Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Kalighat Temple

Kalighat Temple: বিপত্তারিণীর ভিড়ে কালীঘাটে উধাও কোভিড-বিধি

সরকারি কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হতেই কালীঘাট মন্দিরে আসা দর্শনার্থীদের অধিকাংশই করোনা-বিধি শিকেয় তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনিয়ম: বিপত্তারিণী পুজো দেওয়ার ভিড় কালীঘাটে। মঙ্গলবার।

অনিয়ম: বিপত্তারিণী পুজো দেওয়ার ভিড় কালীঘাটে। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৩
Share: Save:

মন্দিরের দু’নম্বর গেটের সামনে দর্শনার্থীদের থিকথিকে ভিড় ভোর থেকেই। দূরত্ব-বিধির বালাই নেই। অধিকাংশ দর্শনার্থীর মাস্ক নেমেছে থুতনিতে। গেটের পাশে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা মাইক হাতে শারীরিক দূরত্ব মানা ও মাস্ক পরার কথা বললেও হুঁশ নেই অধিকাংশ দর্শনার্থীরই। মঙ্গলবার, বিপত্তারিণী পুজোর ধাক্কায় এ ভাবেই কালীঘাট মন্দিরে ফের ধুয়েমুছে সাফ করোনা-বিধি।

সংক্রমণের হার কমাতে সরকারি কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হতেই কালীঘাট মন্দিরে আসা দর্শনার্থীদের অধিকাংশই করোনা-বিধি শিকেয় তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ দিন বিপত্তারিণীর পুজো উপলক্ষে সেই পরিস্থিতিই লাগামছাড়া হয়ে যায়। সকাল থেকে মন্দিরের আশপাশে অনেককেই প্রায় ধমক দিয়ে মাস্ক পরতে বাধ্য করেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু পুলিশ সরে যেতেই আবার যে কে সেই। এক দর্শনার্থী বললেন, ‘‘ভিড়ে সংক্রমণ হবে না। করোনা থেকে মুক্তির জন্যই তো বিপত্তারিণীর পুজো করা হচ্ছে। তিনিই সব বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।’’

শুধু মন্দিরের বাইরে নয়, গর্ভগৃহের সামনের বারান্দায় লোকসমাগম এ দিন হার মানিয়েছে বনগাঁ লোকালের ভিড়কেও। অথচ মন্দিরের মূল গেটে দর্শনার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার বন্দোবস্ত ছিল না। ছিলেন না মন্দিরের কোনও রক্ষীও। গর্ভগৃহ থেকে বেরোনোর পথে হাতে গোনা পুলিশকর্মী থাকলেও ভিড় সামলাতে কার্যত হিমশিম খেয়েছেন তাঁরা।

এ দিন সকালেও গেটের বাইরে পাণ্ডারা ‘বিশেষ’ দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা লাইন তৈরি করেন। মোটা টাকা প্রণামীর বিনিময়ে চার নম্বর গেট দিয়ে (যে গেট দিয়ে শুধু বেরোনোর কথা) ‘বিশেষ’ দর্শনার্থীদের মন্দিরের ভিতরে ঢোকাচ্ছিলেন তাঁরা। তবে বেলা বাড়লে সেই লাইন বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

কেন এই অবস্থা? মন্দির চত্বরে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘মানুষ সচেতন না হলে সব জায়গাই সংক্রমণের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠতে পারে। সরকারি প্রচার সত্ত্বেও মানুষ যে এখনও সচেতন নন, তা আজ স্পষ্ট।’’ আলিপুর আদালতের আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘এই পরিস্থিতি কলকাতা হাইকোর্ট ও রাজ্য সরকারের নজরে আনার প্রয়োজন রয়েছে। কালীঘাট মন্দিরের এই পরিস্থিতি থেকে সারা কলকাতায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। মন্দির কমিটির ভূমিকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের নজরদারির প্রয়োজন।’’

পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, তা মানছেন মন্দির কর্তৃপক্ষও। মন্দিরের সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। আলিপুরের জেলা বিচারক ও কলকাতা পুলিশের কমিশনারের কাছে বিশদে এই তথ্য তুলে ধরা হবে। অবিলম্বে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হবে।’’ কালী টেম্পল কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ হালদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কয়েক দিন ধরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। বৈঠকে বিশদে আলোচনা করে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE