার তনুজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘পাতালপথে যাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক। পরিষেবাও ইদানীং ভাল হয়েছে।’’ আবার সিইএসসি-র কর্মী মুনমুন রায়চৌধুরী বলেছেন, এসি মেট্রোর থেকে এসি ছাড়া মেট্রোই তিনি বেশি পছন্দ করেন। ভবানীপুরের বাসিন্দা সোনালি চৌধুরী আবার মেট্রোকর্তাদের কাছে স্টেশনে শৌচাগার এবং মেট্রোয় মহিলা কামরার দাবি জানান। জিএম তাঁকে জানান, দিল্লিতে রেল বোর্ডের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
চাঁদনি চক স্টেশন থেকেই কবি সুভাষগামী মেট্রোয় চাপেন সপার্ষদ জিএম। চলতি পথেও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ভিড়ের মধ্যে নবীন প্রজন্মের যাত্রীদের সঙ্গেই বেশি করে কথা বলেন জিএম। পরিষেবা নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ মেলেনি। উল্টে সাম্প্রতিক কালে মেট্রো পরিষেবায় উন্নতি হয়েছে বলেই জানান তাঁরা। কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, মেট্রোয় ভিড় একটু কমানো গেলে ভাল হয়। কেউ বা দাবি তুলেছেন বাড়তি এসি মেট্রোর জন্য। পার্ক স্ট্রিটে রেলকর্তারা নেমে যাওয়ার পরে পিছু পিছু ছুটে এসে এক যাত্রী দাবি করেন, মেট্রো আর একটু সময়মতো চলুক এবং মেট্রোকর্মীদের একাংশের ব্যবহারও আর একটু ভাল হোক।
যাত্রীদের একাংশের ব্যবহার নিয়েও অবশ্য মেট্রোকর্তারা অসন্তুষ্ট। তাঁরা বলছেন, বহু যাত্রীই স্টেশনে ও লাইনে নির্দ্বিধায় বর্জ্য ফেলেন। পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতনতা প্রসারে এ দিন চাঁদনি চক স্টেশনে পথনাটিকারও আয়োজন করেন মেট্রোকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy