অনেকটা ঘুরপথে হেঁটে অফিসে কিংবা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছতে হচ্ছে। সকালে ও সন্ধ্যায় রাস্তায় থাকছে তীব্র যানজট। অ্যাপ-ক্যাব বুক করার পরে কখন সেটি আসবে, তার জন্য প্রায় অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু এত অসুবিধা সত্ত্বেও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল-কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে চলা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসছেন আন্দোলন মঞ্চে। কারও হাতে কেক, কেউ আনছেন জলের বোতল, কারও হাতে রয়েছে ওডোমস।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজকে। গত তিন দিন ধরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চলছে অবস্থান। টানা রাস্তায় বসে থেকে এ দিন অসুস্থও হয়ে পড়েন আন্দোলনকারী দুই পড়ুয়া।
জুনিয়র ডাক্তারদের এই অবস্থান চলার জেরে পাঁচ নম্বর সেক্টরে জিএসআইয়ের সামনে থেকে রাস্তা বন্ধ। অন্য দিকে, বেনফিশের মোড় থেকে হেঁটে ঢুকতে হচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের দিকের রাস্তায়। সরকারি-বেসরকারি একাধিক অফিস রয়েছে ওই তল্লাটে। জরুরি প্রয়োজনেও সেই সব অফিসে গাড়ি নিয়ে ঢোকা যাচ্ছে না এখন। নগরোন্নয়ন বিষয়ক একটি দফতরের আধিকারিকেরা সল্টলেকের দফতর থেকে কাজ চালাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রতিদিন নতুন নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে, যাঁরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিচ্ছেন। এ দিন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এক চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াকে দেখা যায়, পুজোর খরচ বাঁচিয়ে ১০০ টাকা এক আন্দোলনকারীর হাতে তুলে দিতে।
বেহালার সরশুনার বাসিন্দা, প্রৌঢ়া কান্তা চক্রবর্তী এসেছিলেন ওডোমস নিয়ে। তিনি বললেন, ‘‘রাতে রাস্তায় বসে ছেলেমেয়েগুলো আমাদের জন্য আন্দোলন করছে। মশা কামড়ালে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।’’ এ দিন দেখা গেল, ওই রাস্তার এক প্রান্তের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা জমায়েতে এসে স্লোগানে গলা মেলালেন।
যদিও কিছু মানুষ অসুবিধার মধ্যেও পড়ছেন বলে জানা গিয়েছে। পাঁচ নম্বর সেক্টরে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা জানান, দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি তালুকের এক কর্মীর কথায়, ‘‘একটি অ্যাপ-বাইক বুক করেছিলাম। কয়েক মিনিট দূরত্বে থাকা সেই বাইক আসতে সময় লেগেছে আধ ঘণ্টারও বেশি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)