Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
৪: বাগুইআটি

শব্দ-দানবকে ঠেকাতে গিয়ে প্রহৃত পুলিশ, চলল লাঠি

কালীপুজোর রাতে জুটেছিল বাঁশপেটা। আর দীপাবলির রাতে জুটল কিলঘুষি। শব্দবাজির দাপট ঠেকাতে গিয়ে দীপাবলির রাতে ফের এক বার মার খেল বাগুইআটি থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে লাঠি পর্যন্ত চালাতে হল। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪০
Share: Save:

কালীপুজোর রাতে জুটেছিল বাঁশপেটা। আর দীপাবলির রাতে জুটল কিলঘুষি।

শব্দবাজির দাপট ঠেকাতে গিয়ে দীপাবলির রাতে ফের এক বার মার খেল বাগুইআটি থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে লাঠি পর্যন্ত চালাতে হল। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, কৈখালির কাছে একটি আবাসনে ওই ঘটনা ঘটে। যেখানে অনেক বিত্তশালীর বসবাস। রবিবার রাতে ওই জায়গায় দেদার শব্দবাজি ফাটছে খবর পেয়ে বাগুইআটি থানার পুলিশ হানা দেয়। শব্দবাজি ফাটাতে দেখে হাতেনাতে কয়েক জনকে ধরতেই মহিলা-সহ প্রায় জনা পঞ্চাশ বাসিন্দা পুলিশকে ঘিরে ফেলেন। তিন জুনিয়র অফিসার-সহ বেশ কয়েক জন মহিলা পুলিশের ওই দলটিতে ছিলেন।

অভিযোগ, পুলিশ ওই বাসিন্দাদের শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করতেই তাঁরা পুলিশের বিরোধিতা শুরু করেন। প্রথমে বচসা, তার পরে গালিগালাজ ও শেষে ধাক্কাধাক্কি, মারধর। ওই পুলিশকর্মীদের ঘিরে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারতে থাকেন আবাসিকেরা। ধৃতদের অনেকেই মত্ত ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।

কালীপুজোর রাতে জগৎপুরের কাছে তালবাগান এলাকায় বাগুইআটি থানার পুলিশের এক সাব ইনস্পেক্টর এবং সহকারী সাব ইনস্পেক্টরকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়েছিল এক দল যুবক। পুলিশ তাঁদের শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করেছিল। সেখানেও পুলিশকে চল্লিশ-পঞ্চাশ জন মিলে ঘিরে ফেলে মারধর করা শুরু করে। সেই দলেও অনেকে মত্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। তবে সেটি ছিল একেবারে নিম্নবিত্ত এলাকা। সেখানে শিক্ষিত লোকজনের সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু রবিবার রাতে যেখানে পুলিশ মার খেল, সেখানে শিক্ষিত আর উচ্চবিত্তদেরই বসবাস।

এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘শহরের শিক্ষিত মানুষই যদি এমন করেন, তবে অন্যেরা তো আইন ভাঙার চেষ্টা করবেই।’’

পুলিশ জানায়, রবিবার ওই আবাসনে প্রথমে মার খাওয়ার পরে খানিকটা পিছু হটেন বাগুইআটি থানার ওই অফিসারেরা। ঘটনার খবর থানায় আসতেই পুলিশের বাহিনী ওই আবাসনে যায়। লাঠিচার্জ করে। ঘটনাস্থল থেকেই গণেশ শর্মা, যতীন জৈন, যোগেশ সিংহ, সৌরভ শর্মা ও অন্বেষ শর্মা নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশকর্তারা জানান, কালীপুজোর পরে দীপাবলির রাতও প্রত্যেকবারের মতোই বাগুইআটি থানার পুলিশের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কৈখালি, চিনার পার্ক, হলদিরাম, তেঘরিয়া, বাগুইআটির মতো জায়গায় বিভিন্ন আবাসনের ওপরে দীপাবলির রাতে দেদার শব্দবাজি ফাটে। ফলে গোটা রাতই দৌড়ে বেরিয়েছেন বাগুইআটি থানার পুলিশ। ‘ন্যাচারাল হাইট’-এর ওই ঘটনার পরেও ফের কৈখালির অনুপমা হাউসিং এ হানা দেয় বাগুইআটি থানা। সেখানে শব্দবাজি ফাটার খবর পেয়ে হানা দিলেও দেখা যায় ওই আবাসন চত্বরে বড় বড় শেল-সহ বিভিন্ন শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে। প্রায় পৌনে দু’শো কিলোগ্রাম বাজি সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে জানান বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (ডিডি) সন্তোষ পাণ্ডে। সেখান থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে তিনি জানান। এ ছাড়াও বিভিন্ন আবাসনে হানা দিয়ে দীপাবলির রাতে লোকজনকে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে বাগুইআটি থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেই জানান ডিসিডিডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Policeman Beaten Sound Pollution Baguiati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE