—প্রতীকী চিত্র।
দক্ষিণ দমদমে ফের ডেঙ্গির হানা। ওই পুরসভা এলাকায় দু’মাস পরে আবার এক জনের ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। পুরকর্তাদের দাবি, দ্রুত সেই এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে দমদম এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। একাধিক বাসিন্দার মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিরোধীরা বহু বার সরব হয়েছেন অতীতে। লোকসভা ভোটের মুখে আবারও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। যদিও শাসকদলের পাল্টা দাবি, মশা নিয়ন্ত্রণে বছরভর কাজ করা হয়। পায়ের নীচে মাটি না পেয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এ হেন অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর দমদমের দু’টি পুরসভা মিলিয়ে সাড়ে আট হাজারেরও বেশি বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেঙ্গিতে। তাঁদের মধ্যে ন’জনের মৃত্যু হয়েছিল।
সেই কথা মাথায় রেখেই চলতি বছরের গোড়া থেকে মশা নিয়ন্ত্রণ শুরু করা হয়েছে। পুরকর্তাদের দাবি, মশার উৎসস্থলগুলি চিহ্নিত করে মশা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাসিন্দাদেরও সচেতন করার কাজ চলছে লাগাতার, যাতে তাঁরা বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন এবং কোথাও জল জমিয়ে না রাখেন। এ ব্যাপারে সমীক্ষার কাজও করা হচ্ছে।
এত সব পরিকল্পনা সত্ত্বেও দক্ষিণ দমদমে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ১২ জনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এপ্রিল-মে মাসে কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর ছিল না। তীব্র গরমের পরে কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে। তাতেই মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছিলেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। সেই আশঙ্কার মধ্যেই দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান পুর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফি-বছরই এই সমস্যায় জেরবার হন তাঁরা।
ভোটের আগে এ নিয়ে ফের সরব বিরোধীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, আগেও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি পুর প্রশাসন। তারা মুখে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার ও জমা জল দূর করার দাবি করলেও বাস্তব পরিস্থিতি তার সঙ্গে মিলছে না। সেই কারণে অসময়ে ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর আসছে। কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদারের দাবি, দক্ষিণ দমদম পুরসভা শুধু মুখেই নানা রকম দাবি করে যাচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এর আগেও বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপি দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ডেঙ্গি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত দক্ষিণ দমদম পুরসভার কর্তাদের দাবি, প্রতিদিনই মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হচ্ছে। এই সমস্যা অন্যত্রও রয়েছে। তাই এ নিয়ে রাজনীতি করা অর্থহীন। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন অপপ্রচার করছেন বিরোধীরা। বাসিন্দারা জানেন, বছরভর কতটা মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ হয়।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘এক ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর বাড়িকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হচ্ছে। বছরের শুরু থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। তা সত্ত্বেও কী ভাবে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, তার কারণ বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy