Advertisement
০৫ মে ২০২৪

‘বর্জ্য-সচেতনতা নেই শহরে’

কলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। দেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আবর্জনা জড়ো করে পোড়ানো হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৮
Share: Save:

কলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। দেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আবর্জনা জড়ো করে পোড়ানো হচ্ছে। ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। দূষণ বিধি অনুযায়ী প্রকাশ্যে আবর্জনা পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও প্রথম সারির ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কাণ্ড দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

কল্যাণবাবুর অভিজ্ঞতাই বলছে, রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা তো কোন ছার, খাস কলকাতাতেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সচেতনতা পড়ে রয়েছে তিমিরেই। সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সেরা স্বীকৃতি পেয়েছে মহানগরী। কিন্তু পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মহানগরী এবং এ রাজ্য যে এখনও অনেক পিছিয়ে, মেনে নিচ্ছেন রাজ্যের কর্তারাই। শুক্রবার বণিকসভা ‘ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স’ আয়োজিত পরিবেশ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে সে কথাই শোনা গেল তাঁদের মুখে।

রাজ্যের পরিবেশ সচিব অর্ণব রায়ের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখনও একটি চ্যালে়ঞ্জ।’’ তিনি জানান, সম্প্রতি কেন্দ্র যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়মাবলী লাগু করেছে, তাতে পরিবেশবিধি অনেক কঠোর হয়েছে। তাঁর মতে, পরিবেশ নীতি ঠিকঠাক লাগু হলে এক দিকে যেমন ব্যবসায় লাভ হবে, রক্ষা পাবে পরিবেশও।

পরিবেশবিদেরা জানান, খোলা ভ্যাটে বর্জ্য ফেলে রাখলে তা থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস বেরিয়ে পরিবেশ দূষিত হয়। তা বন্ধ করা উচিত। কলকাতা পুরসভা সে কাজ করেছে। কম্প্যাক্টর আনার পরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছুটা হলেও সফলতা গিয়েছে। কিন্তু পরিবেশবিদদের অনেকের মতে, কম্প্যাক্টরে বর্জ্য দেওয়ার আগে তা বাছাই করা উচিত। যে সব বর্জ্য থেকে সার বা বিদ্যুৎ তৈরি সম্ভব, সেগুলি পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করা উচিত। কল্যাণবাবুর বক্তব্য, ‘‘বর্জ্যকে সম্পদ হিসেবে ভাবা জরুরি।’’ এ দিকে, দূষণ রুখতে প্রকাশ্যে বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের নির্দেশিকা সম্প্রতি ফের নতুন ভাবে জারি করেছেন পরিবেশ সচিব।

শিল্পক্ষেত্র থেকেও যে বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে, তা-ও এ দিন কমানোর নিদান দিয়েছেন পরিবেশ কর্তারা। কল্যাণবাবু জানান, গঙ্গার দু’পা়ড়ের বহু কারখানা থেকেই অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে পড়ত। গঙ্গা দূষণের সেটি অন্যতম কারণ। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন ৯৬টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ফলে ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়। কল্যাণবাবুর মতে, কারখানাগুলিকেও এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে। পরিবেশ বাঁচাতে বর্জ্য তরলের পুরোটাই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতার ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার অ্যামো কালার। তিনি জানান, পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু বদলের মোকাবিলা করতে পশ্চিমবঙ্গে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিবেশ দফতরকে তাঁরা আর্থিক ভাবে সাহায্য করছেন। এ রাজ্যে ৫০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পেও ব্রিটিশ সংস্থা জড়িত রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Awareness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE