রাজা রায়। — নিজস্ব চিত্র
যানশাসন করতে নেমে ট্র্যাফিক পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শহরে নতুন কিছু নয়।
কখনও সিগন্যাল ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া গাড়ির ধাক্কায় আক্রান্ত হন ট্র্যাফিক পুলিশ। কখনও হেলমেটহীন বাইককে আটকাতে গিয়ে মার খেতে হয় চালক বা আরোহীদের হাতে। সোমবার অবশ্য আইন ভাঙার জন্য পুলিশের গাড়ি আটকাতে গিয়ে ‘হেনস্থা’র শিকার হলেন খোদ সার্জেন্ট। পুলিশ জানায়, যে গাড়িটি আইন ভেঙে সার্জেন্টকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে, সেটি হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের।
এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, ধাক্কা মারার পরে ওই গাড়ি থেকে এক আরোহী নেমে ওই সার্জেন্টকে হুমকি দেন। যা দেখে স্থানীয় কয়েক জন সুযোগ বুঝে ওই গাড়ির আরোহীকেই সমর্থন করেন ও সার্জেন্টের উপরে চড়াও হন। পুলিশ জেনেছে, বিভিন্ন সময়ে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর জন্য ওই যুবকদের আটক করেছিলেন ‘প্রহৃত’ সার্জেন্ট।
পুলিশ জানায়, এ দিন যাদবপুরে ডিউটি করছিলেন ট্র্যাফিক সার্জেন্ট রাজা রায়। মোটরবাইকে আনোয়ার শাহ রোড ধরে যাদবপুরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। লেক গার্ডেন্স উড়ালপুল ও আনোয়ার শাহ রোডের মোড় পেরোনোর পরে হঠাৎই একটি গাড়ি উড়ালপুলের মুখে এসে নিয়ম ভেঙে ‘ইউ টার্ন’ নিয়ে সার্জেন্টের বাইকে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে। বাইক-সহ পড়ে যান রাজা। চোট লাগে তাঁর ডান হাতে।
রাজা গাড়িটি আটকানোর পরে দেখেন, সেটি হাওড়া কমিশনারেটের ও তা থেকে সাদা পোশাকের এক ব্যক্তি নেমে আসছেন। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি নেমে হুমকির সুরে জানতে যান গাড়িটি কেন আটকানো হল। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘রোজই এখান দিয়ে গাড়ি ঘোরাই। এটি হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের গাড়ি। আপনি আটকানোর কে?’’
এরই মধ্যে স্থানীয় কিছু লোকজন এসে সার্জেন্টের উপরে চড়াও হন বলে সূত্রের দাবি। স্থানীয়েরা জানায়, ইদানীং আনোয়ার শাহ রো়ডের উপরে কিছু যুবক হেলমেট ছাড়াই বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ান। রাজা প্রায়ই তাঁদের আটকান। তাঁরাই এ দিন রাজার উপরে চড়াও হয় বলেই জানা গিয়েছে। যদিও আহত সার্জেন্ট বা ওই ট্র্যাফিক গার্ড থেকে ঘটনা নিয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
পুলিশের গাড়ি কর্তব্যরত পুলিশকে ধাক্কা মারার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সকলের জন্য আইন একই বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে এ ভাবে পদ দেখিয়ে কিংবা পুলিশের কর্মী-অফিসার বলে চড়াও হলে রাস্তায় কাজ করা অসুবিধার।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (১) বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘এমন কিছু বড় ঘটনা নয়। আর সার্জেন্টের চোটও খুব সামান্য।’’ কিন্তু গাড়িটি তো বেআইনি ভাবে ঘুরেছিল? বিনীত বলেন, ‘‘গাড়িটি আইন ভেঙে থাকলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy