Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

Coronavirus in Kolkata: থানার জন্য মিলছে না জীবাণুনাশক, চিন্তা পুলিশে

করোনার সংক্রমণের প্রথম থেকেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশকেও সামনে থেকে লড়তে হচ্ছে।

সামনের সারিতে: সম্প্রতি উৎসবের উপচে পড়া ভিড় সামলাতে বিপুল সংখ্যায় পথে নামতে হয়েছিল পুলিশকর্মীদের। নতুন বছরের প্রথম দিনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে।

সামনের সারিতে: সম্প্রতি উৎসবের উপচে পড়া ভিড় সামলাতে বিপুল সংখ্যায় পথে নামতে হয়েছিল পুলিশকর্মীদের। নতুন বছরের প্রথম দিনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:০৩
Share: Save:

কোনও থানায় অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর-সহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন, কোনও থানায় আবার সেই সংখ্যাটা পাঁচ অথবা সাত। কোনও থানায় আক্রান্তের সংখ্যা আপাতত দুই অথবা তিন হলেও বেশ কয়েক জনের মধ্যেই রয়েছে উপসর্গ। একই অবস্থা শহরের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডেও। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে কলকাতা পুলিশে পর পর বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু থানা অথবা ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মীরা আক্রান্ত হলেও থানা জীবাণুমুক্ত করতেই এই মুহূর্তে বেগ পেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। লালবাজার থেকে চেয়েও জীবাণুনাশক মিলছে না বলে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের একাংশের দাবি। কার্যত বাধ্য হয়েই নিজেদের উদ্যোগে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। লালবাজারের কর্তারা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

করোনার সংক্রমণের প্রথম থেকেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশকেও সামনে থেকে লড়তে হচ্ছে। করোনার প্রথম ঢেউয়ে কলকাতা পুলিশের বাহিনীতে আক্রান্ত হয়েছিলেন কয়েক হাজার কর্মী। মৃত্যুও হয়েছিল বেশ কয়েক জনের। দ্বিতীয় ঢেউয়ে কলকাতা পুলিশের কর্মীদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম হলেও তৃতীয় ঢেউয়ে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২০ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন লালবাজারের এক জন অতিরিক্ত কমিশনার, এক জন যুগ্ম কমিশনার, ডিসি ডিডি (স্পেশাল)-সহ একাধিক আইপিএস। সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকেরা।

বর্ষশেষের দিনে চিড়িয়াখানার সামনে। নিজস্ব চিত্র

বর্ষশেষের দিনে চিড়িয়াখানার সামনে। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভবানীপুর থানায় ২৫ জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর, সাব ইনস্পেক্টর, কনস্টেবল রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের মৃদু উপসর্গ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সকলকেই হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছে। আরও
কয়েক জনের উপসর্গ থাকায় তাঁদের করোনা পরীক্ষা করা হলেও এখনও রিপোর্ট আসেনি। এই অবস্থায় থানার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই থানায় আসা প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা মাপার ও হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা হয়েছে। পাশাপাশি, থানার বিভিন্ন অংশেও জীবাণুনাশের কাজ করা হয়েছে।

একই অবস্থা গল্ফ গ্রিন থানাতেও। সেখানেও ইতিমধ্যে দশ জন পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। পাশাপাশি, পার্ক স্ট্রিট, বড়বাজার, মানিকতলা, কসবা, একবালপুর-সহ একাধিক থানায় পুলিশকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।

কিন্তু অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা পর পর আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও থানায় জীবাণুনাশের কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে খোদ পুলিশকেই। বার বার জীবাণুনাশক চেয়ে লালবাজারে আবেদন করেও তা মিলছে না বলেই থানার আধিকারিকদের একাংশের দাবি। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথম অথবা দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতি সপ্তাহে দু’-তিনটে করে স্যানিটাইজ়ারের বোতল পাঠানো হত। প্রতি বোতলে পাঁচ লিটার করে থাকত। থানায় জীবাণুনাশের কাজে সেটা মোটামুটি যথেষ্ট ছিল। কিন্তু এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে তা অমিল। চেয়েও মিলছে না। বাধ্য হয়ে নিজেদেরই ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।’’ কোনও কোনও থানার তরফে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেরেস্তা থেকে মালখানায় জীবাণুনাশ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কখনও এই কাজ হচ্ছে নিজেদের উদ্যোগে। কিন্তু যেখানে প্রায় প্রতিটি থানায় একাধিক পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানে থানাকে জীবাণুমুক্ত করতে পুলিশকেই বা বেগ পেতে হবে কেন?

তবে অভিযোগ মানতে চাননি লালবাজারের পুলিশকর্তারা। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক পুলিশকর্তা বললেন, ‘‘যথেষ্ট পরিমাণ জীবাণুনাশক আছে। থানার তরফে চাহিদা অনুযায়ী যেমন চাওয়া হচ্ছে, সেই অনুযায়ীই পাঠানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Kolkata Police Lalbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE