সালকিয়ায় দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পরে কেটে গিয়েছে গোটা একটা দিন। এক জন দুষ্কৃতীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসক দলের স্থানীয় কয়েক জন নেতার ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই পুলিশ ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে ধরছে না। শুধু তাই নয়, থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে বোমা-গুলি চললেও প্রথমে পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ। তারা এসেছিল ১০০ ডায়ালে ফোন করার পরে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
রবিবার রাতে সালকিয়ার ধর্মতলায় বোমাবাজি হয়, গুলি চলে ১০-১২ রাউন্ড। অভিযোগ, এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী আকাশ সিংহ দলবল নিয়ে তার বিরোধী গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত দীপক সিংহের দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর করে। বাধা দিতে গেলে দীপক ও তার ভাই পাপ্পুকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। দীপকের বুকে ও পাপ্পুর হাতে গুলি লাগে। দু’জনকেই প্রথমে হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় দীপককে আনা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল নেতার মদতে দুষ্কৃতীদের দল তৈরি করে এলাকায় তোলাবাজি শুরু করেছিল আকাশ। তাতে বাধা দেওয়ায় দীপক ও তার পরিবারের সঙ্গে আকাশের শত্রুতা তৈরি হয়। দিন কয়েক আগে দীপকের কাকার ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে আকাশের ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তার পাল্টা হিসেবে দীপকের সঙ্গীরাও মারধর করে আকাশের ভাইকে। এর পর থেকেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। পুলিশের অনুমান, ওই ঘটনারই বদলা নিতে রবিবার রাতে দীপকের পরিবারকে আক্রমণ করে আকাশের বাহিনী।
স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল সোমবার ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে ঘিরে বাসিন্দারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, কয়েক জন তৃণমূল নেতা ও পুলিশের একাংশের মদতে ধমর্তলা লেনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আকাশ সিংহের দল। তোলাবাজি থেকে শুরু করে জোর করে জমি-বাড়ির দালালি— সবই অবাধে চালাচ্ছে।
লক্ষ্মীরতন বলেন, ‘‘দু’টি পরিবারের বিবাদের জন্যই এমন ঘটেছে। পুলিশকে বলেছি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে। এ সব বরদাস্ত করা হবে না।’’ তবে তিনি জানান, এর মধ্যে তৃণমূলের কোনও নেতা জড়িত থাকার অভিযোগ ঠিক নয়।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে দেরি করে যাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে অভিযুক্তেরা ধরা পড়বেই।’’