Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Durga Puja

পুজোমণ্ডপের কাছে স্টলে ‘না’ পুলিশের

প্রতি বছরই শহরের প্রায় সব পুজো কমিটি মণ্ডপের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের স্টল বসিয়ে অর্থ উপার্জন করে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০১
Share: Save:

করোনা আবহে এ বার পুজোমণ্ডপের কাছে কোনও দোকান বসানো যাবে না। মেলার আয়োজনও করা যাবে না। তবে মণ্ডপ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বসানো যাবে খাবারের স্টল। সেখানেও সংক্রমণ ঠেকাতে দু’টি খাবারের স্টলের মধ্যে পর্যাপ্ত ব্যবধান রাখতে হবে। পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে মণ্ডপের আশপাশে দোকান বসানো নিয়ে এমনই বিধিনিষেধ জারি করেছে পুলিশ।

প্রতি বছরই শহরের প্রায় সব পুজো কমিটি মণ্ডপের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের স্টল বসিয়ে অর্থ উপার্জন করে। পুজোর দিনগুলিতে মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে সেই সব স্টলেও। পুলিশের দাবি, সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সেই ভিড় আটকাতেই এ বার পুজো কমিটিগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মণ্ডপের আশপাশে শুধুমাত্র খাবারের স্টল ছাড়া আর কোনও রকমের দোকান বসানো যাবে না। সেই সঙ্গে পুজো উপলক্ষে কোনও ধরনের মেলা করার অনুমতিও দিচ্ছে না লালবাজার। এতে বিভিন্ন পুজো কমিটি আর্থিক দিক থেকে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হলেও তাতে পুলিশের কিছু করার নেই বলেই জানিয়েছে লালবাজার।

রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ ছুঁইছুঁই। এমন পরিস্থিতিতে পুজোর ভিড় থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পুজো কমিটিগুলিকে ১৩ দফা কোভিড-বিধি বা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এলাকার প্রতিটি থানা নিজের নিজের এলাকার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে সেই নির্দেশিকা সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে যাতে দর্শনার্থীরা প্রতিমা দর্শন করতে পারেন, সে জন্য প্রতিটি থানাকে মণ্ডপে গোল দাগ কেটে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে লালবাজার। তবে সেই গণ্ডি কেটেও পুজোর ভিড় সামলানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পুলিশের একাংশের মধ্যেই। তাঁদের যুক্তি, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম শহরতলি এবং পূর্ব ডিভিশনের প্রতিটি থানা এলাকার সীমানা বিশাল। প্রতিটি থানা এলাকায় গড়ে সেখানে ৫০টিরও বেশি পুজো হয়। সেখানে সব পুজো মণ্ডপে পুজোর ক’দিন পুলিশের পক্ষে ওই ভাবে গোল দাগ কেটে দেওয়া

সম্ভব নয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ভিড় এড়াতে এ বারে পুজোমণ্ডপের সামনে কোনও অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না। পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও অনলাইনে করার পক্ষে পুলিশের তরফে সওয়াল করা হয়েছে। তবে পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হলে সে ক্ষেত্রে অল্প সংখ্যক লোককেই একত্রিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে পুলিশের দাবি। এ ছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের সময়েও যাতে শোভাযাত্রায় বেশি ভিড় না হয়, সে জন্য এখন থেকেই পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক করে দিচ্ছে পুলিশ। লালবাজার আরও জানিয়েছে, ভিড় এড়াতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে দু’টি গাড়ির কনভয় নিয়ে মণ্ডপে যেতে পারবে পুরস্কার কমিটিগুলি।

শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলি এই সব সরকারি নির্দেশ মেনে চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আগামী কাল, মঙ্গলবার যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের নিয়ে শহরের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপ ঘুরে দেখবেন। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘করোনাকে ঠেকাতে পুলিশ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ এবং পুজো কমিটিগুলি যদি সচেতন না হন, তা হলে কোভিড-যোদ্ধাদের ওই সব বিধিনিষেধের পরিকল্পনা জলে যাবে। লকডাউন চলাকালীনও পুলিশের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলে সাধারণ মানুষ সংক্রমণ বাড়াতে সাহায্য করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Stalls Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE