প্রযুক্তি উন্নত হলে সুষ্ঠু এবং নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা মিলবে, স্বাভাবিক নিয়ম তা-ই বলে। কিন্তু মোবাইল পরিষেবা চলছে এই নিয়মের উল্টো পথে। যতই প্রযুক্তি বাড়ুক, ফোনে কথা বলতে বলতে লাইন কেটে যাওয়া, বারবার ডায়াল করেও ফোনের লাইন না পাওয়া, মাঝেমধ্যেই লাইন একমুখী হয়ে যাওয়ার মতো পরিচিত রোগগুলি সারানোর কোনও দাওয়াই এখনও দিতে পারছে না পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি।
কলকাতা শহরের অবস্থা তুলনায় কিছুটা ভাল হলেও করুণ অবস্থা শহরতলির। পরিষেবা উন্নত করতে মোবাইল সংস্থাগুলি বিভিন্ন প্রযুক্তি আনার কথা বললেও গ্রাহকদের প্রশ্ন, সুষ্ঠু পরিষেবা কোথায়? সরকারি বিএসএনএল হোক বা বেসরকারি মোবাইল সংস্থা— সকলেরই হাল প্রায় এক। শহরতলির বহু জায়গায় মোবাইল পরিষেবা চলছে অনেকটাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
গ্রাহকদের একটি বড় অংশের অভিযোগ, ফোন করা থেকে শুরু করে ডেটা সার্ভিস (মোবাইলে ইন্টারনেট) মাঝেমধ্যেই ঠিক মতো কাজ করছে না। এক সংস্থার নম্বর থেকে অন্য পরিষেবা সংস্থার কোনও নম্বরে ফোন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কথা বলতে বলতে মাঝপথে কেটে যাচ্ছে ফোন। একই অবস্থা ডেটা সার্ভিসেরও। ইন্টারনেট অন করলে ডাউনলোডের চাকা ঘুরেই চলে অবিরত। কোনও ওয়েবপেজ খোলা যায় না।
সরকারি ইঞ্জিনিয়ারেরা বলছেন, নেটওয়ার্ক উন্নত করে প্রযুক্তি আনছে সব সংস্থা। কিন্তু, গ্রাহকদের হাতে থাকা মোবাইলগুলির সঙ্গে ওই সব প্রযুক্তির সামঞ্জস্য তৈরি হচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রে। গোলমালের শুরু সেখানেই। যেমন, কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কোনও একটি মোবাইল টাওয়ার হয়তো ৪জি নেটওয়ার্ক দিচ্ছে। কিন্তু তার পরের টাওয়ারটি দিচ্ছে ২জি নেটওয়ার্ক। কোনও গ্রাহক যখন ওই এলাকা দিয়ে যাবেন, তাঁর ফোন ৪জি হলে প্রথম টাওয়ারের ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না।
কিন্তু মুশকিল হতে পারে পরের টাওয়ারে। আচমকা নেটওয়ার্ক ৪জি থেকে ২জি হয়ে যাওয়ায় ফোন সেই এলাকায় ঠিকমতো কাজ না-ও করতে পারে।
সরকারি এবং বেসরকারি মোবাইল সংস্থার পরিষেবা যারা নিয়ন্ত্রণ করে, সেই টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)-র কর্তারাও জানিয়েছেন, গ্রাহকদের অভিযোগের অনেকটা সত্যতা রয়েছে। তাঁরা জানান, দিন দিন যে ভাবে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, সেই হারে পরিকাঠামোয় কিছুটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। তার ফলেই কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তবে গত কয়েক বছরে প্রতিটি সংস্থাই কিছু কিছু করে পরিকাঠামো বাড়িয়েছে।
বেসরকারি সংস্থাগুলি অবশ্য গ্রাহকদের অভিযোগ সার্বিক ভাবে মানতে চায়নি। তাদের মুখপাত্রদের বক্তব্য, কিছু ক্ষেত্রে সামান্য গোলমাল হতে পারে, সর্বত্র নয়। তাঁরা আরও বলছেন, কলকাতা শহরে বহু দিন ধরেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। শহরতলিতেও যাতে সেই পরিষেবা দেওয়া যায়, তার জন্যে সেখানেও উন্নত পরিকাঠামো বসানো হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষের পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy