হয়তো নিছক কাকতালীয়। কিন্তু ঘটনা হল, মেটিয়াবুরুজের প্রতিবাদী নজরুল ইসলামের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল হয়েছিল বুধবার। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্তের হদিস জানতে পেরে কলকাতা পুলিশের দল রওনা হল বিহারের দ্বারভাঙায়! আর তাকে পেয়েও গেল বৃহস্পতিবার রাতে।
পুলিশ জানায়, দ্বারভাঙার কেওটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে নজরুল খুনের প্রধান অভিযুক্ত শেখ আহমেদকে। তদন্তে জানা যায়, বিদ্যুৎ চুরির প্রতিবাদ করায় গত ২৯ জুলাই রাতে মেটিয়াবুরুজের লিচুবাগান বস্তির নজরুলকে লোহার রড ও বাঁশ দিয়ে পেটানোর পর তিনি যখন লুটিয়ে পড়েছেন, তখন তাঁর মাথায় বড় পাথর দিয়ে মারে আহমেদই।
তবে ঘটনার সাত দিন পর আহমেদকে গ্রেফতার করা নিয়ে তদন্তকারীদের বক্তব্য, এই সময়ের মধ্যে সে ১২ বার মোবাইল ফোনের সিম পাল্টেছে, ব্যবহার করেছিল দু’টি মোবাইল সেট। সেই জন্য তার হদিস পাওয়া মুশকিল হচ্ছিল। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, শেষমেশ মোবাইল সেটের আইএমইআই নম্বর ধরে আহমেদের হদিস পাওয়া যায়।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার পর প্রথম তিন দিন আহমেদ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এক পরিচিতের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল। সোমবার সে দ্বারভাঙার উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দেয়। আহমেদের বন্ধুর বাড়ি কেওটিতে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন শুক্রবার সকালে আহমেদকে দ্বারভাঙা আদালতে হাজির করিয়ে কলকাতা পুলিশ তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে শহরে নিয়ে আসছে।
নজরুল ইসলাম খুনে আহমেদকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনার পর দিনই শেখ আলম নামে এক জন ধরা পড়ে। কিন্তু নজরুলের বাড়ির লোকজন অভিযুক্ত হিসেবে মোট পাঁচ জনের নাম থানায় জানিয়েছিলেন। বাকিদের ধরার ক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে, এমন অভিযোগও উঠেছিল।
এরই মধ্যে দোষীদের সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার বিকেলে ওই তল্লাটে মিছিল বেরোয়। চারশো মহিলা-সহ পাঁচশো মানুষ ওই মিছিলে পা মেলান। থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। তার পর চাপে পড়ে যায় পুলিশ।
এখন আরও তিন ফেরার অভিযুক্ত, নাসিম, ইকবাল ও দইয়ান পলাতক। পুলিশ জানায়, তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আহমেদের মতো বাকি তিন জনও এলাকায় নেই বলে পুলিশের দাবি।