এসটিএফের নাম করে হুমকি। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
সাদা কাগজে সই না করলে লালবাজারে স্প্যেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-র দফতরে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হবে। ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে এসটিএফের মামলায়। এসটিএফের নাম করে এ রকমই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
শুধু হুমকি নয়, এসটিএফের এক ইনস্পেক্টরের নাম দিয়ে তাঁর ফোন নম্বর দিয়ে ডেকে পাঠানো হল কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে। পরে দেখা গেল, ওই নামে কোনও এসটিএফ অফিসারই নেই। কিন্তু তারপরেও প্রায় এক মাস টালবাহানা চলল প্রতারকের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে।
ঘটনাটি ঘটেছে এক মাস আগে, মানিকতলা থানা এলাকার বাসিন্দা এক ৬২ বছর বয়সী ব্যবসায়ীর সঙ্গে। হাডকো এলাকার বিধাননগর রোডের একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা রামকুমার গুপ্ত।তিনি বলেন,“২০১৪ সাল থেকে অন্য এক ব্যবসায়ী সূর্যপ্রকাশ কেজরীওয়ালের সঙ্গে টাকা নিয়ে একটি সমস্যা চলছে। আমার মতো সূর্যপ্রকাশও চিনির ব্যবসায়ী। আমি একটা বড় অঙ্কের টাকা পাই তাঁর কাছে। ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখ হঠাৎই রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ আমার ফ্ল্যাটে এসে হাজির হয় সূর্যপ্রকাশ এবং তাঁর ছেলে। সঙ্গে একজন অপরিচিত যুবক। সে নিজেকে এসটিএফের সাব ইনস্পেক্টর পরিচয় দেয়।”
আরও পড়ুন: আবার ধোনি, টেস্টের পর একদিনের সিরিজও জিতে ইতিহাস ভারতের
রামকুমার গুপ্তর অভিযোগ, ওই ব্যক্তি নিজেকে বিশ্বনাথ মিত্র বলে পরিচয় দিয়ে তাঁকে এসটিএফের মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সঙ্গে এসটিএফ দফতরে নিয়ে গিয়ে জেরা করার হুমকিও দেয়। অভিযোগকারী মানিকতলা থানায় করা অভিযোগে জানিয়েছেন,“এসটিএফ ভয় দেখিয়ে তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়।” তাঁর অভিযোগ, যাওয়ার সময় হুমকি দেওয়া হয় যাতে পরে কোনও দিন পাওনা টাকা না চান ওই ব্যবসায়ী।
ফোনে অভিযোগকারীকে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “ওঁরা যাওয়ার সময় কাগজে দু’টি নম্বর লিখে দিয়ে যান। বলা হয় নম্বরটি এসটিএফের এক ইনস্পেক্টরের। আমাকে বলা হয় পরের দিন লালবাজারে গিয়ে বিশ্বনাথকেফোন করতে।”
পুলিশে করা লিখিত অভিযোগে ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, পরের দিন লালবাজারে গিয়ে ফোন করলে ওই ব্যক্তি ‘লালবাজারের বাইরে আছি’ বলেন। পরের দিন ফের গিয়ে খোঁজ করলে বাকি পুলিশ কর্মীরা এসটিএফে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ওই নামে কোনও অফিসার নেই। এর পরই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানান তিনি। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তার পর প্রায় এক মাস কেটে গেলেও পুলিশ কোনও এফআইআর দায়ের করেনি। ঘটনার এক মাস পরে বৃহস্পতিবার মানিকতলা থানা মামলা রুজু করলেও হদিশ মেলেনি কোনও অভিযুক্তের।
আরও পড়ুন: ৩৭ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ, সোনাক্ষীকে আইনি নোটিস
অন্যদিকে, এসটিএফের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, রামকুমারের বক্তব্য সঠিক নয়। এক এসটিএফ আধিকারিক বলেন,“দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে গন্ডগোল। এঁদের একজনের সঙ্গে বেশ কয়েক জন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারও যোগাযোগ আছে। তবে বিশ্বনাথ মিত্র বলে তাদের কোনও অফিসার নেই।”
আর এখানেই প্রশ্ন, যদি ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্যে কোনও গরমিল থাকে, অসত্য হয়, তাহলে পুলিশ এত দিন ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন! তাহলে এক মাস অপেক্ষা করার পর কেন এফআইআর করল মানিকতলা থানার পুলিশ? তাহলে গোটা বিষয়টি নিছক ভুয়ো এসটিএফ কর্তা সেজে প্রতারণা না অন্য কোনও রহস্য আছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy