পোস্টার লিখতে ব্যস্ত মেডিক্যালের পড়ুয়ারা। বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে প্রথমে ঘেরাও। তাতেও কাজ না হওয়ায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অনশন শুরু করেছেন ছয় পড়ুয়া। আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন অন্যেরাও। প্রতিবাদ বৃহত্তর করতে রাজপথে মিছিলও করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ বার তাঁদের অভিভাবকেরা বসবেন প্রতীকী অনশনে। আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলবে ১২ ঘণ্টার সেই অনশন কর্মসূচি।
বুধবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের তরফে এমবিবিএসের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অনিকেত কর জানান, অনশনকারীদের পাশাপাশি অন্য পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও যোগ দেবেন প্রতীকী অনশনে। সকাল ৯টা থেকে তা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। ১৭ ডিসেম্বর ওই প্রশাসনিক ভবনের সামনেই নাগরিক কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। অনিকেত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিব আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলেছেন। কিন্তু এখনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। ২২ ডিসেম্বর ভোট না হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ কেউই বলতে পারছেন না। এমনকি ভোটের অন্য তারিখও নির্দিষ্ট করে জানাতে পারছেন না।’’ অনিকেত-সহ অন্যদের বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে আসতে হচ্ছে, কলকাতা মেডিক্যালের ইতিহাসে এমনটা হয়নি। কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে তৃণমূল নেতৃত্বকে কেন আসতে হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’’
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি ছিল, বহিরাগতদের ইন্ধনেই এত বড় আন্দোলন সংগঠিত করেছেন কলকাতা মেডিক্যালের পড়ুয়ারা। যদিও এ দিন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আন্দোলনকারী পড়ুয়া সিদ্ধার্থশঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই চলছে। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যে কেউ অংশ নিতে পারেন। সমাজের সব স্তরের মানুষ আমাদের পাশে এসেছেন। বহিরাগতদের ইন্ধনের অভিযোগ ঠিক নয়।’’
অনিকেতের অভিযোগ, তাঁদের ১৩ ডিসেম্বরের মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য অন্য এক মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াকে শাসকদল ঘনিষ্ঠ ছাত্রেরা হুমকি দিচ্ছেন। হস্টেলে না থাকতে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অনিকেত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন, তা হলে এত আক্রমণ কেন? আর তৃণমূল সরকার কেন এত দমাতে চাইছে বুঝতে পারছি না।’’
অন্য দিকে, ঘেরাও কর্মসূচি চলার সময়ে কলকাতা মেডিক্যালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার কেন বন্ধ হয়েছিল, সে বিষয়ে জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ দিন সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের কাছে। তাতে জানানো হয়েছে, বাইরে গোলমাল দেখে নিরাপত্তাকর্মীরাই পরীক্ষাগারের গেটে তালা দিয়েছিলেন। এ দিনও ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’-এর প্রতিনিধিরা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। ওই যৌথ মঞ্চের তরফে চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, ‘‘নির্বাচন করতে সমস্যা কোথায়, জানতে চাওয়া হলেও অধ্যক্ষ এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy