শব্দজব্দ: পিজি-র ভিতরে মাইক বাজিয়ে সেই অনুষ্ঠান।
ওয়ার্ডে কেঁপে কেঁপে উঠছেন রোগীরা। ডাক্তারেরা জেরবার। নার্সেরা মুহুর্মূহু ফোন করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের। কিন্তু কারও কোনও হেলদোল নেই। দাপটে সাউন্ড বক্স বাজছে রাজ্যের সেরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়ে মেলা বসেছে। সন্ধ্যার পর থেকে মেন গেট বন্ধ। গাড়ি ঢুকতে পারছে না। আক্ষরিক অর্থেই ‘হট্টমেলার দেশ’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এসএসকেএম।
মঙ্গল ও বুধবার— এই দুই রাতের বিভীষিকা বৃস্পতিবারেও কাটাতে পারছেন না হাসপাতালের রোগীরা। তাঁদের যে পরিজনেরা রাতে হাসপাতাল চত্বরে থাকেন, তাঁরাও স্তম্ভিত। হাসপাতালের ভিতরে এ ভাবে মাইক বাজতে পারে?
অথচ মঙ্গলবারই শব্দদূষণ নিয়ে মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছিল, সাইলেন্স জোন-এ দিনে তিন বার শব্দমাত্রা মাপতে হবে। শব্দের উৎস চিহ্নিত করতে হবে। তার পরেও হাসপাতালের মতো জায়গায় এ ভাবে রাতভর মাইক বাজে কী ভাবে? পর্ষদ সূত্রের খবর, এর আগেও একাধিক বার এসএসকেএম চত্বরে অতিরিক্ত শব্দের অভিযোগ উঠেছে।
কেন মাইক বেজেছিল এসএসকেএমে? হাসপাতাল সূত্রে খবর, একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতি বারই এপ্রিল মাসে হাসপাতালের ভিতরে এই অনুষ্ঠান হয়। দোকানপাট বসে, খাওয়াদাওয়া হয়। প্রচুর মানুষ যোগ দেন ওই অনুষ্ঠানে। মাইক-ও বাজে, তবে তা অল্পস্বল্প। কিন্তু এ বার বিষয়টি মাত্রা ছাড়িয়েছিল বলে অনেকেরই অভিযোগ।
আরও পড়ুন: অ্যাপোলো-কাণ্ডে ‘শেষ’ দেখতে চান গুঞ্জার মা-বাবা
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই তাঁরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ বারও সেটাই করেছিলেন। মাইক বেজেছিল ঠিকই, তবে তা এমন জোরে নয় যাতে রোগীদের অসুবিধা হতে পারে।
যদিও এ দিনই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের একাধিক চিকিৎসক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে তাঁদের ক্ষোভ এবং বিরক্তি উগরে দিয়েছেন। ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘মুমূর্ষুরাও যে ভাবে কষ্ট পেয়েছেন, তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। আমরা অসহায়ের মতো সব দেখেছি।’’
কী বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? অধিকর্তা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছ থেকে কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি।’’ অনুমতি ছাড়া হাসপাতাল চত্বরে এ ভাবে মাইক বাজার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তিনি কোনও ব্যবস্থা নিলেন না কেন? তাঁর জবাব, ‘‘কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।’’ কিন্তু চিকিৎসকেরা তো তাঁকে জানিয়েছেন। মাইকের শব্দও তাঁরা শুনেছেন। স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও তো ব্যবস্থা নিতে পারতেন? ‘‘এখন ব্যস্ত আছি,’’ বলে কথোপকথন শেষ করে দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy