তাপমাত্রার পারদ চড়তেই ফিরে এসেছে মশকবাহিনী। কিন্তু প্রতিরোধের জন্য সে ভাবে উদ্যোগী হয়নি বিধাননগর পুরনিগম। এমনই অভিযোগ অধিকাংশ বাসিন্দার। যদিও প্রশাসনের দাবি, প্রতিটি ওয়ার্ডেই মশা তাড়ানোর জন্যে ধোঁয়া, তেল ছড়ানোর কাজ চলছে। অন্য দিকে, বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশা দমনে পুরকর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়ছে না।
মশা দমনে পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে পুরনিগম। বিশেষত কর্মীর অভাবে বেশ কিছু দফতরের কাজের গতি বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন পুর-কর্তারা। পাশাপাশি পুরনিগমের দাবি, মশা তাড়াতে সাবেক ব্যবস্থার বদল ঘটাতে হবে। সে কারণেই ভেক্টর কন্ট্রোল ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা কার্যকরী করতে গেলে
অর্থ, লোকবলের প্রয়োজন। সেই কাজ সময় সাপেক্ষ।
বাসিন্দাদের আশঙ্কা, বিধানসভা নির্বাচনের ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। দৈনন্দিন পরিষেবা ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ফলে পুরনিগমের ভেক্টর কন্ট্রোল ইউনিট বাস্তবায়ীত হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। এর মধ্যে মশার সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা পুরবাসীর।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছরই শীত শেষ হয়ে তাপমাত্রা বাড়তেই মশার প্রকোপ বাড়তে থাকে। কিন্তু প্রতিবারেই মশার প্রকোপ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করা হয়। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিধাননগর পুরনিগম। তাঁদের কথায়, দু’টি খালে জলের প্রবাহ বাড়িয়ে, জঙ্গল সাফ করে, মশার তেল ছড়িয়ে, কামান দেগে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতার প্রচারের মতো নানা কাজ করা হয়।
যদিও ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলে গিয়ে কিন্তু পুরসভার দাবির প্রমাণ মেলেনি। বেশ কয়েকটি জায়গায় খালে নোংরা জমে জলের প্রবাহ নেই বললেই চলে। সন্ধ্যার পর থেকে মশার অত্যাচারে টেকা যায় না। খাল লাগোয়া বাসিন্দাদের বক্তব্য, খাল পরিষ্কার হয় না। সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ির জানলা খুলে রাখা দায়। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যদি পুরপ্রশাসন পদক্ষেপ না
করে, ফের মশাবাহিত রোগের
প্রকোপ বাড়বে।
গত কয়েক বছরে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছে বিধাননগর পুরনিগম এলাকায়। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘দৈনন্দিন পরিষেবায় কোনও ঘাটতি হয়নি। খালপাড় লাগোয়া এলাকাতেও তা বজায় আছে।’’
তবে কামান দাগা, মশার তেল ছড়ানোর পাশাপাশি খালে আরও জল ছাড়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন পুরকর্মীরা। সে বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে কথা হবে বলে পুরনিগম সূত্রের দাবি।
পুরনিগম সূত্রে দাবি, পুরনিগমে কর্মীসংখ্যা কম, তার উপরে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় নিগমের কর্মীদের কাজে লাগানো হবে। ফলে দৈনন্দিন পরিষেবা কী ভাবে বজায় রাখা যাবে তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে প্রশাসনের একটি অংশেও।
মেয়র সব্যসাচী দত্তের দাবি, কর্মী কম বলে পরিষেবায় ঘাটতি হবে না। প্রায় পাঁচ মাস দায়িত্ব নিয়েছে বর্তমান বোর্ড। মশা তাড়াতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলি দ্রুত কার্যকর হবে।