Advertisement
E-Paper

নীতি মানতে গিয়েই কি কোপে কর্তা

সবেতন ছুটি-সহ ডাক্তারিতে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ পেতে হলে সরকারি চিকিৎসকদের বাধ্যতামূলক ভাবে আগে তিন বছর গ্রামে পরিষেবা দিতে হবে— সরকারের এই নীতি কার্যকর করতে চাওয়ায় তাঁকে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের এক অতিরিক্ত অধিকর্তা (এডিএইচএস)।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০১:৫০

সবেতন ছুটি-সহ ডাক্তারিতে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ পেতে হলে সরকারি চিকিৎসকদের বাধ্যতামূলক ভাবে আগে তিন বছর গ্রামে পরিষেবা দিতে হবে— সরকারের এই নীতি কার্যকর করতে চাওয়ায় তাঁকে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের এক অতিরিক্ত অধিকর্তা (এডিএইচএস)। এর প্রতিবাদে ১৮ মে তিনি ইস্তফা দিয়ে জানিয়েছেন, রাজনীতির চাপে সরকারি নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে বারবার বাধা পাচ্ছেন তিনি।

তিন বছর গ্রামে পরিষেবা না দিয়েও অতি সম্প্রতি ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল’ (স্যাট)-এর দ্বারস্থ হয়ে তার অন্তর্বর্তী নির্দেশে স্নাতকোত্তরে ভর্তির ছাড়পত্র আদায় করে এনেছেন আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের দুই চিকিৎসক। তাঁদের অভিযোগ ছিল, স্বাস্থ্য ভবনে দাঁতের বিভাগের কয়েক জন কর্তা স্নাতকোত্তর পড়তে বাধা দেওয়াতেই তাঁরা স্যাট-এ গিয়েছিলেন।

ঘটনাচক্রে ওই দুই চিকিৎসক যে কর্তাদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন, তাঁদের অন্যতম অতিরিক্ত স্বাস্থ্য-অধিকর্তা (দাঁত) প্রদ্যোত বিশ্বাসকে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপুকুরের প্রত্যন্ত ব্লক প্রাইমারি হাসপাতালে বদলির নির্দেশ জারি হয়েছে। ওই দিনই ইস্তফা দিয়ে প্রদ্যোতবাবু পাল্টা অভিযোগে জানান, সরকারের নীতি কার্যকর করতে গিয়েই তিনি বলির পাঁঠা হলেন। তাঁর কথায়, ‘‘দাঁতের বিভাগে দুর্নীতি দূর করার চেষ্টা করে তার ফল ভুগছি। আত্মসম্মান নিয়ে আর কাজ করা গেল না। তাই আমি ইস্তফা দিয়েছি।’’

স্বাস্থ্য ভবনের একাংশের মতে, প্রদ্যোতবাবুর ‘লড়াই’ যে দুই ডাক্তারের সঙ্গে, তাঁরা তৃণমূলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ (পিডিএ)-এর সক্রিয় সদস্য এবং যথেষ্ট প্রভাবশালী। ওই সংগঠনের চাপেই প্রদ্যোতবাবুকে সরতে হয়। অথচ সরকারি নীতির বিরুদ্ধে স্যাট-এর দ্বারস্থ হয়েও ‘শাস্তি’ পাননি ওই দুই চিকিৎসক। যদিও পিডিএ-র তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে এবং দাঁতের চিকিৎসকদের তৃণমূলপন্থী সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর সচিব রাজু বিশ্বাসও দাবি করেছেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। প্রতিহিংসাবশত দুই চিকিৎসকের স্নাতকোত্তরে ভর্তির বিষয়টিকে প্রদ্যোতবাবুর বদলির সঙ্গে জোড়া হচ্ছে।’’

মৌসম মণ্ডল ও জ্যোতিপ্রকাশ হালদার নামে ওই দুই চিকিৎসকের অবশ্য প্রতিহিংসাবশত কোনও বদলি করা হয়নি বলে দাবি করেছেন। সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসকের অভিযোগ, সরকারি নীতিকে অযৌক্তিক ভাবে কার্যকর করতে চাইছেন কিছু স্বাস্থ্য-কর্তা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ২০১৪ সালে তাঁদের গ্রামে পোস্টিং হয়েছিল। কিন্তু তখন আর আহমেদ হাসপাতাল থেকেই চিকিৎসকের অভাব দেখিয়ে তাঁদের ছাড়া হয়নি। এ কথা প্রদ্যোতবাবুকে জানালেও তিনি শোনেননি। উল্টো দিকে, প্রদ্যোতবাবুর দাবি, ‘‘গ্রামে পোস্টিং দেওয়ার পরেও আর আহমেদ তাঁদের ছাড়তে চায়নি, এমন কোনও প্রমাণ ওই দুই চিকিৎসক দেখাতে পারেননি।’’

Political Party Health Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy