বাগুইআটিতে খালে গাড়ি উল্টে মৃত ১। বুধবার শৌভিক দে-র তোলা ছবি।
মাস দুই আগে কেনা নতুন গাড়িতে করে বাবাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন ছেলে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন ছেলেই। ঘোরাঘুরির শেষে বাড়ির কাছে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তার আগেই খালে গাড়ি উল্টে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। খালের জলে ডুবে দম আটকে মৃত্যু হল বাবার। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ছেলের অসতর্ক গাড়ি চালানোকেই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন স্থানীয় মানুষ।
বুধবার দুর্ঘটনাটি ঘটে দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ। পুলিশ জানায়, বাগুইআটির অশ্বিনীনগর কাঠপোলের থেকে একটি মারুতি জেন গাড়ি বিবি-১ খালের উপরে পড়ে যায়। গাড়ির ভিতরে সওয়ার ছিলেন অভিষেক ঝা ও তাঁর বাবা নিশিকান্ত ঝা (৬০)। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে কাঠপোলটি পেরোতে গিয়ে কোনও ভাবে গাড়িটি একেবারে সেতুর ধারে চলে যায়। বাঁ দিকের চাকা পিছলে খালে উল্টে পড়ে গাড়িটি। গাড়ির মধ্যে বসেই খালের জলে ডুবে যান বাবা ও ছেলে। স্থানীয় মানুষ খালে নেমে দু’জনকেই মিনিট পনেরোর মধ্যে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে নিশিকান্তবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অভিষেককে।
অতীতে মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাতে গিয়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কানে মোবাইল দিয়ে গাড়ি চালানো এবং রাস্তা পেরোনো— দু’টিই ট্রাফিক আইন বিরোধী। শহরবাসীর চলাফেরা সুরক্ষিত করতেই এই আইন। কিন্তু বুধবারের ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল, পুলিশ প্রচার অভিযান যতই চালাক না কেন, সচেতন হননি অধিকাংশ শহরবাসীই।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানিয়েছেন, অভিষেক মোবাইল ফোন নিয়ে কথা বলছিলেন। যে কারণে গাড়ির স্টিয়ারিং কাটাতে গিয়ে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মৃত নিশিকান্তবাবু বাগুইআটির জোড়ামন্দির এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই শিবশঙ্কর পল্লিতে তাঁদের বাড়ি। দুর্ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি অভিষেক। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলতে পারেননি।
এমন ঘটনায় স্তম্ভিত নিশিকান্তবাবুদের প্রতিবেশীরাও। বাড়ির কাছেই এমন একটি প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কথা তাঁরা কেউই মানতে পারছেন না। স্থানীয়েরাই জানান, গত সেপ্টেম্বরেই গাড়িটি কিনেছিলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত বাগুইআটি, জোড়া মন্দির, অশ্বিনীনগরের মতো জায়গাগুলিতে এই ধরনের কয়েকটি ছোট ছোট সেতু রয়েছে। যেগুলির ধারে কোনও পাঁচিল করা নেই। অশ্বিনীনগর কাঠপোলটিও তেমন। সেতুটি পাঁচিল থাকলে গাড়িটি পড়ত না বলেই মনে করছেন স্থানীয় মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy