কল্যাণ ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
দমদমের নাগেরবাজারের একটি বাগানবাড়ি থেকে এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধারের পরে দু’দিনের বেশি পেরিয়ে গেলেও রহস্যের উদ্ঘাটন হল না। তবে ওই বৃদ্ধকে যে খুনই করা হয়েছে, সে বিষয়ে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ থেকে এক রকম নিশ্চিত তদন্তকারীরা। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারী কোনও বস্তুর আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের।
বুধবার নয়াপট্টির জলের ট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকায় কয়েক বিঘা জমির উপরে থাকা বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বৃদ্ধ মালিক কল্যাণ ভট্টাচার্যের পচাগলা দেহ। ওই ঘটনায় খুন এবং চুরির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বৃদ্ধের সঙ্গে থাকত যে পোষ্যটি, শুক্রবার পর্যন্ত তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক ভাবে বৃদ্ধের পরিচিত এক গাড়িচালককে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁকে খুঁজে পেলে রহস্য অনেকটাই ছাড়ানো যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে তদন্তে অন্য দিকও খোলা রাখা হচ্ছে। যেমন, কারও সঙ্গে কল্যাণের কোনও শত্রুতা ছিল কি না, কিংবা সম্পত্তিগত বিষয়ের সঙ্গে এই ঘটনার যোগ রয়েছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে গৃহকর্তার গাড়ি শেষ বার বেরিয়েছিল চলতি মাসের ১৫ তারিখ রাতে। সে বার বাড়ি থেকে গাড়িটি বেরিয়ে যশোর রোড ধরেছিল। গাড়ির গন্তব্যস্থল সম্পর্কে বা গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন, সে সবের উত্তর এখনও হাতড়াচ্ছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, কল্যাণের গাড়িটি বিলাসবহুল হলেও জিপিএস প্রযুক্তি ছিল না। ফলে গাড়ির গতিবিধির সন্ধানে বেগ পেতে হচ্ছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে নাগেরবাজার এলাকায় আরও একটি খুনের ঘটনা ঘটেছিল। সে বার এক গৃহকর্ত্রীকে খুন করা হয়েছিল। খুনে অভিযুক্ত হিসাবে গৃহকর্ত্রীর বাগান পরিষ্কার করার কর্মীকে ধরতে সময় লেগেছিল পুলিশের। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্তের ছবি চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। তা বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়েও দিয়েছিল। কিন্তু অকৃতদার কল্যাণের খুনের ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় থাকা গাড়িচালক সম্পর্কে তেমন কোনও তথ্য হাতে আসেনি পুলিশের।
শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক আধিকারিকেরা। একতলার যে ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, সেই ঘর থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই গাড়িচালককে কী ভাবে নিযুক্ত করেছিলেন বৃদ্ধ, সে বিষয়ে কোনও সূত্র পায়নি পুলিশ। বৃদ্ধের মোবাইলের কল লিস্ট যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
সাময়িক কোনও উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে, না কি পরিকল্পনা মাফিক খুন? সেই দু’টি দিকও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। মাঝপথে তদন্তের প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোলসা করতে চাইছেন না গোয়েন্দারা। শুধু এটুকু ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, খুনে জড়িত থাকার সম্ভাবনায় পাল্লা ভারী বৃদ্ধের ভাড়া করা গাড়িচালকেরই। আপাতত তাঁকে ধরাই তদন্তের প্রথম লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy