Advertisement
E-Paper

পার্কে ঘুরতে এসেও মশার কামড়

প্রতিদিন সকালে সল্টলেকের বিভিন্ন ব্লকের অসংখ্য বাসিন্দা তাজা হাওয়ায় শ্বাস নিতে বনবিতানের পথকেই বেছে নেন। সেই প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশও লার্ভা-দর্শনে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
অপরিষ্কার সল্টলেকের বনবিতান।

অপরিষ্কার সল্টলেকের বনবিতান।

ছুটির দিনে সল্টলেকের বনবিতানে বন্ধুর সঙ্গে নিরিবিলিতে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন কলেজপড়ুয়া তরুণী। বনবিতানের প্রবেশপথের ডান দিক দিয়ে কিছুটা এগোলে যে পাথরের মূর্তি রয়েছে, সেখানেই পিছনে সবুজ রেখে নিজস্বী তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লক্ষ করেন, সেখানেই সবুজের মাঝে দিব্যি অক্সিজেন পাচ্ছে মশার বংশ। গাছপালার মাঝে মূর্তিটি যেখানে বসানো রয়েছে, তার খাঁজে জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা! যা দেখে রবিবার সকালে আঁতকে উঠলেন উল্টোডাঙার বাসিন্দা ওই তরুণী। আর তাঁর বন্ধুর মন্তব্য, ‘‘নিরিবিলিতে সময় কাটাতে গিয়ে যে মশার খপ্পরে পড়তে হবে, ভাবিনি।’’

এ তো গেল একদিকের ছবি। বনবিতানের অন্য দিকে একাধিক জায়গায় নিচু জমিতে জল জমে যাওয়ায় রয়েছে একই ধরনের বিপদের হাতছানি। চিপ্‌স-বিস্কুট-কেকের প্যাকেট এক জায়গায় জড়ো করে রাখা। আর সেখানেই জল জমে তৈরি হয়েছে মশার বংশবিস্তারের আদর্শ পরিবেশ। গাছের গোড়া তো বটেই, নিকাশি নালাতেও জমে রয়েছে পরিষ্কার জল।

ওই উদ্যানে এ দিন যুগলে ঘুরতে আসা এক যুবকের খেদোক্তি, ‘‘বনবিতানে ঢোকার জন্য মাথাপিছু টাকা নেওয়া হয়। এর পরেও এই অবস্থা হবে কেন? এখানে তো আর মশার কামড় খেতে আসিনি!’’

প্রতিদিন সকালে সল্টলেকের বিভিন্ন ব্লকের অসংখ্য বাসিন্দা তাজা হাওয়ায় শ্বাস নিতে বনবিতানের পথকেই বেছে নেন। সেই প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশও লার্ভা-দর্শনে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাঁদেরই এক জন সুহাসিনী হালদার বলেন, ‘‘এখানে যিনি মশার কামড় খাচ্ছেন, শুধু তার মধ্যেই তো আর বিষয়টি থেমে থাকছে না। তিনি যেখানে থাকেন, সেই এলাকাতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেটা আরও বেশি আতঙ্কের।’’ আর এক বাসিন্দা রত্নাঙ্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বনবিতানে এ বছর যে প্রথম জল জমে লার্ভার জন্ম হয়েছে, তা কিন্তু নয়। আগে যা হয়েছে, এ বারও তা বজায় রয়েছে। তাহলে বন দফতর কি বছরভর নজরদারির আওতার বাইরে?’’

পড়ে থাকা আবর্জনায় জল জমে জন্মাচ্ছে লার্ভা। —নিজস্ব চিত্র।

বনবিতান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই রয়েছে বিধাননগর পুরভবন। ঘরে ঘরে জল জমা নিয়ে যেখানে নাগরিকদের নরমে-গরমে সতর্ক করা হচ্ছে, সেখানে উদ্যানের এ হেন পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার কী প্রতিক্রিয়া? প্রশ্নের প্রেক্ষিতে পুরসভার এক কর্তা জানাচ্ছেন, মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত পুরসভার যে দল রয়েছে, তাদের অভিযানেও বনবিতান থেকে ভাল সংখ্যায় লার্ভা মিলেছে। ওই পুরকর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন সরকারি দফতর, জমি, কার্যালয়ের পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা জেলা স্তরের বৈঠকে জানানো হচ্ছে। এর পরেও অবস্থার খুব একটা বদল চোখে পড়ছে না।’’

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলছেন, ‘‘বন দফতরের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব। পুরসভা তার কাজ করবে। কিন্তু উদ্যান কর্তৃপক্ষ সচেতন না হলে মশার সঙ্গে যুদ্ধ করা খুব কঠিন!’’ আর বনবিতান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বন দফতরের এক কর্তা এ প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করার জন্য পুরসভাকে অনুরোধ করব। নীতিগত ভাবে সব ধরনের উদ্যানে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা হবে।’’

Garbage Plastic Water Larvae Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy